দেশের বিভিন্ন প্রান্তে আবহাওয়ার অস্থিরতা: দিল্লিতে তীব্র রোদ, রাজস্থানে ঝড়-বৃষ্টি, বিহারে ভারী বৃষ্টিপাতের সতর্কতা

দেশের বিভিন্ন প্রান্তে আবহাওয়ার অস্থিরতা: দিল্লিতে তীব্র রোদ, রাজস্থানে ঝড়-বৃষ্টি, বিহারে ভারী বৃষ্টিপাতের সতর্কতা
🎧 Listen in Audio
0:00

দেশের বিভিন্ন প্রান্তে আকস্মিকভাবে আবহাওয়ার পরিবর্তন দেখা দিয়েছে। দিল্লি-এনসিআরে ঘন মেঘ এবং তীব্র রোদে আবহাওয়ার লীলাচাল চলছে। অন্যদিকে, রাজস্থানে ঝড়-বৃষ্টি এবং হালকা বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে, আর বিহারে পরবর্তী সাত দিন ধরে ভারী বৃষ্টিপাতের সতর্কতা জারি করা হয়েছে।

আবহাওয়ার পূর্বাভাস: দিল্লি-এনসিআরে বর্তমানে ঘন মেঘ এবং রোদের মাঝে আবহাওয়া লীলাচাল করছে, যার ফলে উৎকট গরম অনুভূত হচ্ছে। তবে, আবহাওয়া দপ্তরের পূর্বাভাস অনুযায়ী, সোমবার অর্থাৎ ২ জুন থেকে আবহাওয়ায় পরিবর্তন আসবে। ২ থেকে ৪ জুন হালকা বৃষ্টিপাত এবং ঝড়ের সম্ভাবনা রয়েছে, যার সময় বাতাসের বেগ ৩০ থেকে ৬০ কিলোমিটার প্রতি ঘন্টা পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে।

এই সময় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৫ থেকে ৩৮ ডিগ্রি এবং সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ২৫ থেকে ২৯ ডিগ্রির মধ্যে থাকার আশা করা হচ্ছে। এর পর ৫ এবং ৬ জুন আবহাওয়া শুষ্ক থাকবে, যদিও আংশিক মেঘলা থাকবে এবং উৎকট গরম অব্যাহত থাকবে। এই সময় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৭ থেকে ৩৯ ডিগ্রি এবং সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ২৫ থেকে ২৮ ডিগ্রির মধ্যে থাকবে।

দিল্লি-এনসিআরে উৎকট গরম এবং মেঘের খেলা

দিল্লি-এনসিআরে এই দিনগুলিতে ঘন মেঘ এবং তীব্র রোদের মাঝে আবহাওয়ার মেজাজ বেশ অস্থির। দিনের বেলায় তীব্র রোদে তাপমাত্রা বেড়ে যায়, অন্যদিকে মেঘের আনাগোনায় কিছুক্ষণের জন্য আবহাওয়া ঠান্ডা হয়ে যায়। এই কারণে এখানকার জনতা উৎকট গরম এবং উষ্ণতার উভয়েরই সম্মুখীন হচ্ছে। আবহাওয়া দপ্তরের পূর্বাভাস অনুযায়ী, ২ থেকে ৪ জুন পর্যন্ত দিল্লি-এনসিআরে হালকা বৃষ্টিপাত এবং তীব্র ঝড়ের সম্ভাবনা রয়েছে। এই সময় বাতাসের বেগ ৩০ থেকে ৬০ কিলোমিটার প্রতি ঘন্টা পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে, যার ফলে তাপমাত্রায় কিছুটা হ্রাস পেতে পারে।

আবহাওয়া বিশেষজ্ঞদের মতে, সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৫ থেকে ৩৮ ডিগ্রির মধ্যে থাকবে, যখন সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ২৫ থেকে ২৯ ডিগ্রি পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে। তবে ৫ এবং ৬ জুন আবহাওয়া শুষ্ক থাকবে, কিন্তু মেঘের আংশিক উপস্থিতির ফলে উৎকট গরম অনুভূত হবে। এই সময় মানুষকে সতর্ক থাকতে হবে কারণ তীব্র বাতাসের কারণে গাছপালা এবং দুর্বল অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।

রাজস্থানে পশ্চিমা বায়ুর প্রভাব

রাজস্থানের অধিকাংশ অঞ্চলে এখনও পর্যন্ত আবহাওয়া বেশ শুষ্ক ছিল, কিন্তু পশ্চিমা বায়ুর সক্রিয়তার ফলে পরিস্থিতির পরিবর্তন হচ্ছে। জয়পুর বিভাগ সহ অনেক এলাকায় শনিবার হালকা বৃষ্টি হয়েছে, যা মৌসুমী বৃষ্টির আগমনের ইঙ্গিত বহন করে। আবহাওয়া দপ্তর ২ থেকে ৪ জুনের মধ্যে রাজস্থানে তীব্র মেঘ, ঝড় এবং তীব্র বাতাস বয়ার সম্ভাবনা প্রকাশ করেছে। বাতাসের বেগ ৫০ থেকে ৬০ কিলোমিটার প্রতি ঘন্টা পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে।

বিশেষজ্ঞদের অনুমান, আগামী ৪-৫ দিন পর্যন্ত রাজ্যের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে থাকতে পারে, যা পূর্বের দিনগুলির তুলনায় কিছুটা স্বস্তিদায়ক হবে। তবে, কিছু জেলায় তীব্র ঝড় এবং বৃষ্টিপাতের ফলে জনজীবনে প্রভাব পড়তে পারে। গ্রামীণ এলাকায় কৃষকদেরও তাদের ফসলের সুরক্ষার জন্য সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।

বিহারে সাত দিন ধরে ভারী বৃষ্টিপাতের সতর্কতা

বিহারের সীমান্তবর্তী অঞ্চলে আগামী এক সপ্তাহ ধরে ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা প্রকাশ করা হয়েছে। পূর্ণিয়া আবহাওয়া দপ্তরের বিজ্ঞানী বীরেন্দ্র কুমার ঝা'র মতে, বিহারে মৌসুমী বৃষ্টিপাতের সক্রিয়তা আগামী তিন মাস ধরে বজায় থাকবে এবং ভারী বৃষ্টিপাতের ফলে অনেক জেলায় বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে। পূর্ণিয়া, অররিয়া, কিশানগঞ্জ সহ অন্যান্য জেলার জন্য সতর্কতা জারি করা হয়েছে।

আবহাওয়া দপ্তর এখানে ৩০-৫০ কিলোমিটার প্রতি ঘন্টা বেগে তীব্র বাতাস এবং বজ্রপাতের সতর্কতা দিয়েছে। স্থানীয় প্রশাসন মানুষকে সতর্ক থাকার এবং প্রয়োজনীয় সুরক্ষামূলক ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে। ভারী বৃষ্টিপাতের ফলে নদীগুলো উন্মত্ত হয়ে উঠতে পারে, যার ফলে বন্যার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। সীমান্তবর্তী অঞ্চল ছাড়াও বিহারের অন্যান্য অঞ্চলেও মৌসুমী বৃষ্টিপাতের ফলে কৃষকদের উপকার হবে, তবে একই সাথে জলাবদ্ধতা এবং রাস্তা বন্ধ হওয়ার আশঙ্কাও থাকবে।

অসমে বন্যায় জনজীবন অস্তব্যস্ত

উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য অসমে অব্যাহত বৃষ্টিপাতের ফলে ভূমিধ্বস এবং বন্যার পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। এই প্রাকৃতিক দুর্যোগে কমপক্ষে ৮ জনের প্রাণহানি হয়েছে এবং ১৭ টি জেলায় বন্যার তাণ্ডব চলছে। প্রায় ৭৮ হাজারেরও বেশি মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যখন তিনটি জেলায় লাল সতর্কতা এবং আটটি জেলায় نارنجی সতর্কতা জারি করা হয়েছে।

অসমের বন্যাকে আরও গুরুতর করে তুলেছে অরুণাচল প্রদেশ এবং মেঘালয়ের উচ্চভূমির বৃষ্টির পানি। ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় ত্রাণ ও উদ্ধার কাজ চলছে, কিন্তু ভারী বৃষ্টিপাতের ফলে মানুষকে নানা কঠিন সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। প্রশাসন যাতায়াতে সতর্কতা অবলম্বন করার এবং বন্যাগ্রস্ত এলাকা থেকে দূরে থাকার পরামর্শ দিয়েছে।

মুম্বাইতে বৃষ্টির বিরতি, উষ্ণতায় কষ্টে মানুষ

মুম্বাইতে এ বছর মৌসুমী বৃষ্টি সবচেয়ে আগে শুরু হয়েছিল, কিন্তু তারপর বৃষ্টি থেমে গেছে। গত কয়েকদিন ধরে বৃষ্টিপাত কমে যাওয়ার কারণে এখানে তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেয়েছে, যার ফলে শহরে উষ্ণতা বেড়েছে। আবহাওয়া বিশেষজ্ঞদের মতে, ৬ জুনের আগে মুম্বাইতে ভাল বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা কম। তবে, কিছু এলাকায় হালকা বৃষ্টিপাত হতে পারে, যা অল্পকালীন স্বস্তি দেবে, কিন্তু উৎকট গরম থেকে মুক্তি দিতে পারবে না।

মুম্বাইবাসীদের উষ্ণতা এবং গরম থেকে বাঁচার জন্য অতিরিক্ত সতর্কতা অবলম্বন করার প্রয়োজন। প্রচুর পানি পান করা এবং বাইরে রোদে কম সময় কাটানো উপকারী হবে।

Leave a comment