ইউটিউবার জ্যোতি মলহোত্রা গোয়েন্দাগিরির মামলা: ওড়িশার ইউটিউবার প্রিয়ঙ্কা সেনাপতি জিজ্ঞাসাবাদ

🎧 Listen in Audio
0:00

হরিয়ানা পুলিশের দ্বারা গুরুতর গোয়েন্দাগিরির অভিযোগে গ্রেফতার ইউটিউবার জ্যোতি মলহোত্রার ঘটনা দ্রুত রাজনৈতিক ও আইনি আগ্রহ বৃদ্ধি করেছে। এখন এই তদন্ত ওড়িশা পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়েছে, যেখানে ইউটিউবার প্রিয়ঙ্কা সেনাপতির সাথে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে।

প্রিয়ঙ্কা সেনাপতি কে?

পাকিস্তানের জন্য গোয়েন্দাগিরির অভিযোগে হরিয়ানা পুলিশের দ্বারা গ্রেফতার ইউটিউবার জ্যোতি মলহোত্রার মামলার তদন্ত এখন ওড়িশা পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়েছে। এই তদন্তে জ্যোতির ঘনিষ্ঠ বন্ধু এবং ইউটিউবার প্রিয়ঙ্কা সেনাপতির নামও উঠে এসেছে। প্রিয়ঙ্কা সেনাপতি, যিনি পুরী, ওড়িশার বাসিন্দা এবং ভ্রমণ ভ্লগ তৈরি করেন, এই মামলায় পুলিশের তদন্তের আওতায় রয়েছেন। আসুন জেনে নেওয়া যাক এই পুরো ঘটনার আসল সত্যতা এবং তদন্তের বর্তমান অবস্থা।

প্রিয়ঙ্কা সেনাপতি কে?

প্রিয়ঙ্কা সেনাপতি পুরীর বাসিন্দা একজন ইউটিউবার, যিনি তার ভ্রমণ ভ্লগের জন্য জনপ্রিয়। তার ইউটিউব চ্যানেল 'Prii_vlogs'-এ প্রায় 14,600 সাবস্ক্রাইবার রয়েছে, যখন ইনস্টাগ্রামে তার 20,000-এর বেশি ফলোয়ার রয়েছে। প্রিয়ঙ্কা পাকিস্তানের কর্তারপুর করিডোর ভ্রমণের ভিডিওও তার চ্যানেলে শেয়ার করেছিলেন, যেখানে তিনি তার অভিজ্ঞতা ওড়িয়া ভাষায় তুলে ধরেছিলেন।

তদন্তের কেন্দ্রবিন্দুতে প্রিয়ঙ্কা কেন?

প্রিয়ঙ্কা সেনাপতির নাম তখন শিরোনামে আসে যখন হরিয়ানা পুলিশ ইউটিউবার জ্যোতি মলহোত্রাকে পাকিস্তানের জন্য গোয়েন্দাগিরির অভিযোগে গ্রেফতার করে। জ্যোতি ও প্রিয়ঙ্কার বন্ধুত্ব ইউটিউবের মাধ্যমে হয়েছিল, এবং উভয়ের একসাথে ভ্রমণের অনেক ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় পাওয়া যায়। পুলিশ সন্দেহ করে যে প্রিয়ঙ্কার মাধ্যমেও কিছু সন্দেহজনক যোগাযোগ হতে পারে।

প্রিয়ঙ্কা এই বিষয়ে তার পক্ষ থেকে বলেছেন যে তিনি জ্যোতির পাকিস্তান সম্পর্কিত কোনও সন্দেহজনক কার্যকলাপ সম্পর্কে অবগত ছিলেন না। তিনি স্পষ্ট করেছেন যে যদি তিনি জানতেন যে জ্যোতি গোয়েন্দাগিরিতে জড়িত, তাহলে তিনি তার সাথে যোগাযোগ রাখতেন না। তিনি তদন্তে পুরোপুরি সহযোগিতা করার আশ্বাসও দিয়েছেন।

জ্যোতি মলহোত্রার গ্রেফতারির বিবরণ

জ্যোতি মলহোত্রাকে ২০১৭ মে ২০২৪ সালে হরিয়ানা পুলিশ গ্রেফতার করে। তার উপর পাকিস্তানের জন্য গোয়েন্দাগিরি করার অভিযোগ আছে। বলা হচ্ছে যে জ্যোতি তিনবার পাকিস্তান গেছে এবং সে ভারতে অনেক সন্দেহজনক কার্যকলাপে জড়িত ছিল। বিশেষ করে, জ্যোতির কথিত যোগাযোগ ছিল দিল্লিতে পাকিস্তান হাই কমিশনে কর্মরত একজন পাকিস্তানি কর্মকর্তার সাথে, যাকে ভারত ২০২৪ সালের মে মাসে দেশ থেকে বহিষ্কার করেছিল।

জ্যোতির ইউটিউব চ্যানেলে ৩.৭৭ লক্ষ সাবস্ক্রাইবার এবং ইনস্টাগ্রামে ১.৩৩ লক্ষ ফলোয়ার আছে। সে সোশ্যাল মিডিয়ায় বেশ সক্রিয় ছিল এবং তার ভ্রমণ, বিশেষ করে ধর্মীয় এবং ঐতিহাসিক স্থান সম্পর্কে কন্টেন্ট তৈরি করত।

পুলিশের তদন্ত কী?

পুলিশ বর্তমানে পুরীতে জ্যোতির কার্যকলাপ এবং তার নেটওয়ার্কের গভীর তদন্ত করছে। জানার চেষ্টা করা হচ্ছে যে জ্যোতি কার কার সাথে যোগাযোগ করেছিল এবং তার দ্বারা কি কোনও সংবেদনশীল তথ্য পাকিস্তানে পাঠানো হয়েছিল। তদন্তের আওতায় প্রিয়ঙ্কা সেনাপতিরও যাচাই করা হচ্ছে যাতে জানা যায় তার জ্যোতির সাথে সম্পর্ক কতটা ছিল এবং সে কি এই মামলায় সম্পূর্ণ নির্দোষ।

ওড়িশার পুলিশ প্রধান এসপি পুরী বিনীত আগ্রওয়াল জানিয়েছেন যে তদন্ত এখনও চলছে এবং সমস্ত তথ্য সামনে আনা হবে। তারা সমস্ত সংশ্লিষ্ট সংস্থার সাথে যোগাযোগে আছে এবং সহযোগিতা অব্যাহত রাখবে।

প্রিয়ঙ্কার পরিবারের বক্তব্য

প্রিয়ঙ্কার বাবা মিডিয়ার সাথে কথা বলে জানিয়েছেন যে তিনি সম্প্রতি এই বিষয় সম্পর্কে জানতে পেরেছেন। তিনি বলেছেন যে প্রিয়ঙ্কা একজন ছাত্রী এবং ইউটিউবার, যিনি ভ্রমণ করতে পছন্দ করেন। তিনি স্পষ্ট করেছেন যে প্রিয়ঙ্কার পাকিস্তানের বিরুদ্ধে কোনও ধরণের কার্যকলাপের কোনও ধারণা ছিল না। তিনি আরও বলেছেন যে প্রিয়ঙ্কা কর্তারপুর যাওয়ার জন্য সব ডকুমেন্ট সঠিক ভাবে সংগ্রহ করেছিল এবং অন্য অনেক ইউটিউবারও সেখানে গেছে।

Leave a comment