ফোর্ট নক্সের গোপন সোনার ভান্ডার: ইলন মাস্কের পদক্ষেপে নতুন বিতর্ক
মার্কিন সরকারের স্বর্ণভান্ডার নিয়ে সম্প্রতি প্রকাশিত সন্দেহের পরিপ্রেক্ষিতে একটি নতুন বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। মার্কিন রাজনীতির বড় এক আলোচনা কেন্দ্র হয়ে দাঁড়িয়েছে ফোর্ট নক্সের সোনা মজুতের বিষয়টি। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ শিল্পপতি ইলন মাস্ক এখন সেই রহস্যের সমাধান করতে মাঠে নামছেন। যদিও এখনও সরকারিভাবে কোনো মন্তব্য আসেনি, কিন্তু এই ধনকুবের ইতোমধ্যেই ঘোষণা করেছেন যে, তিনি খুব শীঘ্রই ফোর্ট নক্সের স্বর্ণভান্ডার পরিদর্শনে যাবেন।
স্বর্ণভান্ডারের রহস্য: সরকারি সোনা মজুতের সত্যতা জানবেন মাস্ক?
ইলন মাস্কের এই পদক্ষেপ রাজনৈতিক মহলে নতুন চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে। তিনি ডিপার্টমেন্ট অফ গভর্নমেন্ট এফিসিয়েন্সি (ডিওজিই) এর প্রধান হিসেবে নির্বাচিত হয়ে ফোর্ট নক্সের সোনার ভল্ট পরিদর্শন করার পূর্ণ ক্ষমতা পেয়েছেন। মাস্ক তার এই বিশেষ ক্ষমতার ভিত্তিতে, গুঞ্জন উড়িয়ে দিয়ে স্বর্ণভান্ডারে প্রবেশ করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। সাম্প্রতিক সময়ে, বেশ কিছু রিপাবলিকান রাজনৈতিক নেতাও এই স্বর্ণভান্ডারের অবস্থা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। বিশেষ করে, ফোর্ট নক্সের সোনা ঠিকভাবে মজুত আছে কি না, সেই প্রশ্নে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন অনেকেই।
বিতর্কিত ফোর্ট নক্স: সোনার নিরাপত্তা ও তার বাজারমূল্য
ফোর্ট নক্সের সোনার নিরাপত্তা নিয়ে অতীতে বহু গল্প রচিত হয়েছে। ১৯৭৪ সালের পর এটি একমাত্র সময় যখন সাধারণ মানুষের প্রবেশাধিকার ছিল এই ঐতিহাসিক ভল্টে। বর্তমানে, মার্কিন সরকার একাধিক বার জানিয়েছে যে সোনার মজুত সঠিকভাবে রয়েছে, তবে তা নিয়ে জনগণের মধ্যে যে সন্দেহ রয়েছে, তা স্পষ্ট। এরই মধ্যে, টেক্সাসের রিপাবলিকান কংগ্রেস সদস্য রন পল এবং তাঁর পুত্র, সেনেটর র্যান্ড পল এই মজুত সোনার বিষয়ে গণতান্ত্রিকভাবে তদন্তের দাবি তুলেছেন। মাস্ক এইসব জল্পনার সঠিক উত্তর দিতে প্রস্তুত।
ফোর্ট নক্সের ঐতিহাসিক গুরুত্ব: সোনা ছাড়াও কি রয়েছে সেখানে?
ফোর্ট নক্স, যা ‘ইউনাইটেড স্টেটস বুলিয়ান ডিপোজিটরি’ নামেও পরিচিত, সেই অদৃশ্য দুর্গের ভল্টে যে শুধুমাত্র সোনা মজুত রয়েছে, তা নয়, এর মধ্যে রয়েছে কিছু ঐতিহাসিক মূল্যবান সম্পত্তিও। সোনা ছাড়াও সেখানে রাখা রয়েছে মার্কিন সংবিধান, স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র, প্রেসিডেন্ট আব্রাহাম লিঙ্কনের ঐতিহাসিক ভাষণ, এমনকি হাঙ্গেরির রাজা সেন্ট স্টিফেনের মুকুটও। এসব অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সামগ্রী এখানে নিরাপদে রাখা আছে। এর নিরাপত্তা ব্যবস্থা এতটাই কঠোর যে, সাধারণ মানুষের প্রবেশ প্রায় নিষিদ্ধ। তবে, ২০১৭ সালে মার্কিন ট্রেজ়ারি বিভাগের কর্মকর্তারা সেখানকার পরিদর্শন করেছিলেন, এবং এখন ইলন মাস্কের পরিদর্শন এই পরিস্থিতি আরও বেশি আলোচনায় আনার সম্ভাবনা রয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের নীতি থেকে সিনেমা অবধি: ফোর্ট নক্সের জনপ্রিয়তা
ফোর্ট নক্সের স্বর্ণভান্ডারের খ্যাতি শুধু বাস্তব জীবনেই নয়, চলচ্চিত্রেও প্রবলভাবে প্রভাবিত। ১৯৬৪ সালে মুক্তি পাওয়া জনপ্রিয় জেমস বন্ড চলচ্চিত্র ‘গোল্ডফিঙ্গার’ এর কাহিনী ছিল এই অদৃশ্য দুর্গের সোনা কেন্দ্রিক। এরপর থেকে ফোর্ট নক্সের দিকে সাধারণ মানুষের আগ্রহ বৃদ্ধি পায়। এই ঘটনা যেমন জনগণের কাছে কল্পনা এবং বাস্তবের মিশ্রণ, তেমনি সরকারের স্বর্ণভান্ডারের নিরাপত্তা নিয়েও নতুন প্রশ্ন তৈরি হয়েছে।
নতুন সংশয়: কি সঠিক? কি ভুল?
বর্তমানে মার্কিন টাঁকশাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে যে, ফোর্ট নক্সে থাকা সোনার বিশুদ্ধতা বারবার পরীক্ষা করা হয়েছে এবং তা অবিকৃত অবস্থায় রয়েছে। তবে মাস্কের আগমনের সঙ্গে আরও কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন উঠে এসেছে। সঠিক সোনার মজুত, ভল্টের নিরাপত্তা, এবং সরকারের গোপনীয়তা – এই সমস্ত বিষয় নিয়ে জনগণের কাছে আরও অনেক প্রশ্ন তৈরি হচ্ছে।