বিমস্টেক শীর্ষ সম্মেলনে মোদী-ইউনুস বৈঠকের সম্ভাবনা

🎧 Listen in Audio
0:00

চলমান রাজনৈতিক উত্তেজনার মধ্যে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে, এপ্রিলে ব্যাংককে অনুষ্ঠিত হতে চলা বিমস্টেক (BIMSTEC) শীর্ষ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রধান মোহাম্মদ ইউনুসের মধ্যে বৈঠকের সম্ভাবনা বৃদ্ধি পেয়েছে। যদি এই বৈঠক হয়, তাহলে এটি উভয় দেশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হবে, কারণ শেখ হাসিনার ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর থেকে ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের মধ্যে টানাপড়েন দেখা দিয়েছে।

শেখ হাসিনার ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর কেন উত্তেজনা বেড়েছে

বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারতের সাথে সর্বদা ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল। কিন্তু সাম্প্রতিককালে বাংলাদেশে সत्ता পরিবর্তনের পর মোহাম্মদ ইউনুসকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নেতৃত্ব দেওয়া হয়েছে, যার ফলে ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কে অনিশ্চয়তার সৃষ্টি হয়েছে। 
বাংলাদেশে সत्ता পরিবর্তনের পর সংখ্যালঘুদের উপর বর্ধিত হামলা, রাজনৈতিক সহিংসতা এবং কট্টরপন্থী সংগঠনের ক্রমবর্ধমান প্রভাব নিয়ে ভারত উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। ভারতের মতে, হাসিনার আমলে ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক শক্তিশালী ছিল, কিন্তু এখন পরিস্থিতি পরিবর্তন হতে পারে।

BIMSTEC: সাত দেশের শক্তিশালী সংগঠন

BIMSTEC (Bay of Bengal Initiative for Multi-Sectoral Technical and Economic Cooperation) বঙ্গোপসাগর অঞ্চলে অবস্থিত সাতটি দেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ সংগঠন, যা অর্থনৈতিক, প্রযুক্তিগত এবং নিরাপত্তা সহযোগিতা বৃদ্ধি করার জন্য কাজ করে। এই গোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্ত রয়েছে ভারত, বাংলাদেশ, ভুটান, মিয়ানমার, নেপাল, শ্রীলঙ্কা এবং থাইল্যান্ড। BIMSTEC-এর শেষ শীর্ষ সম্মেলন ৩০শে মার্চ, ২০২২ সালে শ্রীলঙ্কার রাজধানী কলম্বোতে ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠিত হয়েছিল।

BIMSTEC শীর্ষ সম্মেলন ২০২৫: ব্যাংককে গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক

এই বছর এপ্রিল ২০২৫ সালে থাইল্যান্ডের ব্যাংককে BIMSTEC শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হতে চলেছে, যেখানে সদস্য দেশগুলি অর্থনৈতিক সহযোগিতা, আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা এবং নিরাপত্তা সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলোচনা করবে। এইবার বাংলাদেশকে বিমস্টেকের নতুন চেয়ারম্যান করা হবে, যার ফলে সংগঠনে তার ভূমিকা আরও বৃদ্ধি পাবে।

গত বছর আগস্টে বাংলাদেশে অভ্যুত্থানের পর থেকেই পরিস্থিতি উত্তেজনাপূর্ণ রয়েছে। সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচারের পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দল 'আওয়ামী লীগ'-এর নেতা ও কর্মীদের উপর ক্রমাগত হামলা চালানো হচ্ছে। এই পরিস্থিতি নিয়ে আগস্ট থেকেই ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে উচ্চ-স্তরের আলোচনা চলছে।

ভারতীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস. জয়শঙ্কর এখন পর্যন্ত বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেনের সাথে দুইবার সাক্ষাৎ করেছেন। এছাড়াও, পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিস্রী ডিসেম্বর ২০২৪ সালে ঢাকা সফরে গিয়েছিলেন, যেখানে তিনি বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করেছিলেন। এই সফরের সময় মিস্রী নোবেল বিজয়ী মোহাম্মদ ইউনুসের সাথেও সাক্ষাৎ করেছিলেন।

ভারতের এই কূটনৈতিক প্রচেষ্টা স্পষ্টভাবে দেখাচ্ছে যে, বাংলাদেশে স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনার এবং তার প্রতিবেশী দেশের সাথে সম্পর্ক সুষম রাখার জন্য তিনি ক্রমাগত প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।

Leave a comment