লস অ্যাঞ্জেলেসে অভিবাসীবিরোধী বিক্ষোভের জেরে কারফিউ

🎧 Listen in Audio
0:00

লস অ্যাঞ্জেলেসে অভিবাসীবিরোধী বিক্ষোভের সময় হিংস্র প্রদর্শন ছড়িয়ে পড়ায় মেয়র কারফিউ জারি করেছেন। ট্রাম্প রাজ্যের অনুমতি ছাড়াই ন্যাশনাল গার্ড মোতায়েন করেছেন, যার ফলে নতুন বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে।

লস অ্যাঞ্জেলেস কারফিউ: লস অ্যাঞ্জেলেসে অভিবাসীবিরোধী কর্মকাণ্ডের ফলে শহরে অশান্তি, হিংসা এবং লুণ্ঠনের পর মেয়র ক্যারেন বেস রাত ৮ টা থেকে সকাল ৬ টা পর্যন্ত কারফিউ জারি করেছেন। ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের দ্বারা ন্যাশনাল গার্ড এবং মেরিনের মোতায়েন নিয়ে বিতর্ক তীব্রতর হচ্ছে। এই বিষয়ে রাজ্য এবং কেন্দ্রীয় সরকার পরস্পর বিরোধী অবস্থানে রয়েছে।

লস অ্যাঞ্জেলেসে অশান্তির মধ্যে কারফিউ ঘোষণা

আমেরিকার লস অ্যাঞ্জেলেস শহরে গত কয়েকদিন ধরে ক্রমাগত বিক্ষোভ প্রদর্শন, অগ্নিসংযোগ এবং লুণ্ঠনের মতো ঘটনা ঘটছে। এই ঘটনাগুলিকে রোধ করার জন্য শহরের মেয়র ক্যারেন বেস স্থানীয় জরুরী অবস্থা ঘোষণা করে রাতভর কারফিউ জারি করেছেন। কারফিউ প্রতি রাত ৮ টা থেকে সকাল ৬ টা পর্যন্ত চলবে এবং এটি কয়েক দিন ধরে চলতে পারে।

বিক্ষোভের কারণ: অভিবাসীবিরোধী নীতি

এই বিক্ষোভ প্রদর্শন ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের দ্বারা অভিবাসী নাগরিকদের বিরুদ্ধে চালানো কর্মসূচীর প্রতিবাদে শুরু হয়েছিল। ICE (U.S. Immigration and Customs Enforcement) কর্তৃক শহরে চালানো অভিযান এবং গ্রেফতারের কারণে জনগণের মধ্যে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, ট্রাম্প প্রশাসনের নীতিগুলি জাতিগত বৈষম্য এবং স্বৈরতন্ত্রকে উস্কে দিচ্ছে।

ন্যাশনাল গার্ড এবং মেরিন মোতায়েন নিয়ে বিতর্ক

আমেরিকান প্রতিরক্ষা বাহিনীর ভূমিকা এখন কেবল সীমিত সুরক্ষা পর্যন্ত সীমাবদ্ধ নেই। ICE-এর অভিযানে ন্যাশনাল গার্ডের সৈন্যরাও অংশ নিয়েছে, যারা আগে কেবলমাত্র কেন্দ্রীয় সম্পত্তির সুরক্ষা পর্যন্ত সীমাবদ্ধ ছিল। মঙ্গলবার প্রকাশিত ছবিতে দেখা গেছে ন্যাশনাল গার্ড কর্মীরা ICE কর্মকর্তাদের সাথে মিলে গ্রেফতারের সময় সুরক্ষা দিচ্ছে। ICE স্পষ্ট করে বলেছে যে এই সৈন্যরা কেবলমাত্র কেন্দ্রীয় কর্মকর্তাদের সুরক্ষা করছিল।

ট্রাম্প প্রশাসনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা

ক্যালিফোর্নিয়ার গভর্নর গ্যাভিন নিউসম এই বিষয় নিয়ে কেন্দ্রীয় আদালতে মামলা দায়ের করেছেন। তিনি অভিযোগ করেছেন যে রাষ্ট্রপতি ট্রাম্প রাজ্য সরকারের অনুমতি ছাড়াই ন্যাশনাল গার্ড এবং মেরিন মোতায়েন করেছেন, যা সাংবিধানিক অধিকার লঙ্ঘন। গভর্নর নিউসমের বক্তব্য, এই পদক্ষেপ রাজ্যের অধিকার লঙ্ঘন এবং এতে নাগরিকদের মধ্যে উত্তেজনা এবং হিংসা বৃদ্ধি পেতে পারে।

রাস্তায় সামরিক উপস্থিতি বৃদ্ধি

ট্রাম্প প্রশাসনের নির্দেশে লস অ্যাঞ্জেলেসে প্রায় ৪,০০০ ন্যাশনাল গার্ড এবং ৭০০ মেরিন সৈন্য মোতায়েন করা হয়েছে। তাদের মোতায়েনের ফলে শহরে সামরিক উপস্থিতি দ্রুত বৃদ্ধি পেয়েছে। ইউ.এস. নর্দান কমান্ডের মতে, এই সামরিক বাহিনী সুরক্ষা চৌকি, দ্রুত প্রতিক্রিয়া দল এবং কেন্দ্রীয় সম্পত্তির সুরক্ষার মতো কাজে নিযুক্ত রয়েছে।

রাষ্ট্রীয় নেতৃত্ব উদ্বেগ প্রকাশ করেছে

ক্যালিফোর্নিয়ার ডেমোক্রেটিক নেতারা সেনাবাহিনী মোতায়েন নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। সিনেটর অ্যাডাম শিফ এবং অ্যালেক্স পাদিলা এক যৌথ বিবৃতিতে বলেছেন,
“সামরিক বাহিনী কেবল চরম পরিস্থিতিতে মোতায়েন করা উচিত, এবং লস অ্যাঞ্জেলেসের পরিস্থিতি এখনো এমন নয়।” ডেমোক্রেট নেতাদের বক্তব্য, এই পদক্ষেপে গণতন্ত্র এবং নাগরিক অধিকারের জন্য হুমকি রয়েছে।

Leave a comment