পাকিস্তানের দারিদ্র্য বৃদ্ধি: জিএসটি-কে দায়ী করল বিশ্ব ব্যাংক

🎧 Listen in Audio
0:00

পাকিস্তানে দারিদ্র্য বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিশ্ব ব্যাংকের এক প্রতিবেদনে জিএসটি-কে দারিদ্র্যের প্রধান কারণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। ভারতের সাথে যুদ্ধের কথা বলে পাকিস্তান সরকার, কিন্তু নিজের নাগরিকদের পেট পুরে খাওয়াতে ব্যর্থ।

পাকিস্তান: পাকিস্তানের অর্থনৈতিক অবস্থা দিন দিন খারাপ হচ্ছে। দেশের সরকার তার নাগরিকদের দু’বেলা খাবার জোগাড় করতেও ব্যর্থ হচ্ছে। বিশ্ব ব্যাংকের সম্প্রতি প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে পাকিস্তানের অর্থনৈতিক দুরবস্থার চিত্র স্পষ্ট হয়েছে। এই প্রতিবেদনের মতে, পাকিস্তানে দারিদ্র্য ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে, যার প্রধান কারণ দেশে আরোপিত জেনারেল সেলস ট্যাক্স (GST)। অন্যদিকে পাকিস্তান সরকার ভারতের বিরুদ্ধে যুদ্ধের বাক্যবিনিময় করছে। এটি একটি কঠোর সত্য যে পাকিস্তান তার দেশবাসীর পেট পুরে খাওয়াতে পারছে না, কিন্তু ভারতের সাথে যুদ্ধ করার স্বপ্ন দেখছে।

বিশ্ব ব্যাংকের প্রতিবেদন: দারিদ্র্যের প্রকৃত কারণ GST

বিশ্ব ব্যাংকের প্রতিবেদন, যার শিরোনাম ‘The Effects of Taxes and Transfers on Inequality and Poverty in Pakistan’, তাতে বলা হয়েছে যে পাকিস্তানে প্রযোজ্য জেনারেল সেলস ট্যাক্স (GST) দেশের দরিদ্র জনগোষ্ঠীর উপর সবচেয়ে বেশি প্রভাব ফেলেছে। প্রতিবেদনের মতে, GST-এর বোঝা প্রি-ট্যাক্স ব্যয়ের ৭% এরও বেশি। অর্থাৎ, দেশের দরিদ্র ও দুর্বল জনগোষ্ঠীকে দৈনন্দিন প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের উপর অতিরিক্ত কর দিতে হয়। এর ফলে তাদের অর্থনৈতিক অবস্থা আরও খারাপ হচ্ছে।

প্রতিবেদনে স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে যে পাকিস্তানে দারিদ্র্য বৃদ্ধির জন্য সবচেয়ে বড় দায়ী এই কর ব্যবস্থা। যখন দেশের দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে দৈনন্দিন জিনিসপত্রের উপর এত ট্যাক্স দিতে হয়, তখন তাদের জীবনযাপন কঠিন হয়ে পড়ে।

অসমতা কমানোর ক্ষেত্রে BISP-এর ভূমিকা

বিশ্ব ব্যাংকের প্রতিবেদনে এটাও বলা হয়েছে যে পাকিস্তানে দারিদ্র্য ও অসমতা কমানোর জন্য বেনাজির ইনকাম সাপোর্ট প্রোগ্রাম (BISP) সবচেয়ে বেশি কার্যকরী হিসেবে প্রমাণিত হয়েছে। এটি একটি মাসিক নগদ সহায়তা কর্মসূচী, যা দেশের সবচেয়ে দরিদ্র পরিবারগুলিকে আর্থিক সাহায্য প্রদান করে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে অসমতা কমানোর ক্ষেত্রে BISP-এর অবদান সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।

তবে, এটাও লক্ষণীয় যে BISP ছাড়াও প্রাক-প্রাথমিক ও প্রাথমিক শিক্ষার উপর ব্যয় দেশে অসমতা বৃদ্ধি করেছে। অর্থাৎ, পাকিস্তান সরকার শিক্ষা जैसी গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রে পর্যাপ্ত বিনিয়োগ করতে পারছে না।

IMF ও অন্যান্য দেশ থেকে ভিক্ষা চাওয়া পাকিস্তান

পাকিস্তানের বর্তমান অবস্থা এতটাই খারাপ হয়েছে যে দেশের খরচ চালানোর জন্য IMF (International Monetary Fund) এবং অন্যান্য দেশ থেকে বারবার ঋণ ও সাহায্য চাইতে হচ্ছে। পাকিস্তান সরকার তার নাগরিকদের জন্য মৌলিক চাহিদা পূরণ করতেও ব্যর্থ হচ্ছে। খাবার-দাবার থেকে শুরু করে স্বাস্থ্য ও শিক্ষা जैसी মৌলিক সুযোগ-সুবিধার অবস্থা জরাজীর্ণ।

পাকিস্তানের মিডিয়া প্রতিবেদনগুলি বলে যে দেশে মূল্যস্ফীতি চরমে পৌঁছেছে। সাধারণ জনগণ মহার্ঘ্য ও করের বোঝা নিয়ে পিষ্ট হয়ে পড়েছে। পেট্রোল-ডিজেল থেকে শুরু করে শাকসবজি ও ওষুধপত্রের দাম আকাশছোঁয়া। অন্যদিকে, সরকার ভারতের সাথে যুদ্ধের কথা বলে চলেছে।

ভারতের সাথে যুদ্ধের কথা ও জনতার ক্ষুধা

পাকিস্তান সরকার ভারতকে শত্রু দেখিয়ে তার ব্যর্থতার আড়ালে জনতার দৃষ্টি অন্যদিকে ঘুরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে। কিন্তু সত্য হলো, দেশের জনগোষ্ঠী ক্ষুধার কাছে পৌঁছে গেছে। বিশ্ব ব্যাংকের প্রতিবেদন স্পষ্ট করে দিয়েছে যে পাকিস্তানে দারিদ্র্য ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং সরকারের নীতি এই দারিদ্র্য বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।

চিন্তার বিষয় হলো, যে দেশ তার নাগরিকদের খাওয়াতে পারে না, সে কি ভারতের মতো দেশের সাথে যুদ্ধ করার কথা ভাবতে পারে? পাকিস্তানকে প্রথমে তার দেশের জনগোষ্ঠীর পেট পূরণের ব্যবস্থা করতে হবে, যুদ্ধের হুমকি দেওয়া নয়।

Leave a comment