প্রধান বিচারপতি বি আর গাওয়াই ইলাহাবাদ হাইকোর্টের এক অনুষ্ঠানে বলেছেন যে, মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ দেশের সবচেয়ে ক্ষমতাশালী ও কর্মঠ মুখ্যমন্ত্রী। তিনি আরও বলেছেন, ইলাহাবাদের ভূমি সর্বদা ক্ষমতাশালী ব্যক্তিদের ভূমি হয়েছে।
UP News: ভারতের প্রধান বিচারপতি (Chief Justice of India) বি আর গাওয়াই ইলাহাবাদ হাইকোর্টে অনুষ্ঠিত এক গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের প্রশংসা করে বলেছেন যে, তিনি কেবলমাত্র উত্তরপ্রদেশের নয়, সমগ্র দেশের সবচেয়ে ক্ষমতাশালী ও কর্মঠ মুখ্যমন্ত্রী। তিনি আরও বলেছেন যে, ইলাহাবাদ (প্রয়াগরাজ) -এর ভূমি সর্বদা ক্ষমতাশালী ও মহান ব্যক্তিত্বদের ভূমি হয়েছে। এই উপলক্ষে বিচারপতি গাওয়াই ভারতের সংবিধানের গুরুত্ব এবং দেশের ঐক্যের উপরও জোর দিয়েছেন।
ইলাহাবাদের ভূমি ক্ষমতাশালী ব্যক্তিদের ভূমি
অনুষ্ঠানে প্রধান বিচারপতি বি আর গাওয়াই জানিয়েছেন যে, সম্প্রতি আইন ও বিচারমন্ত্রী মেঘওয়ালও মুখ্যমন্ত্রী যোগীকে দেশের সবচেয়ে প্রভাবশালী ও পরিশ্রমী মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন। এর প্রতিক্রিয়ায় সিজেআই গাওয়াই বলেছেন যে, ইলাহাবাদের ভূমি সর্বদা ক্ষমতাশালী ব্যক্তিদের ভূমি হয়েছে, এবং তাই মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ ক্ষমতাশালী হওয়া স্বাভাবিক। এই বক্তব্য থেকে স্পষ্ট হয়েছে যে, ন্যায়পালিকাও রাজ্য নেতৃত্বের প্রশংসা করে, বিশেষ করে যারা তাদের কাজে দৃঢ় এবং সফল।
সংবিধানের ৭৫ বছরের যাত্রা
সিজেআই বি আর গাওয়াই ভারতের সংবিধানের ৭৫ বছরের যাত্রার কথাও উল্লেখ করেছেন। তিনি জানিয়েছেন যে, যখন সংবিধানের খসড়া সংবিধান সভার সামনে উপস্থাপিত হয়েছিল, তখন তাতে কিছু বিতর্ক ছিল। কিছু সদস্যের মতে সংবিধান অত্যন্ত ফেডারেল (সংঘাত্মক), আবার কিছু সদস্য এটিকে অত্যন্ত ইউনিকেটারি (একাত্মক) বলে মনে করতেন। সে সময় ডঃ ভীমরাও আম্বেডকর স্পষ্ট করে বলেছিলেন যে, সংবিধান পুরোপুরি সংঘাত্মক নয় এবং পুরোপুরি একাত্মকও নয়, বরং এমন একটি সংবিধান যা দেশকে সংকটের সময় একত্রিত ও শক্তিশালী রাখে।
তিনি আরও বলেছেন যে, স্বাধীনতার পর ভারত সংবিধানের নির্দেশনায় উন্নয়নের পথে অগ্রসর হয়েছে, যখন আমাদের অনেক প্রতিবেশী দেশ সংঘর্ষ ও অস্থিরতার সাথে লড়াই করেছে। এই সংবিধানই দেশকে সকল পরিস্থিতিতে শক্তি ও স্থায়িত্ব প্রদান করেছে।
ন্যায়পালিকা, বিধায়ক ও কার্যপালিকার ভূমিকা
প্রধান বিচারপতি বলেছেন যে, দেশের সামাজিক ও অর্থনৈতিক সমতা জন্য বিধায়ক, কার্যপালিকা ও ন্যায়পালিকা যৌথভাবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। এই তিনটি স্তম্ভ দেশের উন্নয়ন ও ন্যায়বিচারের ভিত্তি। তিনি জোর দিয়ে বলেছেন যে, ন্যায়বিচারের সঠিক অর্থে সর্বশেষ ব্যক্তির কাছে পৌঁছানো উচিত। এজন্য এই তিনটি প্রতিষ্ঠানকে সহযোগিতার সাথে কাজ করতে হবে যাতে দেশের প্রত্যেক নাগরিক ন্যায়বিচার পায় এবং সমাজে সমতা বজায় থাকে।
সংবিধান ও দেশের ঐক্য
বি আর গাওয়াই বলেছেন যে, সংবিধান ভারতকে কেবলমাত্র গণতন্ত্রের মহাশক্তিই তৈরি করেনি, বরং এটি দেশকে সামাজিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক স্তরেও স্থায়িত্ব প্রদান করে। তিনি বলেছেন যে, আমাদের সংবিধানের মূল নীতিগুলি বুঝতে এবং এর সম্মান করা প্রয়োজন, কারণ এটিই দেশকে শক্তিশালী ও ঐক্যবদ্ধ রাখে।
ন্যায়পালিকার দায়িত্ব
সিজেআই গাওয়াই ন্যায়পালিকার দায়িত্ব নিয়েও কথা বলেছেন এবং বলেছেন যে, ন্যায়পালিকার দায়িত্ব হলো স্বাধীন ও নিরপেক্ষ থাকা। ন্যায়পালিকাকে এটা নিশ্চিত করতে হবে যে, প্রত্যেক নাগরিক ন্যায়বিচার পায় এবং কেউ ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত হয় না। তিনি বলেছেন যে, ন্যায়পালিকাকে সমাজের দুর্বল শ্রেণীর অধিকার রক্ষা করতে হবে।