এসসিও বৈঠকে ভারতের কড়া পদক্ষেপ: সন্ত্রাসবাদের প্রশ্নে আপোস নয়

এসসিও বৈঠকে ভারতের কড়া পদক্ষেপ: সন্ত্রাসবাদের প্রশ্নে আপোস নয়
সর্বশেষ আপডেট: 12 ঘণ্টা আগে

এসসিও বৈঠকে রাজনাথ সিং সন্ত্রাসবাদের উল্লেখ না থাকার কারণে যৌথ বিবৃতিতে স্বাক্ষর করতে অস্বীকার করেন। এস জয়শংকর এই সিদ্ধান্তের সমর্থন করেন এবং পাকিস্তানের প্রতি পরোক্ষ মন্তব্য করেন।

নয়াদিল্লি: চীনে আয়োজিত এসসিও বৈঠকের সময় ভারত যৌথ বিবৃতিতে স্বাক্ষর করতে অস্বীকার করে। বিদেশমন্ত্রী এস জয়শংকর, প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং-এর এই সিদ্ধান্তের সমর্থন করে বলেন যে, সংগঠনের একটি সদস্য দেশ সন্ত্রাসবাদের উল্লেখ চায়নি। জয়শংকর, কোনো নাম উল্লেখ না করে পাকিস্তানের দিকে ইঙ্গিত করে বলেন যে, যখন সংগঠনের মূল উদ্দেশ্যই সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াই করা, তখন এই ইস্যুটিকে উপেক্ষা করাটা अस्वीকারযোগ্য।

এসসিও বৈঠকে ভারতের বড় সিদ্ধান্ত

চীনের কিংদাও শহরে আয়োজিত সাংহাই সহযোগিতা সংস্থা (এসসিও)-এর বৈঠকে ভারত একটি বড় এবং স্পষ্ট বার্তা দিয়েছে। প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং সেই যৌথ বিবৃতিতে স্বাক্ষর করতে অস্বীকার করেন, যেখানে সন্ত্রাসবাদের কোনো উল্লেখ ছিল না। এই পদক্ষেপ ভারতের বিদেশ নীতিতে আসা কঠোর পরিবর্তন এবং সন্ত্রাসবাদের প্রতি 'শূন্য সহনশীলতা' নীতিকে প্রতিফলিত করে।

জয়শংকরের বক্তব্য: সন্ত্রাসবাদের উপর নীরবতা বরদাস্ত নয়

বিদেশমন্ত্রী এস জয়শংকর এই সিদ্ধান্তের সমর্থন করে স্পষ্টভাবে বলেন যে, যখন এসসিও-র মতো সংগঠনের স্থাপনাই হয়েছে সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য, তখন তার যৌথ বিবৃতিতে এই ইস্যুটি অন্তর্ভুক্ত না করা গুরুতর গাফিলতি। জয়শংকর বলেন, "যখন আপনি সন্ত্রাসবাদের উল্লেখের অনুমতি দেন না, তখন এমন একটি যৌথ বিবৃতি গ্রহণ করা কঠিন হয়ে পরে।"

পাকিস্তানের প্রতি সরাসরি ইঙ্গিত

যদিও জয়শংকর কোনো দেশের নাম নেননি, তবে তিনি বলেন, "আপনি অনুমান করতে পারেন কোন দেশ সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে স্পষ্ট কথা বলতে চায় না।" তাঁর এই বক্তব্য স্পষ্টতই পাকিস্তানের দিকে ইঙ্গিত করে, যারা দীর্ঘদিন ধরে ভারতের উপর সন্ত্রাসবাদে মদত দেওয়ার অভিযোগের শিকার হচ্ছে।

পহেলগাম হামলা বিতর্কের কারণ

রাজনাথ সিং বৈঠকে ২২শে এপ্রিলের পহেলগামে হওয়া সন্ত্রাসী হামলার কথা উল্লেখ করেন, যেখানে ২৬ জনের মৃত্যু হয়েছিল। এই হামলা ভারতের জন্য একটি সংবেদনশীল বিষয় ছিল, কিন্তু যৌথ বিবৃতিতে এই হামলার কোনো উল্লেখ ছিল না। এর বিপরীতে, বিবৃতিতে পাকিস্তানে ঘটা একটি ঘটনার উল্লেখ ছিল, যা ভারত পক্ষপাতদুষ্ট আচরণ হিসেবে বর্ণনা করেছে।

এসসিও-র কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন

এসসিও-র কার্যপ্রণালী সর্বসম্মত নীতির উপর ভিত্তি করে গঠিত। অর্থাৎ, সকল সদস্য দেশের সম্মতি অপরিহার্য। জয়শংকর স্পষ্ট করেন যে, যদি সন্ত্রাসবাদের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সম্মতি না হয়, তবে ভারত এমন কোনো নথিতে স্বাক্ষর করতে পারে না। তিনি বলেন, "আমরা এটা স্পষ্ট করে দিয়েছি যে, সন্ত্রাসবাদকে উপেক্ষা করা যায় না।"

ভারত ২০১৭ সালে এসসিও-র সদস্য হয় এবং ২০২৩ সালে সংগঠনের চেয়ারম্যানও ছিল। ভারত ক্রমাগত এসসিও-র মতো বহু-পক্ষীয় মঞ্চ ব্যবহার করে বৈশ্বিক সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধতা তৈরি করার চেষ্টা করে। এই ঘটনাটি подчерित করে যে, ভারত এখন এমন কোনো চুক্তির অংশ হবে না যা তার সন্ত্রাস-বিরোধী নীতির সঙ্গে মেলে না।

এসসিও-তে অন্তর্ভুক্ত দেশসমূহ

এসসিও-তে ভারতের পাশাপাশি কাজাখস্তান, চীন, কিরগিজস্তান, পাকিস্তান, রাশিয়া, তাজিকিস্তান, উজবেকিস্তান, ইরান এবং বেলারুশ অন্তর্ভুক্ত। এই সংগঠন আঞ্চলিক নিরাপত্তা, অর্থনৈতিক সহযোগিতা এবং সন্ত্রাসবাদ প্রতিরোধের মতো প্রধান লক্ষ্য নিয়ে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল।

Leave a comment