সুপ্রিম কোর্টে ওয়াকফ আইন ২০২৫-এর ভবিষ্যৎ: প্রাক্তন CJI-এর উদ্বেগ ও নতুন CJI-এর ভূমিকা

🎧 Listen in Audio
0:00

প্রাক্তন CJI সঞ্জীব খন্না বলেছিলেন যে সাধারণত এই পর্যায়ে আইনের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয় না, যতক্ষণ না কোনও অস্বাভাবিক পরিস্থিতি দেখা দেয়। 'ওয়াকফ-বাই-ইউজার'-কে অঘোষিত রাখার ফলে গুরুতর পরিণতি হতে পারে, এটি একটি ব্যতিক্রম।

ওয়াকফ বিল: ওয়াকফ (সংশোধন) আইন ২০২৫-এর বৈধতা নিয়ে আজ আবার সুপ্রিম কোর্টে শুনানি হবে। নতুন প্রধান বিচারপতি (CJI) বি. আর. গাওয়াই এবং বিচারপতি অগাস্টিন জর্জ মশীহের বেঞ্চ এই মামলার শুনানি করবে।

ওয়াকফ আইন ২০২৫ নিয়ে কেন এত হইচই?

ওয়াকফ (সংশোধন) আইন ২০২৫-এ ‘ওয়াকফ-বাই-ইউজার’ (Waqf by User) ধারণাটি বাদ দেওয়া হয়েছে। এগুলি হল সেই সম্পত্তি, যেগুলি দীর্ঘদিন ধরে মুসলিম ধর্মীয় কাজে ব্যবহৃত হচ্ছে, যদিও সেগুলি নিবন্ধিত নয়।

যদি এই ধারণাটি বাদ দেওয়া হয়, তাহলে অনেক ওয়াকফ সম্পত্তির বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে পারে। এই কারণেই আইনের বিরুদ্ধে রিট দায়ের করা হয়েছে এবং মামলা সুপ্রিম কোর্টে পৌঁছেছে।

প্রাক্তন CJI সঞ্জীব খন্নার গুরুত্বপূর্ণ মন্তব্য

প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খন্নার নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ ১৭ এপ্রিল এই মামলার শুনানি করেছিল। তিনি বলেছিলেন, "সাধারণত এই পর্যায়ে আইনের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয় না, যতক্ষণ না অস্বাভাবিক পরিস্থিতি দেখা দেয়। এই মামলাটি ব্যতিক্রমের মতো। যদি 'ওয়াকফ-বাই-ইউজার'-কে অঘোষিত করা হয় তাহলে এর গুরুতর পরিণতি হতে পারে।"

বিচারপতি পি. ভি. সঞ্জয় কুমার এবং কে. ভি. বিশ্বনাথনও সেই বেঞ্চের অংশ ছিলেন।

নতুন CJI গাওয়াইয়ের নেতৃত্বে শুনানি

এখন এই মামলার শুনানি করবেন CJI বি. আর. গাওয়াই। এটি তাঁর প্রথম বড় সংবিধান সংক্রান্ত মামলা। বিচারপতি গাওয়াইয়ের বিচার বিভাগীয় অভিজ্ঞতা বেশ দীর্ঘ এবং তিনি বিভিন্ন সংবিধান সংক্রান্ত, ফৌজদারি, দিবানি এবং পরিবেশ আইনে দক্ষ।

কোন ব্যক্তি বিচারপতি বি. আর. গাওয়াই?

জন্ম: ২৪ নভেম্বর ১৯৬০, আমরাওয়তি, মহারাষ্ট্র

আইনজীবী হিসেবে কাজ শুরু: ১৯৮৫

বোম্বে হাইকোর্টে স্বাধীন অভ্যাস: ১৯৮৭-১৯৯০

বোম্বে হাইকোর্টে স্থায়ী আইনজীবী ও জনপ্রতিনিধি

বোম্বে হাইকোর্টের অতিরিক্ত বিচারপতি: ২০০৩

সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি: ২০১৯

সংবিধান পীঠে অনেক গুরুত্বপূর্ণ রায়ের অংশ

গত ৬ বছরে তিনি প্রায় ৭০০ বেঞ্চে কাজ করেছেন এবং ৩০০-র বেশি রায় লিখেছেন, যার মধ্যে নাগরিক অধিকার এবং আইনের শাসন সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ রায় অন্তর্ভুক্ত।

ওয়াকফ মামলায় আর কী হতে পারে?

সুপ্রিম কোর্ট সিদ্ধান্ত নেবে ওয়াকফ (সংশোধন) আইন ২০২৫-এর ‘ওয়াকফ-বাই-ইউজার’ ধারার উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হবে কি না। এছাড়াও, ওয়াকফ বোর্ডে অ-মুসলিম প্রতিনিধিত্ব এবং কালেক্টরকে প্রদত্ত ক্ষমতার বৈধতাও চ্যালেঞ্জের মুখে।

যদি আদালত এই আইনের ধারাগুলির উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে, তাহলে এটি সমগ্র দেশে ওয়াকফ সম্পত্তির উপর ব্যাপক প্রভাব ফেলবে। অন্যদিকে, নিষেধাজ্ঞা না আরোপ করলে অনেক পুরানো ওয়াকফ দাবীর অবস্থা পরিবর্তিত হতে পারে।

ওয়াকফ সম্পত্তিকে কেন্দ্র করে অনেক রাজ্যে ইতিমধ্যেই বিবাদ চলে আসছে। এই আইন সংক্রান্ত রায় সাধারণ মানুষ, প্রতিষ্ঠান এবং প্রশাসনিক কার্যপ্রণালীর উপর সরাসরি প্রভাব ফেলবে। এই কারণেই আজকের শুনানি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।

Leave a comment