ব্রিটেনের রয়্যাল এয়ার ফোর্স ঘাঁটিতে ফিলিস্তিন সমর্থকদের ভাঙচুর: দুটি বিমান ক্ষতিগ্রস্ত

ব্রিটেনের রয়্যাল এয়ার ফোর্স ঘাঁটিতে ফিলিস্তিন সমর্থকদের ভাঙচুর: দুটি বিমান ক্ষতিগ্রস্ত
সর্বশেষ আপডেট: 21-06-2025

ব্রিটেনে ফিলিস্তিন সমর্থকদের এক বিশাল বিক্ষোভ উত্তাল আকার ধারণ করেছে। ‘ফিলিস্তিন অ্যাকশন’ নামক একটি প্রচারণা গোষ্ঠীর দুই কর্মী সেন্ট্রাল ইংল্যান্ডের রয়্যাল এয়ার ফোর্স (RAF) ঘাঁটি, বিশেষ করে ব্রাইজ নর্টন ঘাঁটি, অক্সফোর্ডশায়ারে অবৈধভাবে প্রবেশ করে দুটি বিমান ক্ষতিগ্রস্ত করেছে।

লন্ডন: ব্রিটেনে ফিলিস্তিন সমর্থক অ্যাকশন গ্রুপ ‘ফিলিস্তিন অ্যাকশন’ কর্তৃক শুক্রবার রয়্যাল এয়ার ফোর্স (RAF) -এর একটি গুরুত্বপূর্ণ সামরিক ঘাঁটিতে সংঘটিত ভাঙচুরের ঘটনা দেশ জুড়ে নিরাপত্তা ও বৈদেশিক নীতি নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি করেছে। অক্সফোর্ডশায়ারের ব্রাইজ নর্টন এয়ারবেসে দুই কর্মী অনুপ্রবেশ করে RAF-এর দুটি বিমানে লাল রঙ ছিটিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত করে। ঘটনার উদ্দেশ্য ছিল ইসরাইলকে ব্রিটিশ সামরিক সহায়তা প্রদানের বিরুদ্ধে প্রতীকী আক্রমণ।

বিমানের ইঞ্জিনে ছিটানো লাল রঙ

‘ফিলিস্তিন অ্যাকশন’ নামক সংগঠন ঘটনার দায় স্বীকার করে জানিয়েছে, তাদের সদস্যরা বিশেষ করে RAF ভয়েজার বিমানকে লক্ষ্য করেছিল, যা এয়ার-টু-এয়ার রিফুয়েলিং (উড়ন্ত অবস্থায় জ্বালানী ভর্তি) এর জন্য ব্যবহৃত হয়। সংগঠনের দাবি, ব্রিটেন গাজা অঞ্চলে ইসরাইলি যুদ্ধবিমানকে সহায়তা করার জন্য এই বিমান ব্যবহার করছে।

বিক্ষোভ স্বরূপ, কর্মীরা ইঞ্জিন এবং বিমানের অন্যান্য অংশে লাল রঙ ছিটিয়েছে, যার ফলে বিমানের কার্যক্ষমতা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ঘটনার পর RAF দ্রুত বিমানটি বন্ধ করে দিয়েছে এবং পুরো এয়ারবেসকে সতর্ক অবস্থায় রাখা হয়েছে।

সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল ভিডিও

ফিলিস্তিন অ্যাকশন গ্রুপ ঘটনার ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম ‘এক্স’ (পূর্বে টুইটার) -এ পোস্ট করে বলেছে, ব্রিটেন সরকার ইসরাইলি আগ্রাসনের প্রকাশ্যে সমালোচনা করে, কিন্তু গোপনে গাজায় মানবাধিকার লঙ্ঘনে অংশীদার হয়ে রয়েছে। ভিডিওতে বিক্ষোভকারীদের এয়ারবেসের বেড়া পার হয়ে বিমানে রঙ ছিটিয়ে দেওয়া এবং রানওয়েতে ফিলিস্তিনের পতাকা উত্তোলন করা দেখা যাচ্ছে।

ব্রিটেনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এই অবৈধ অনুপ্রবেশ ও ভাঙচুরের তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলেছে, আমাদের সশস্ত্র বাহিনী দেশের রক্ষার জন্য প্রতিদিন কঠিন পরিস্থিতিতে কাজ করে। এ ধরনের কর্মকাণ্ড না শুধুমাত্র তাদের মনোবলের উপর প্রভাব ফেলে, বরং জাতীয় নিরাপত্তার জন্যও হুমকি। মন্ত্রণালয় আরও স্পষ্ট করেছে যে, তারা স্থানীয় পুলিশের সাথে মিলে ঘটনার তদন্ত করছে এবং দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

কীভাবে এয়ারবেসে প্রবেশ করল বিক্ষোভকারীরা?

পুলিশের মতে, এটি তদন্তের প্রধান বিষয় যে, কর্মীরা এত কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থার মধ্য দিয়ে কীভাবে এয়ারবেসের ভিতরে প্রবেশ করল। প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, বিক্ষোভকারীরা ঘন গাছপালা ও অন্ধকারের সুযোগে রাতের বেলায় এয়ারবেসের বেড়া পাড়ি দিয়েছে। পুলিশ অপরাধমূলক ক্ষতি ও সংরক্ষিত এলাকায় অবৈধ অনুপ্রবেশের অভিযোগে মামলা দায়ের করেছে।

‘ফিলিস্তিন অ্যাকশন’ কোন নতুন সংগঠন নয়। এই গ্রুপ ২০২০ সাল থেকে সক্রিয় এবং ব্রিটেনে অবস্থিত ইসরাইলি অস্ত্র নির্মাতা সংস্থা যেমন এলবিট সিস্টেমের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করে আসছে। তাদের প্রচারণায় কারখানা বন্ধ করা, রানওয়েতে রঙ ছিটানো এবং সরকারি ভবনে বিক্ষোভ প্রদর্শন করা অন্তর্ভুক্ত।

Leave a comment