মোদী ‘অপারেশন সিন্দুর’-এর জন্য সশস্ত্র বাহিনীর প্রশংসা

🎧 Listen in Audio
0:00

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বুধবার ‘অপারেশন সিন্দুর’ -এর জন্য ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনীর প্রশংসা করেছেন। এই অপারেশনের অধীনে ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনী গভীর রাতে পাকিস্তান এবং পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীরে অবস্থিত সন্ত্রাসবাদী ঘাঁটিগুলিতে হামলা চালিয়েছে।

নয়াদিল্লি: প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বুধবার ‘অপারেশন সিন্দুর’ -এর অধীনে ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনী কর্তৃক পরিচালিত সন্ত্রাসবাদবিরোধী হামলার প্রশংসা করেছেন। ভারতীয় সেনা ও বিমানবাহিনী পাকিস্তান এবং পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীর (PoK) -এ সন্ত্রাসবাদী ঘাঁটিগুলিতে হামলা চালিয়েছে। এই অপারেশনে নয়টি সন্ত্রাসবাদী ঘাঁটি সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী মোদী এই অপারেশনের পর ক্যাবিনেটের বৈঠকে সুরক্ষা বাহিনীর কার্যকলাপের প্রশংসা করেছেন এবং তাদের প্রশংসা করেছেন।

ক্যাবিনেটের বৈঠকে সুরক্ষা বাহিনীর প্রশংসা

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বুধবার কেন্দ্রীয় ক্যাবিনেটের বৈঠকের সভাপতিত্ব করেছেন, যেখানে প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং ‘অপারেশন সিন্দুর’ সম্পর্কে ক্যাবিনেটকে বিস্তারিত তথ্য দিয়েছেন। ক্যাবিনেটের সকল সদস্য অপারেশনের সাফল্যে মেজে থাপ্পড় মেরে সুরক্ষা বাহিনীর প্রচেষ্টার প্রশংসা করেছেন। এই উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন যে তাঁর সরকার সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে শূন্য সহনশীলতার নীতি অনুসরণ করছে এবং কোনও অবস্থাতেই সন্ত্রাসবাদীদের ক্ষমা করা হবে না।

সূত্রের খবর, প্রধানমন্ত্রী প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং এবং জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা (NSA) অজিত ডোভালের সাথেও একটি বিশেষ বৈঠক করেছেন, যেখানে তিনি বর্তমান পরিস্থিতির পর্যালোচনা করেছেন এবং ভবিষ্যৎ কৌশল নিয়ে আলোচনা করেছেন। প্রধানমন্ত্রী মোদীর এই বার্তা স্পষ্ট ছিল যে ভারত নিজের নিরাপত্তা নিয়ে সম্পূর্ণরূপে সচেতন এবং যে কোনও ধরণের সন্ত্রাসবাদী হামলা সহ্য করা হবে না।

অপারেশন সিন্দুর: সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে সিদ্ধান্তমূলক পদক্ষেপ

‘অপারেশন সিন্দুর’ -এর উদ্দেশ্য ছিল পাকিস্তান এবং পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীরে অবস্থিত সন্ত্রাসবাদী ঘাঁটিগুলিকে ধ্বংস করা। ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনী মঙ্গলবার ও বুধবার মধ্যরাতে এই অপারেশনটি সম্পন্ন করেছে। ভারতীয় সেনা ও বিমানবাহিনী ক্ষেপণাস্ত্রের মাধ্যমে বহু সন্ত্রাসবাদী ঘাঁটিতে হামলা চালিয়েছে, যার মধ্যে পাকিস্তানের বাহাওয়ালপুরে জইশ-ই-মোহাম্মদের ঘাঁটি এবং মুরিদকেতে লস্কর-ই-তৈয়বার ঘাঁটি অন্তর্ভুক্ত ছিল। এই অপারেশনের আগে, পালঘামে সংঘটিত সন্ত্রাসবাদী হামলার প্রতিশোধ নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল, যেখানে ২৬ জন বেসামরিক নাগরিক প্রাণ হারিয়েছিলেন।

সশস্ত্র বাহিনী পাকিস্তান এবং PoK-তে অবস্থিত সন্ত্রাসবাদী ঘাঁটিগুলিকে লক্ষ্য করে এমনভাবে হামলা চালিয়েছে যাতে সন্ত্রাসবাদী সংগঠন এবং তাদের ঘাঁটি সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস হয়। অপারেশনের সাফল্য নিয়ে সুরক্ষা বিশেষজ্ঞদের মতে, ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনী সম্পূর্ণ কৌশলটি অত্যন্ত নির্ভুলতা ও দ্রুততার সাথে বাস্তবায়ন করেছে, যার ফলে সন্ত্রাসবাদী সংগঠনগুলিকে বড় ধাক্কা লেগেছে।

পালঘাম হামলার প্রতিশোধ

এই অপারেশনটি পালঘামে সংঘটিত সন্ত্রাসবাদী হামলার প্রতিশোধ ছিল, যেখানে ২৬ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছিলেন। এই হামলার পর ভারত সরকার সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার প্রতিজ্ঞা করেছিল। প্রধানমন্ত্রী মোদী তখন সুরক্ষা বাহিনীকে নির্দেশ দিয়েছিলেন যে তারা এই হামলার প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য পুরোপুরি স্বাধীনভাবে সিদ্ধান্ত নিতে পারবে। এরপর ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনী ‘অপারেশন সিন্দুর’ -এর পরিকল্পনা করে এবং পাকিস্তানের সন্ত্রাসবাদী ঘাঁটিগুলিকে লক্ষ্য করে এই সফল হামলা চালিয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সর্বদা সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ভারতের শূন্য সহনশীলতার নীতিকে গুরুত্ব দিয়ে এসেছেন। তিনি বলেছেন যে ভারত তার নাগরিকদের নিরাপত্তা ও জাতীয় অখণ্ডতা রক্ষার জন্য কোনও ধরণের ত্যাগ থেকে পিছিয়ে থাকবে না। ‘অপারেশন সিন্দুর’ থেকে এটা স্পষ্ট হয়েছে যে ভারত যে কোনও ধরণের সন্ত্রাসবাদ নিয়ে গুরুতর এবং তা নির্মূল করার জন্য প্রতিটি পদক্ষেপ নিতে প্রস্তুত।

প্রধানমন্ত্রী তার বক্তব্যে আরও বলেছেন যে, আমাদের সুরক্ষা বাহিনী প্রমাণ করেছে যে ভারত কোনও সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপ কখনোই সহ্য করবে না। এই অপারেশনটি আবারও দেখিয়ে দিয়েছে যে ভারত তার নিজের রক্ষার জন্য যে কোনও সীমা পর্যন্ত যেতে পারে।

Leave a comment