চীনে আন্তর্জাতিক যোগ দিবসের উদযাপন: ভারত-চীন সম্পর্কের নতুন মাত্রা

🎧 Listen in Audio
0:00

আন্তর্জাতিক যোগ দিবস ২০২৫-এর ১১তম বার্ষিকী উপলক্ষে বিশ্বব্যাপী যোগের প্রতি সচেতনতা এবং স্বাস্থ্যের বার্তা আবারও জোরালোভাবে তুলে ধরা হয়েছে। এবারের যোগ দিবসও বিশেষ ছিল, কারণ এর প্রতিধ্বনি চীন जैसा দেশেও গভীরভাবে শোনা গেছে।

শাংহাই: বিশ্বজুড়ে যোগের প্রতি বর্ধমান সচেতনতা এবং গ্রহণের গতি আবারও তখন গভীরতা পেয়েছে, যখন চীনের শাংহাই শহরে আন্তর্জাতিক যোগ দিবস ২০২৫ উৎসাহ ও গৌরবে পালিত হয়েছে। এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে ভারতের মহাব্যবসায় কেন্দ্র, যেখানে শুধুমাত্র চীনে বসবাসকারী ভারতীয় সম্প্রদায়ই অংশগ্রহণ করেনি, বরং অনেক দেশের প্রতিনিধি এবং চীনের নাগরিকরাও যোগের গুরুত্ব উপলব্ধি করার জন্য উপস্থিত ছিলেন।

প্রধানমন্ত্রী মোদীর উদ্যোগের বিশ্বব্যাপী প্রভাব

১১ বছর আগে ২০০৪ সালে যখন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে যোগ দিবসকে বিশ্বব্যাপী স্বীকৃতি দেওয়ার প্রস্তাব রেখেছিলেন, তখন হয়তো কেউ কল্পনাও করতে পারেনি যে আগামী বছরগুলিতে এটি ভারতের সাংস্কৃতিক কূটনীতির সবচেয়ে প্রভাবশালী অস্ত্র হয়ে উঠবে। আজ সেই স্বপ্ন বাস্তবায়িত হচ্ছে বলে মনে হচ্ছে এবং শাংহাইতে অনুষ্ঠিত অনুষ্ঠান তার জীবন্ত উদাহরণ হয়ে উঠেছে।

এই অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের আবাসিক সমন্বয়কারী সিদ্ধার্থ চট্টোপাধ্যায় যোগের প্রতি তাঁর গভীর আনুগত্য ও সমর্পণ ভাগ করে নিয়েছেন। তিনি বলেছেন, একজন যোগ সাধক হিসেবে আমি এর ক্ষমতা গভীরভাবে বুঝতে পারি। এটি কেবল স্বাস্থ্যের মাধ্যম নয়, বরং শান্তি ও পারস্পরিক সম্পর্কের ভিত্তিও। তিনি প্রধানমন্ত্রী মোদীর প্রশংসা করে বলেন যে তাঁর নেতৃত্ব যোগকে কেবল ভারতের সীমানা থেকে বাইরে নিয়ে যায়নি, বরং বিশ্বব্যাপী মঞ্চে এটিকে সম্মানজনক স্থান দিয়েছে।

পূর্ব চীনে অনেক স্থানে যোগ কর্মসূচী

শাংহাইতে অনুষ্ঠিত এই প্রধান অনুষ্ঠানের মাধ্যমে হাংঝো, উক্সি এবং সুঝো ইত্যাদি শহরে ইতোমধ্যে চলমান যোগ কর্মসূচীর ধারাবাহিকতার সমাপ্তি ঘটেছে। ভারতের মহাব্যবসায় দূত প্রতীক মাথুর তাঁর বক্তব্যে বলেছেন যে এই কর্মসূচী কেবল যোগের প্রতি সম্মান প্রদর্শনের মাধ্যম নয়, বরং এটি ভারত ও চীনের মধ্যে সাংস্কৃতিক সেতুকে আরও শক্তিশালী করে। তিনি বলেছেন, এই অনুষ্ঠানটি ভারতীয় প্রবাসী, আন্তর্জাতিক কোম্পানি এবং বৌদ্ধ মঠগুলির সহযোগিতায় সম্ভব হয়েছে, যা যোগের সর্বজনীন গ্রহণযোগ্যতার প্রতীক।

মহাব্যবসায় দূত মাথুর সম্প্রতি এয়ার ইন্ডিয়ার ফ্লাইট AI171 দুর্ঘটনায় নিহত ব্যক্তিদের প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলি জ্ঞাপন করে যোগের মানসিক শান্তি প্রদানকারী ক্ষমতা স্মরণ করেছেন। তিনি বলেছেন, "এই ধরণের দুর্ঘটনায় যোগ আভ্যন্তরীণ শক্তি এবং মানসিক স্থিরতার সবচেয়ে বড় মাধ্যম হয়ে ওঠে।"

সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং আলোচনা সत्रের আয়োজন

এই যোগ অনুষ্ঠানে কেবল যোগাভ্যাসই হয়নি, বরং আলোচনা সत्र এবং সাংস্কৃতিক উপস্থাপনারও আয়োজন করা হয়েছে। এতে চীনে যোগের প্রচার-প্রসারের সাথে জড়িত অনেক সংগঠন ও বিশেষজ্ঞ অংশগ্রহণ করেছেন। উপস্থিত ব্যক্তিরা এটা উপলব্ধি করার সুযোগ পেয়েছেন যে যোগ কেবলমাত্র ব্যায়াম নয়, বরং একটি সমগ্র জীবনধারা যা ভারত শতাব্দী ধরে ধারণ করে এসেছে।

এই অনুষ্ঠানকে বিশেষ করে তোলে এমন তথ্য হল যে এটি ভারত-চীন কূটনৈতিক সম্পর্কের ৭৫ বছর পূর্ণ হওয়ার উপলক্ষে অনুষ্ঠিত হয়েছে। এই প্রসঙ্গে মহাব্যবসায় দূত বলেছেন যে যোগ এমন একটি মাধ্যম যা উভয় দেশের মধ্যে সমন্বয়, স্বাস্থ্য এবং পারস্পরিক সহযোগিতা বৃদ্ধি করতে পারে।

Leave a comment