অস্ট্রিয়ার গ্রাজে স্কুল গুলিকাণ্ড: ১১ জন নিহত, আক্রমণকারী আত্মহত্যা

🎧 Listen in Audio
0:00

অস্ট্রিয়ার গ্রাজ শহরে স্কুলে গুলিবর্ষণ, ১১ জনের মৃত্যু, আক্রমণকারী ছাত্র আত্মহত্যা করেছে। বুলিং সম্ভাব্য কারণ। পুলিশ স্কুল খালি করিয়েছে, তদন্ত চলছে। অনেকে আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি।

Austria School Shooting: ২০২৫ সালের ১০ই জুন, মঙ্গলবার অস্ট্রিয়ার গ্রাজ শহরে একটি মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছে। শহরের একটি স্কুলে গুলিবর্ষণের ঘটনায় ১১ জনের মৃত্যু হয়েছে, যার মধ্যে আক্রমণকারীও রয়েছে, যিনি বলে মনে করা হচ্ছে স্কুলের একজন ছাত্র ছিলেন। এই আক্রমণে অনেক ছাত্র ও শিক্ষক আহত হয়েছেন। স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, আক্রমণকারী দুটি ক্লাসরুমে গুলি চালিয়ে পরে স্কুলের টয়লেটে আত্মহত্যা করেছে। এই ঘটনায় সমগ্র অস্ট্রিয়া কেঁপে উঠেছে।

গ্রাজের স্কুলে কী ঘটেছিল?

মঙ্গলবার সকাল ১০টার দিকে গ্রাজের BORG Dreierschützengasse হাই স্কুলে গুলিবর্ষণের খবর পাওয়া যায়। এই স্কুলটি শহরের উত্তর-পশ্চিমাংশে অবস্থিত। স্থানীয় সংবাদপত্র Kronen Zeitung-এর খবরে বলা হয়েছে, আক্রমণকারী দুটি ক্লাসরুমে অন্ধাধুন্ধ গুলি চালিয়েছে, যাতে অন্তত ১১ জন প্রাণ হারিয়েছে। নিহতদের মধ্যে সাতজন ছাত্র, একজন শিক্ষক এবং অন্যরা রয়েছে। আক্রমণকারী, যিনি ২২ বছর বয়সী একজন প্রাক্তন ছাত্র ছিলেন, পরে স্কুলের টয়লেটে মৃত অবস্থায় পাওয়া গেছে। পুলিশ মনে করছে, সে আত্মহত্যা করেছে।

এই আক্রমণে কমপক্ষে ২৮ জন আহত হয়েছে, যাদের মধ্যে চারজনের অবস্থা গুরুতর। আহতদের কাছাকাছি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে, যেখানে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, পুলিশ ও অ্যাম্বুলেন্স স্কুলের বাইরে অবস্থান করছে এবং কিছু আহতকে হেলিকপ্টারে করে হাসপাতালে নেওয়া হচ্ছে।

আক্রমণকারী কে ছিল?

পুলিশ ও স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, আক্রমণকারী ছিলেন স্কুলের একজন প্রাক্তন ছাত্র, যার বয়স ২২ বছর। Salzburger Nachrichten-এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সে আক্রমণে পিস্তল ও শটগান ব্যবহার করেছে, যা বলে মনে করা হচ্ছে সে আইনিভাবে কিনেছিল। আক্রমণকারী দুটি ক্লাসরুমে গুলি চালিয়ে পরে স্কুলের টয়লেটে গিয়ে আত্মহত্যা করেছে।

যদিও পুলিশ এখনও তার পরিচয় প্রকাশ করেনি, তবে বলা হচ্ছে যে সে স্কুলে বুলিংয়ের শিকার ছিল। স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের দাবি, বুলিং এই আক্রমণের সম্ভাব্য কারণ হতে পারে। তবে, পুলিশ এখনও এই ঘটনার পিছনে থাকা সঠিক উদ্দেশ্য জানার জন্য গहन তদন্ত করছে।

পুলিশ ও জরুরি সেবার দ্রুত কার্যক্রম

গুলিবর্ষণের খবর পেলে অস্ট্রিয়ার পুলিশ তৎক্ষণাৎ ব্যবস্থা গ্রহণ করে। সকাল ১০টার সময় পুলিশ স্কুল থেকে গুলির শব্দ শুনে খবর পায়। এরপর নিয়মিত পুলিশ ইউনিটের সাথে সাথে Cobra বিশেষ বাহিনী মোতায়েন করা হয়। একটি পুলিশ হেলিকপ্টারও ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়। দুপুরের মধ্যে স্কুল খালি করা হয় এবং সকল ছাত্রকে নিরাপদ স্থানে পৌঁছে দেওয়া হয়।

পুলিশ সোশ্যাল মিডিয়ায় জানিয়েছে, পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে এবং জনসাধারণের জন্য কোনো বিপদ নেই। স্কুলের পুরো ভবনের তল্লাশি করা হয়েছে যাতে নিশ্চিত হওয়া যায় কোনো অন্য বিপদ আছে কিনা। কাছাকাছি হাসপাতালে জরুরি সতর্কতা জারি করা হয় এবং আহতদের চিকিৎসা শুরু করা হয়।

বুলিং কি আক্রমণের কারণ ছিল?

স্থানীয় সংবাদমাধ্যম ও পুলিশ সূত্রের খবরে বলা হয়েছে, আক্রমণকারী স্কুলে বুলিংয়ের শিকার হয়েছিল এবং এটি আক্রমণের একটি সম্ভাব্য কারণ হতে পারে। Kronen Zeitung জানিয়েছে, আক্রমণকারী নিজেকে বুলিংয়ের শিকার মনে করেছিল এবং সম্ভবত প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য এই পদক্ষেপ নিয়েছে। তবে, এখনও এটি সম্পূর্ণ স্পষ্ট নয় এবং পুলিশ এই দিকে তদন্ত করছে।

বুলিং একটি গুরুতর সমস্যা, যা বিশ্বের সকল স্কুলে দেখা যায়। এটি কেবল মানসিক স্বাস্থ্যকেই প্রভাবিত করে না, বরং কখনও কখনও এ ধরণের হিংসাত্মক ঘটনার জন্ম দেয়। এই ঘটনাটি স্কুলে বুলিং বন্ধ করার এবং ছাত্রদের মানসিক স্বাস্থ্যের দিকে নজর দেওয়ার প্রয়োজনীয়তা আবারও তুলে ধরেছে।

Leave a comment