প্রধানমন্ত্রী মোদীর সাথে ‘অপারেশন সিন্দুর’ প্রতিনিধি দলের সাক্ষাৎ

🎧 Listen in Audio
0:00

প্রধানমন্ত্রী মোদী আজ সন্ধ্যা ৭:৩০ টায় অপারেশন সিন্দুরের প্রতিনিধি দলের সাথে সাক্ষাৎ করবেন। কোভিড পরীক্ষা বাধ্যতামূলক। সাংসদরা পাকিস্তানের সন্ত্রাসবাদ সম্পর্কে ভারতের অবস্থানের ফিডব্যাক দেবেন।

প্রধানমন্ত্রী মোদী: প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী আজ সন্ধ্যায় তাঁর সরকারি বাসভবন, ৭ লোক কল্যাণ মার্গ, দিল্লিতে অপারেশন সিন্দুরের জন্য বিদেশে যাওয়া সর্বদলীয় প্রতিনিধি দলের সাথে সাক্ষাৎ করবেন। এই সভা মঙ্গলবার, ১০ জুন ২০২৫, সন্ধ্যা ৭:৩০ টায় অনুষ্ঠিত হবে। বিশেষত্ব হল, সকল প্রতিনিধি দলের সদস্যদের সভায় যোগদানের আগে কোভিড-১৯ পরীক্ষা করাতে হবে। এটি নিরাপত্তার জন্য নেওয়া একটি পদক্ষেপ। এই সাক্ষাৎে সাংসদরা তাদের বিদেশ সফরের অভিজ্ঞতা এবং বিশ্বের প্রতিক্রিয়া প্রধানমন্ত্রীর সাথে ভাগ করে নেবেন। পাশাপাশি, প্রধানমন্ত্রী সকল সাংসদের জন্য ডিনারের আয়োজনও করবেন।

অপারেশন সিন্দুর: কি এই অভিযান?

অপারেশন সিন্দুর হল ভারতের সেই সামরিক অভিযানের নাম, যা ৭ মে ২০২৫ তারিখে শুরু হয়েছিল। এই অভিযান জম্মু ও কাশ্মীরের পাহালগামে ২২ এপ্রিল সংঘটিত সন্ত্রাসবাদী হামলার প্রতিক্রিয়া হিসেবে গ্রহণ করা হয়েছিল, যেখানে ২৬ জন নিহত হয়েছিল। ভারতীয় সেনা পাকিস্তান এবং পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীর (পিওকে)-তে সন্ত্রাসবাদী ঘাঁটিতে লক্ষ্যভেদী আঘাত হানে। এই অভিযানে জইশ-ই-মোহাম্মদ এবং লস্কর-ই-তৈয়বা-র মতো সন্ত্রাসবাদী সংগঠনের ১০০-এরও বেশি সন্ত্রাসী নিহত হয়েছিল।

এরপর ভারত বিশ্বের কাছে নিজের পক্ষ তুলে ধরার জন্য ৭ টি সর্বদলীয় প্রতিনিধি দলকে ৩৩ টি দেশে পাঠায়। তাদের উদ্দেশ্য ছিল পাকিস্তান প্রশ্রয়প্রাপ্ত সন্ত্রাসবাদকে উন্মোচন করা এবং ভারতের শূন্য সহনশীলতার নীতি সামনে তুলে ধরা।

কোভিড পরীক্ষা: কেন প্রয়োজন?

কোভিড-১৯-এর ক্রমবর্ধমান সংক্রমণের পরিপ্রেক্ষিতে সরকার কোনো ঝুঁকি নিতে চায় না। সূত্র মতে, সকল প্রতিনিধি দলের সদস্যদের সভায় যোগদানের আগে কোভিড পরীক্ষা করানো বাধ্যতামূলক। এই সিদ্ধান্ত প্রধানমন্ত্রী ও সাংসদদের নিরাপত্তার দিকে লক্ষ্য করে নেওয়া হয়েছে। সম্প্রতি ভারতে কোভিডের ১,১৩৪ টি নতুন কেস রেকর্ড করা হয়েছে এবং সক্রিয় কেস ৭,০২৬-এ পৌঁছেছে। তাই এই পদক্ষেপ প্রয়োজনীয়।

প্রতিনিধি দলের নেতারা কারা?

৭ টি প্রতিনিধি দলকে ৭ জন প্রধান সাংসদ নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। তাদের মধ্যে রয়েছেন:

শশী থারুর (কংগ্রেস): আমেরিকা গিয়ে ভারতের পক্ষ দৃঢ়ভাবে তুলে ধরেছিলেন।

রবিশঙ্কর প্রসাদ এবং বৈজয়ন্ত পাণ্ডা (বিজেপি): সৌদি আরব, কুয়েত, বাহরাইন এবং আলজেরিয়ার মতো দেশগুলিতে গিয়েছিলেন।

সংজয় কুমার ঝা (জেডিইউ): বিদেশে ভারতের নীতির সমর্থন সংগ্রহ করেছিলেন।

কনিমোঝি করুণানিধি (ডিএমকে), সুপ্রিয়া সুলে (এনসিপি-এসপি), এবং শ্রীকান্ত শিন্ডে (শিবসেনা): বিভিন্ন দেশে ভারতের বার্তা পৌঁছে দিয়েছিলেন।

এদের ছাড়াও, তৃণমূল কংগ্রেসের অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, জেএমএম-এর সরফরাজ আহমেদ, তেলেগু দেশম পার্টির গন্টি হরিশ এবং বিজেপির তেজস্বী সূর্য্যের মতো সাংসদরাও ছিলেন। মোট ৫৯ জন সদস্য, যার মধ্যে ৫০ জনেরও বেশি বর্তমান সাংসদ এবং কিছু প্রাক্তন রাষ্ট্রদূত এই অভিযানে অংশগ্রহণ করেছিলেন।

সভায় কি হবে?

আজকের সভায় সাংসদরা তাদের বিদেশ সফরের সম্পূর্ণ বিবরণ প্রধানমন্ত্রী মোদীর সামনে তুলে ধরবেন। তারা বলবেন যে বিশ্বের দেশগুলি কীভাবে ভারতের অবস্থানের সমর্থন করেছে। উদাহরণস্বরূপ, সৌদি আরব সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ভারতের সাথে একাত্মতা প্রকাশ করেছে, অন্যদিকে ইতালি দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা বৃদ্ধির প্রস্তাব রেখেছে। ফ্রান্স এবং দক্ষিণ আফ্রিকাও ভারতের শূন্য সহনশীলতার নীতির প্রশংসা করেছে।

শশী থারুরের নেতৃত্বাধীন প্রতিনিধি দল আজ দুপুর ২:৪৫ টায় দিল্লিতে ফিরে এসেছে। তারা নতুন তথ্যসহ তাদের প্রতিবেদন প্রধানমন্ত্রীকে জমা দেবেন। বৈজয়ন্ত পাণ্ডার দলও বিদেশমন্ত্রী এস. জয়শঙ্করের সাথে সাক্ষাৎ করেছে।

Leave a comment