শ্রীলঙ্কা দল তাদের ঘরের মাঠে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে দুটি টেস্ট ম্যাচের সিরিজ খেলছে। প্রথম টেস্ট ম্যাচটি ড্র হওয়ার পর, দ্বিতীয় টেস্টে স্বাগতিক শ্রীলঙ্কা দ্বিতীয় দিনের খেলা শেষে একটি শক্তিশালী অবস্থানে পৌঁছেছে।
ক্রীড়া সংবাদ: কলম্বোর মাঠে চলমান শ্রীলঙ্কা ও বাংলাদেশের মধ্যকার দ্বিতীয় টেস্ট ম্যাচের দ্বিতীয় দিনে, শ্রীলঙ্কার ওপেনার পাথুম নিসাঙ্কা তাঁর দুর্দান্ত ব্যাটিং দিয়ে দর্শকদের মুগ্ধ করেছেন। নিসাঙ্কা ২৩৮ বল মোকাবেলা করে ১৮টি চমৎকার চারের সাহায্যে ১৪৬ রান করে অপরাজিত থাকেন এবং দিনের খেলা শেষ করেন, যা শ্রীলঙ্কার অবস্থানকে আরও শক্তিশালী করে তোলে।
তাঁর এই সেঞ্চুরি ইনিংসের পর শ্রীলঙ্কা দুই দিন শেষে মাত্র দুটি উইকেট হারিয়ে ২৯০ রান সংগ্রহ করে, যা তাদের লিডকে বেশ শক্তিশালী দেখাচ্ছে।
পাথুম নিসাঙ্কার এটি ছিল দশম আন্তর্জাতিক সেঞ্চুরি, যা তাঁকে ২৭ বছর বা তার কম বয়সী সক্রিয় আন্তর্জাতিক ক্রিকেটারদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি সেঞ্চুরি করা খেলোয়াড়দের তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে নিয়ে আসে। এই তালিকায় তাঁর সামনে রয়েছেন কেবল ভারতীয় ব্যাটসম্যান শুভমন গিল, যিনি এখন পর্যন্ত ১৫টি সেঞ্চুরি করেছেন। মজার বিষয় হলো, নিসাঙ্কা এই ক্ষেত্রে বাংলাদেশের নাজমুল হোসেন শান্তর সঙ্গে যৌথভাবে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছেন। একইসঙ্গে ঋষভ পান্ত এবং ইংল্যান্ডের হ্যারি ব্রুকও ৯-৯টি সেঞ্চুরি করে এই তালিকার ঠিক পিছনে রয়েছেন।
শ্রীলঙ্কার ইনিংসে শক্ত সূচনা
দ্বিতীয় দিনের খেলা বাংলাদেশের ইনিংস শেষ হওয়ার সাথে শুরু হয়েছিল। বাংলাদেশ তাদের প্রথম ইনিংসে মাত্র ২৪৭ রান করে, যেখানে সাদমান ইসলাম ৪৬ রান করে সর্বোচ্চ স্কোরার ছিলেন। এছাড়া, কোনো ব্যাটসম্যানই ৪০ রানের গণ্ডি পার করতে পারেননি। শ্রীলঙ্কান বোলাররা দুর্দান্ত পারফর্ম করেন, যেখানে আশিথা ফার্নান্দো এবং দিনুশা ৩টি করে উইকেট নিয়ে বাংলাদেশের ব্যাটিং লাইনআপের মেরুদণ্ড ভেঙে দেন। এছাড়া বিশ্ব ফার্নান্দো ২টি উইকেট এবং রত্নায়েকে ও ধনঞ্জয়া ডি সিলভা ১টি করে উইকেট পান।
বাংলাদেশের ইনিংস কম রানে গুটিয়ে যাওয়ার পর শ্রীলঙ্কার ওপেনার নিসাঙ্কা ও করুনারত্নে দলকে একটি শক্ত সূচনা এনে দেন। করুনারত্নে যদিও ৪১ রান করে প্যাভিলিয়নে ফিরে যান, তবে নিসাঙ্কা এক প্রান্ত ধরে রেখেছিলেন এবং বাংলাদেশের বোলারদের কোনো সুযোগ দেননি।
নিসাঙ্কার ধৈর্য ও কৌশলের জাদু
পাথুম নিসাঙ্কার এই ইনিংসের সবচেয়ে বড় বৈশিষ্ট্য ছিল তাঁর ধৈর্য এবং শট নির্বাচন। তিনি কঠিন পরিস্থিতিতেও ধৈর্য হারাননি এবং প্রতিটি সুযোগে বলকে বাউন্ডারিতে পাঠিয়েছেন। ফাস্ট বোলারদের বিরুদ্ধে তিনি রক্ষণাত্মক কৌশল ব্যবহার করে রান সংগ্রহ করেন, এবং স্পিনারদের উপর আক্রমণ করতেও পিছপা হননি। নিসাঙ্কার এই সেঞ্চুরি তাঁর ক্যারিয়ারের জন্য খুবই বিশেষ। ২৭ বছরের কম বয়সী খেলোয়াড়দের মধ্যে এত ধারাবাহিকতা দেখানো সহজ নয়, তবে নিসাঙ্কা প্রমাণ করেছেন যে তিনি ভবিষ্যতে শ্রীলঙ্কা ক্রিকেটের বড় তারকা হতে পারেন।
বাংলাদেশের সমস্যা বাড়ল
দ্বিতীয় দিনের খেলার শেষে বাংলাদেশের সামনে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো কিভাবে শ্রীলঙ্কাকে প্রথম ইনিংসে বিশাল স্কোর করা থেকে আটকানো যায়। শ্রীলঙ্কা দল মাত্র ২ উইকেট হারিয়ে ২৯০ রান করেছে এবং নিসাঙ্কার মতো সেট ব্যাটসম্যান ক্রিজে রয়েছেন, যা বাংলাদেশের বোলারদের উপর স্পষ্ট চাপ সৃষ্টি করছে। বাংলাদেশের জন্য তৃতীয় দিনের শুরুটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ হতে চলেছে। যদি তারা দ্রুত উইকেট নিতে ব্যর্থ হয়, তাহলে শ্রীলঙ্কা ৫০০ রান পর্যন্ত স্কোর করতে পারে, যা ম্যাচের উপর থেকে বাংলাদেশের নিয়ন্ত্রণ প্রায় শেষ করে দেবে।