মিয়া শেখচিল্লির ডিমের ঝুড়ি: স্বপ্নভঙ্গ

🎧 Listen in Audio
0:00

একদিন মিয়া শেখচিল্লি সকাল সকাল বাজারে পৌঁছে গেল। বাজার থেকে সে অনেকগুলো ডিম কিনল এবং সেগুলোকে একটা ঝুড়িতে জমা করল। তারপর ঝুড়িটা মাথায় নিয়ে নিজের বাড়ির দিকে হাঁটা দিল। পথ চলতে চলতে সে কল্পনার জগৎ তৈরি করতে শুরু করল। শেখচিল্লি ভাবতে লাগল যে, যখন এই ডিমগুলো থেকে বাচ্চা বেরোবে, তখন সে তাদের খুব যত্ন নেবে। তারপর যখন কিছু সময় পর এই বাচ্চাগুলো মুরগি হয়ে যাবে, তখন তারা ডিম দিতে শুরু করবে। আমি সেই ডিমগুলো বাজারে ভালো দামে বিক্রি করে অনেক টাকা রোজগার করব এবং শীঘ্রই ধনী হয়ে যাব। অনেক টাকা আসার সাথে সাথেই আমি একজন চাকর রাখব, যে আমার সব কাজ করে দেবে। এর পর নিজের জন্য অনেক বড় একটা বাড়িও বানাব। সেই বিশাল বাড়িতে সব ধরনের আরাম-আয়েশের ব্যবস্থা থাকবে।

সেই বিশাল বাড়িতে একটা ঘর শুধু খাবার খাওয়ার জন্য থাকবে, একটা ঘর বিশ্রাম করার জন্য থাকবে এবং একটা ঘর বসার জন্য থাকবে। যখন আমার কাছে সব ধরনের আরাম-আয়েশ থাকবে, তখন আমি খুব সুন্দরী একটি মেয়েকে বিয়ে করব। আমি আমার স্ত্রীর জন্যও আলাদা করে একজন চাকর রাখব। নিজের স্ত্রীকে সময় সময় দামি পোশাক এবং গয়না এনে দেব। বিয়ের পর আমার ৫-৬টি সন্তানও হবে, যাদের আমি খুব ভালোবাসব এবং যখন তারা বড় হয়ে যাবে, তখন তাদের ভালো ঘরে বিয়ে দেব। তারপর তাদেরও সন্তান হবে, যাদের সাথে আমি দিনভর শুধু খেলেই যাব। এইসব কল্পনার মধ্যে মগ্ন শেখচিল্লি বিভোর হয়ে হেঁটে যাচ্ছিল, ঠিক তখনই তার পা রাস্তায় পড়ে থাকা একটা বড় পাথরের সাথে ধাক্কা লাগে এবং ডিম ভর্তি ঝুড়ি নিয়ে ধড়াম করে নিচে পড়ে যায়। নিচে পড়ার সাথে সাথেই সব ডিম ভেঙে যায় এবং সেই সাথে শেখচিল্লির স্বপ্নও ভেঙে চুরমার হয়ে যায়।

এই গল্প থেকে আমরা এই শিক্ষা পাই যে – শুধু পরিকল্পনা করলে বা স্বপ্ন দেখলে কিছু হয় না, বরং পরিশ্রম করাও জরুরি। সেই সাথে পুরো মনোযোগ বর্তমান সময়ের ওপর থাকা উচিত, নাহলে শেখচিল্লির মতো শুধু কল্পনার জগৎ তৈরি করলে সবসময় ক্ষতিই হবে।

```

Leave a comment