১২ বছরের সম্পর্কের ঘটনায় লালু যাদবের বড় সিদ্ধান্ত: তেজপ্রতাপকে দল ও পরিবার থেকে বহিষ্কার

🎧 Listen in Audio
0:00

১২ বছরের সম্পর্কের খবর প্রকাশের পর লালুপ্রসাদ যাদবের বড় সিদ্ধান্ত, তেজপ্রতাপকে দল ও পরিবার থেকে বহিষ্কার! জেডিইউ-র তরফ থেকে তা নির্বাচনী নাটক বলে আখ্যায়িত।

বিহার রাজনীতি: বিহারের রাজনীতি আবারও উত্তাল। আরজেডি প্রধান লালু প্রসাদ যাদব তাঁর জ্যেষ্ঠ পুত্র তেজপ্রতাপ যাদবকে দল ও পরিবার থেকে বহিষ্কার করেছেন। কারণ হিসেবে তেজপ্রতাপের ১২ বছরের পুরোনো সম্পর্কের জনসমক্ষে প্রকাশ এবং এরপর সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া পোস্টকে দায়ী করা হচ্ছে। এই ঘটনাক্রম বিহারের রাজনীতিতে তীব্র আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। একদিকে এই সিদ্ধান্ত নিয়ে জেডিইউ লালু যাদবের উপর ব্যঙ্গ করেছে, অন্যদিকে তেজপ্রতাপের বোন রোহিণী আচার্য পিতার সিদ্ধান্তের সমর্থন করেছেন।

তেজপ্রতাপ যাদবের প্রকাশ্যে আসা তথ্যে তীব্র বিতর্ক

গত শনিবার তেজপ্রতাপ যাদব তাঁর সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্টে একটি পোস্ট করে বিহারের রাজনীতিতে ঝড় তুলেছিলেন। এই পোস্টে তিনি অনুষ্কা যাদবের সাথে ছবি শেয়ার করে দাবি করেছিলেন যে তারা ১২ বছর ধরে সম্পর্কে আছেন। এই পোস্টের পর প্রশ্ন উঠতে শুরু করে যে, যদি তারা এত বছর ধরে সম্পর্কে থাকে, তাহলে ২০১৮ সালে ঐশ্বর্য রায়ের সাথে বিয়ে কেন? কিছুক্ষণের মধ্যেই এই পোস্ট ডিলিট করে দেওয়া হয়, কিন্তু ততক্ষণে সোশ্যাল মিডিয়ায় তেজপ্রতাপ ও অনুষ্কার ছবি ভাইরাল হয়ে গিয়েছিল। তেজপ্রতাপ স্পষ্টীকরণ দিয়েছেন যে, তার অ্যাকাউন্ট হ্যাক হয়েছে এবং AI-জেনারেটেড ছবি ব্যবহার করা হয়েছে, কিন্তু ততক্ষণে ক্ষতি হয়ে গেছে।

তেজপ্রতাপকে দল ও পরিবার থেকে বহিষ্কার

তেজপ্রতাপের এই বিতর্কের পর আরজেডি সুপ্রিমো লালু যাদব কঠোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তিনি জনসম্মুখে ঘোষণা করেছেন যে তেজপ্রতাপ যাদবকে দল ও পরিবার থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। লালু যাদব বলেছেন, তেজপ্রতাপের অসচেতন আচরণ, জনসম্মুখে ব্যবহার এবং নৈতিক মূল্যবোধের অবহেলা দল ও পরিবারের ঐতিহ্যের বিরুদ্ধে। লালু স্পষ্ট করে বলেছেন, সামাজিক ন্যায়ের লড়াইকে দুর্বল করা যাবে না, তাই তেজপ্রতাপকে বহিষ্কার করা জরুরি ছিল।

জেডিইউ-র ব্যঙ্গ: ঐশ্বর্যের সাথে 'মহাপাপ'-এ লালু কেন চুপ ছিলেন?

লালু যাদবের এই সিদ্ধান্তের উপর জেডিইউ তীব্র আক্রমণ করেছে। জেডিইউ-র জাতীয় মুখপাত্র রাজীব রঞ্জন বলেছেন, "লালুজি নির্বাচনের আগে মানুষকে বিভ্রান্ত করছেন। ঐশ্বর্যের সাথে 'মহাপাপ' হওয়ার সময় তাঁর চেতনা কেন জেগে উঠেনি? এটি মাত্র একটি নাটক। নির্বাচন শেষ হলেই তেজপ্রতাপ আবার দলে ফিরে আসবেন।" জেডিইউ-র এই বক্তব্য বিহার বিধানসভা নির্বাচনের আগে রাজনৈতিক পরিবেশকে আরও উত্তপ্ত করে তুলেছে। দল এটিকে আরজেডি-র সুনামের উপর বড় প্রশ্ন হিসেবে দেখছে।

রোহিণী আচার্য পিতার সিদ্ধান্তের সমর্থন করেছেন

এই সমগ্র বিতর্কে তেজপ্রতাপ যাদবের বোন রোহিণী আচার্যও সামনে এসেছেন। তিনি পিতা লালু যাদবের সিদ্ধান্তের সমর্থন করে বলেছেন, "যারা পরিবারের মর্যাদা, ঐতিহ্য এবং লালন-পালনের সম্মান করে, তাদের উপর কখনো প্রশ্ন উঠে না। কিন্তু যারা নিজেরাই অমর্যাদিত আচরণ করে, তারা নিজেরাই সমালোচনার পাত্র হয়। বাবা আমাদের কাছে দেবতুল্য, পরিবার আমাদের মন্দির এবং সমাজে ন্যায়ের যে লড়াই বাবা করেছেন, তাই আমাদের পূজা। এই লড়াইয়ে কোনো আঘাত আসা আমরা মেনে নেব না।"

তেজপ্রতাপ যাদবের পক্ষ কী?

তেজপ্রতাপ যাদবের পক্ষ থেকে এখনও পর্যন্ত এই বিষয়ে কোনো স্পষ্ট বক্তব্য সামনে আসেনি। তিনি তাঁর পোস্ট ডিলিট করে দিয়ে বলেছেন যে তাঁর অ্যাকাউন্ট হ্যাক হয়েছে। কিন্তু তাঁর স্পষ্টীকরণে মানুষ সন্তুষ্ট নয়। সোশ্যাল মিডিয়ায় মানুষ প্রশ্ন তুলছে যে, যদি এটি সবই ভুয়া হয়, তাহলে পোস্ট কেন করা হয়েছিল? এবং কি তেজপ্রতাপ তাঁর স্পষ্টীকরণ দিয়ে দল ও পরিবারের আস্থা ফিরে পাবেন?

Leave a comment