ইসরায়েলের ব্যাপক আক্রমণ: ইরানের পারমাণবিক কেন্দ্র লক্ষ্যবস্তু

🎧 Listen in Audio
0:00

ইসরায়েল ইরানের পারমাণবিক কেন্দ্রগুলিতে ব্যাপক আক্রমণ চালিয়েছে। ‘অপারেশন রাইজিং লায়ন’ নামে পরিচিত এই অভিযানে বহু বিজ্ঞানী ও সামরিক কর্মকর্তা নিহত হয়েছেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থনে এই আক্রমণ আরও তীব্র হয়েছে। মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা চরমে পৌঁছেছে।

ইসরায়েল-ইরান আক্রমণ: মধ্যপ্রাচ্যে আবারও পরিস্থিতি অত্যন্ত সংকটাপন্ন হয়ে উঠছে। ইসরায়েল ও ইরানের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে চলা উত্তেজনার ফলে এখন যুদ্ধের মতো পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইরানকে কঠোর সতর্কবার্তা দেওয়ার অল্প কিছুক্ষণ পরেই ইসরায়েল ইরানের বিরুদ্ধে আরেকটি ব্যাপক সামরিক আক্রমণ চালিয়েছে।

শিরাজ, তাবরিজ ও নাতানজ সাইটে পুনরায় আক্রমণ

ইরানি গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, ইসরায়েলি সেনাবাহিনী পুনরায় ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচির সাথে জড়িত গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলিতে আক্রমণ শুরু করেছে। এইবার শিরাজ ও তাবরিজ শহরের পাশাপাশি নাতানজ পারমাণবিক কেন্দ্রকেও লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে।

নাতানজ কেন্দ্র ইরানের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কর্মসূচির একটি প্রধান কেন্দ্র এবং অতীতেও বহুবার ইসরায়েলের সমালোচনা ও আক্রমণের লক্ষ্যবস্তু হয়েছে।

ইসরায়েলি মুখপাত্রের দাবি – ‘পারমাণবিক কেন্দ্রগুলিতে ব্যাপক ক্ষতি’

ইসরায়েলি সামরিক মুখপাত্র ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এফি ডেফ্রিন জানিয়েছেন, সাম্প্রতিক আক্রমণে ইরানের প্রধান পারমাণবিক কেন্দ্রগুলিতে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। তিনি আরও জানিয়েছেন, এই সামরিক অভিযান শীঘ্রই শেষ হবে না, বরং এটিকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাওয়া হতে পারে। এর অর্থ হল আগামী দিনগুলিতে আরও আক্রমণ হতে পারে।

অপারেশন ‘রাইজিং লায়ন’ – ইসরায়েলের সামরিক কৌশল

শুক্রবার ভোরে ইসরায়েল ‘অপারেশন রাইজিং লায়ন’ নামে একটি ব্যাপক সামরিক অভিযান শুরু করে। এই অভিযানের অংশ হিসেবে ইসরায়েল ইরানের পারমাণবিক কেন্দ্র, ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচি এবং সামরিক ঘাঁটিগুলিকে লক্ষ্যবস্তু করেছে। এই কার্যক্রমে ইরানের বহু উচ্চপদস্থ সামরিক কর্মকর্তা ও প্রধান পারমাণবিক বিজ্ঞানী নিহত হয়েছেন।

নেতানিয়াহুর প্রতিক্রিয়া – ‘আমরা বড় লক্ষ্য অর্জন করেছি’

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু এই আক্রমণকে একটি বড় সাফল্য বলে অভিহিত করেছেন। তিনি বলেছেন, “আমরা ইরানের পারমাণবিক অস্ত্র কর্মসূচির কেন্দ্রে আক্রমণ করেছি। নাতানজে ইরানের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কেন্দ্রকেও আমরা সফলভাবে লক্ষ্যবস্তু করেছি। এছাড়াও, আমরা ইরানি বোমা তৈরিতে জড়িত বিজ্ঞানীদেরও লক্ষ্যবস্তু করেছি।” নেতানিয়াহু আরও বলেছেন, ইরানের ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচির অনেক অংশ এই আক্রমণে ধ্বংস হয়ে গেছে। তিনি এটিকে ইসরায়েলের নিরাপত্তার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ বলে উল্লেখ করেছেন।

ডোনাল্ড ট্রাম্পের সতর্কবার্তার পর তীব্রতর হয়েছে কার্যক্রম

এই সামরিক আক্রমণের কয়েক ঘন্টা আগে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইরানকে কঠোর সতর্কবার্তা দিয়েছিলেন। ট্রাম্প বলেছিলেন, যদি ইরান আপোষ না করে তাহলে ধ্বংসযজ্ঞ অত্যন্ত ভয়াবহ হতে পারে। তিনি দাবি করেছিলেন ইসরায়েলের কাছে অত্যন্ত মারাত্মক অস্ত্র রয়েছে এবং সেগুলি ব্যবহার করতেও তারা পারদর্শী।

ইরানের প্রতিক্রিয়া – এখনও পর্যন্ত কোনও সরকারি বক্তব্য নেই

এখনও পর্যন্ত ইরান সরকারের পক্ষ থেকে এই সাম্প্রতিক আক্রমণের কোনও সরকারি প্রতিক্রিয়া জানা যায়নি। তবে, পূর্বের মতোই ইরানের পাল্টা আক্রমণের সম্ভাবনা অস্বীকার করা যায় না। অতীতে যখনই এই ধরণের আক্রমণ হয়েছে, ইরান সামরিক ও রাজনৈতিকভাবে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছে।

Leave a comment