দেশের অধিকাংশ অংশে বর্ষা নির্ধারিত সময়ের আগেই পৌঁছে গেছে এবং মুষলধারে বৃষ্টিতে সারা দেশের আবহাওয়া মনোরম হয়ে উঠেছে। কিন্তু রাজধানী দিল্লি এবং তার আশেপাশের এলাকা এখনও শুকনো অবস্থায় রয়েছে। ভারতীয় আবহাওয়া বিভাগ (IMD) দ্বারা প্রকাশিত সর্বশেষ বর্ষা মানচিত্রে এটি স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে যে, যেখানে প্রায় সারা দেশ বর্ষার বৃষ্টিতে ভিজে গেছে, সেখানে দিল্লি-NCR এখনও এক ফোঁটা বৃষ্টির জন্য অপেক্ষা করছে।
দেশের অনেক অংশে বৃষ্টি স্বস্তি না এনে বরং বিপদ ডেকে এনেছে। হিমাচল প্রদেশে মেঘ ভাঙার ঘটনায় এখন পর্যন্ত পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। রাজস্থানের অনেক শহর জলমগ্ন হয়ে গেছে এবং রাস্তাগুলোতে সমুদ্রের মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। মহারাষ্ট্রের আকোলায় প্রথম বৃষ্টিতেই জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছিল, যেখানে গুজরাটের জুনাগড় এবং নভসারিতে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। দক্ষিণ ভারতে কাবেরী নদী বিপদসীমার উপর দিয়ে বইছে এবং জম্মু-কাশ্মীর থেকেও আকস্মিক বন্যার ছবি সামনে এসেছে।
দিল্লি-NCR-এ মেঘ এবং আর্দ্রতা
দিল্লিতে গত কয়েক দিন ধরে আবহাওয়ার পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে। আকাশে মেঘ রয়েছে, বাতাসে আর্দ্রতা রয়েছে এবং তাপমাত্রা স্বাভাবিকের থেকে কম, কিন্তু এখনও এক ফোঁটা বৃষ্টি হয়নি। আর্দ্রতা এবং স্যাঁতসেঁতে গরমে মানুষের জীবন অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে।
IMD-এর মতে, দিল্লি, NCR, হরিয়ানা, পশ্চিম উত্তরপ্রদেশ এবং রাজস্থানের কিছু অংশ এখনও বর্ষার রেখার বাইরে রয়েছে। যদিও আবহাওয়া বিভাগ হালকা বৃষ্টির সম্ভাবনা প্রকাশ করেছে, তবে এটিকে বর্ষার আনুষ্ঠানিক প্রবেশ হিসেবে ধরা হচ্ছে না।
সাপ্তাহিক ছুটির মধ্যে বর্ষা আসতে পারে
বেসরকারি আবহাওয়া সংস্থা স্কাইমেট ওয়েদার-এর মতে, দিল্লিতে বর্ষা ২৭ জুনের নির্ধারিত তারিখটি মিস করতে পারে, তবে এখন এর প্রবেশ সপ্তাহান্তে অর্থাৎ শনিবার বা রবিবার পর্যন্ত সম্ভব।
বর্তমানে দক্ষিণ-পূর্ব রাজস্থান এবং মধ্যপ্রদেশের কাছে একটি ঘূর্ণাবর্তী সঞ্চালন সক্রিয় রয়েছে। এটি থেকে উৎপন্ন হওয়া দ্রোণিকা রেখা (ট্রাফ লাইন) মধ্যপ্রদেশ ও ছত্তিশগড় হয়ে পূর্ব দিকে অগ্রসর হচ্ছে। এই সিস্টেমটি বঙ্গোপসাগর এবং উত্তর-পশ্চিম ওড়িশা ও পশ্চিমবঙ্গ সংলগ্ন অঞ্চলে গঠিত আরেকটি ঘূর্ণিঝড়ের সঙ্গে যুক্ত হচ্ছে, যার ফলে আগামী দিনগুলিতে বৃষ্টির কার্যকলাপ দিল্লির দিকে বাড়তে পারে।
তবে, এই দ্রোণিকা এখনও দিল্লি থেকে বেশ দক্ষিণে, তাই আজও বর্ষার বৃষ্টির সম্ভাবনা খুবই কম। হ্যাঁ, সন্ধ্যায় হালকা বৃষ্টি হতে পারে, তবে এতে আবহাওয়ায় শীতলতা আসবে না এবং এটিকে বর্ষার প্রবেশ হিসেবেও ধরা হবে না। রাজধানী দিল্লি এবং NCR-কে আরও কিছু দিন গরম ও আর্দ্রতা সহ্য করতে হতে পারে। যদিও আবহাওয়া বিভাগ এবং স্কাইমেট উভয়ই মনে করে যে সপ্তাহান্তের মধ্যে বর্ষা প্রবেশ করতে পারে এবং এর পরে স্বাভাবিক বৃষ্টির প্রক্রিয়া শুরু হবে। ততক্ষণ পর্যন্ত, দিল্লীবাসী বৃষ্টির আশায় মেঘের দিকে তাকিয়ে আছে।
