২০২৫ সালের সেপ্টেম্বর থেকে উত্তরাখণ্ডে নতুন করে বাঘের গণনা শুরু হবে। এনটিসিএকে ক্যামেরা ট্র্যাপ এবং মোবাইল ডেটা জমা দেওয়া হয়েছে। গত গণনায় ৫৬০টি বাঘ ছিল, এবার সংখ্যা বৃদ্ধির সম্ভাবনা রয়েছে।
Uttarakhand Tiger Census: উত্তরাখণ্ডে আবারও বাঘের সংখ্যা বৃদ্ধির সম্ভাবনা প্রকাশিত হয়েছে। ২০২৫ সালের সেপ্টেম্বর থেকে রাজ্যসহ দেশের ১৮টি বাঘপ্রধান রাজ্যে সারা ভারতীয় বাঘ গণনার প্রক্রিয়া শুরু হতে চলেছে। এর জন্য প্রস্তুতিও জোরদারভাবে শুরু হয়ে গেছে। ন্যাশনাল টাইগার কনজারভেশন অথরিটি (এনটিসিএ) এর পক্ষ থেকে নির্দেশ জারি করে সকল রাজ্য থেকে প্রয়োজনীয় তথ্য ও সংবাদ চাওয়া হয়েছে। উত্তরাখণ্ড সময়মতো ক্যামেরা ট্র্যাপ এবং মোবাইল সংক্রান্ত ডেটা এনটিসিএকে পাঠিয়ে দিয়েছে।
৫৬০টি বাঘ নিয়ে তৃতীয় স্থানে উত্তরাখণ্ড
গত গণনা ২০২২ সালে হয়েছিল, যেখানে সারা দেশে বাঘের সংখ্যা ৩,৬৮২টি রেকর্ড করা হয়েছিল। এই সংখ্যায় মধ্যপ্রদেশ সর্বোচ্চ ছিল, যেখানে মোট ৭৮৫টি বাঘ পাওয়া গেছে। এরপর কর্ণাটকে ৫৬৩টি এবং উত্তরাখণ্ডে ৫৬০টি বাঘের উপস্থিতি রেকর্ড করা হয়েছিল। এই রাজ্য তৃতীয় স্থানে ছিল। আশা করা হচ্ছে, এবারের গণনায় উত্তরাখণ্ডে বাঘের সংখ্যা আরও বৃদ্ধি পাবে।
কর্বেট টাইগার রিজার্ভ দেশে প্রথম
উত্তরাখণ্ডের করবেট টাইগার রিজার্ভ বাঘের মোট সংখ্যার দিক থেকে দেশের সকল ৫৩টি টাইগার রিজার্ভের মধ্যে সর্বোচ্চ। ২০২২ সালের রিপোর্ট অনুসারে, এখানে মোট ২৬০টি বাঘ পাওয়া গেছে। রাজ্যে রাজাজী টাইগার রিজার্ভসহ মোট ১২টি বন বিভাগে বাঘের উপস্থিতি পাওয়া গেছে। এই বাঘের সংখ্যা ২০০৬ সাল থেকে ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে।
ক্যামেরা ট্র্যাপ এবং মোবাইল ডেটা এনটিসিএকে জমা দেওয়া হয়েছে
বাঘের গণনার প্রক্রিয়া এবারও অত্যাধুনিক প্রযুক্তির উপর ভিত্তি করে হবে। এর জন্য এনটিসিএ সকল রাজ্য থেকে টাইগার রিজার্ভে স্থাপিত ক্যামেরা ট্র্যাপ এবং গণনায় ব্যবহৃত মোবাইল ফোনের তথ্য চেয়েছিল। উত্তরাখণ্ড সময়মতো এই তথ্য পাঠিয়ে দিয়েছে। পাশাপাশি রাজ্য পর্যায়ে বাঘ গণনার জন্য নোডাল কর্মকর্তাও নিয়োগ করা হয়েছে।
রাজ্যের প্রধান বন্যপ্রাণী পালক আর.কে. মিশ্র জানিয়েছেন, এপিসিএফ বিবেক পাণ্ডেকে এবার বাঘ গণনার নোডাল কর্মকর্তা নিযুক্ত করা হয়েছে। এখন এনটিসিএ থেকে প্রোটোকল পাওয়ার সাথে সাথে ফিল্ড স্টাফকে প্রশিক্ষণ দেওয়া, নতুন ক্যামেরা ট্র্যাপ স্থাপন এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার কাজ শুরু হয়ে যাবে।
বাঘের সংখ্যা বৃদ্ধি, সুরক্ষা এবং সংঘর্ষ একটি বড় চ্যালেঞ্জ
বাঘের সংখ্যা বৃদ্ধি রাজ্যের বন্যপ্রাণী সংরক্ষণের প্রচেষ্টার সাফল্যকে প্রতিফলিত করে, কিন্তু এর সাথে সাথে নতুন চ্যালেঞ্জও সৃষ্টি হচ্ছে। সবচেয়ে বড় উদ্বেগ বাঘের সুরক্ষা নিয়ে। পাশাপাশি, মানুষ ও বন্যপ্রাণীর মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনাও বৃদ্ধি পাচ্ছে, বিশেষ করে করবেট টাইগার রিজার্ভের আশপাশের গ্রামীণ এলাকায়। অনেকবার বাঘের আক্রমণের খবর सामने এসেছে, যার ফলে স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্কের পরিবেশ বিরাজ করছে।
উচ্চ হিমালয় অঞ্চল পর্যন্ত বাঘের বিস্তার
উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, উত্তরাখণ্ডে এখন বাঘের সংখ্যা শুধুমাত্র ঐতিহ্যগত এলাকায় সীমাবদ্ধ নেই। সাম্প্রতিক বছরগুলিতে ক্যামেরা ট্র্যাপের মাধ্যমে উচ্চ হিমালয় অঞ্চলেও বাঘের উপস্থিতি ধরা পড়েছে। এটা ইঙ্গিত করে যে, বাঘ এখন তাদের ঐতিহ্যগত আবাসস্থল থেকে বেরিয়ে নতুন এলাকায়ও তাদের উপস্থিতি জানাচ্ছে। এই পরিবর্তন জলবায়ু, বনানীর অবস্থা এবং শিকারের উপলব্ধতা ইত্যাদি অনেক কারণের সাথে যুক্ত হতে পারে।
গণনার সাথে জড়িত পরবর্তী প্রস্তুতি
এনটিসিএ থেকে প্রোটোকল পাওয়ার পর, রাজ্য পর্যায়ে গণনা কর্মীদের প্রশিক্ষণ শুরু হবে। তাদের জানানো হবে কীভাবে ক্যামেরা ট্র্যাপ সেট করতে হয়, মোবাইল থেকে ডেটা কীভাবে সংগ্রহ করতে হয় এবং কীভাবে সম্পূর্ণ গণনা অভিযান সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে হয়। বাঘের এই গণনা রাজ্যের প্রতিটি এমন এলাকায় করা হবে যেখানে বাঘের সম্ভাব্য উপস্থিতি মনে করা হয়।