ইভিএম পরীক্ষায় নতুন নিয়ম: প্রার্থীদের জন্য মক পোলের সুযোগ

🎧 Listen in Audio
0:00

বিরোধী দলগুলির তরফ থেকে ইভিএম (ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন)-এর নির্ভরযোগ্যতা নিয়ে ক্রমাগত উঠে আসা প্রশ্নের মধ্যে, নির্বাচন কমিশন একটি গুরুত্বপূর্ণ এবং স্বচ্ছতা বৃদ্ধিকারী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে।

নির্বাচন কমিশন: নির্বাচনী প্রক্রিয়াকে আরও স্বচ্ছ এবং নির্ভরযোগ্য করার দিকে নির্বাচন কমিশন একটি বড় পদক্ষেপ নিয়েছে। ইভিএম (ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন)-এর নির্ভরযোগ্যতা নিয়ে ক্রমাগত উঠে আসা প্রশ্নগুলি বিবেচনা করে কমিশন ইভিএম পরীক্ষার নিয়মে গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন এনেছে। এই নতুন নিয়ম অনুযায়ী, এখন কেবলমাত্র বিজয়ী নয়, দ্বিতীয় এবং তৃতীয় স্থান অধিকারী প্রার্থীরাও ইভিএম পরীক্ষা করাতে পারবেন।

এখন প্রার্থীরাও মক পোল করাতে পারবেন, শুল্ক দিতে হবে

এখন পর্যন্ত প্রার্থীদের কেবলমাত্র ফলাফল গ্রহণের বিকল্প ছিল, কিন্তু ১৭ জুন ২০২৫-এ কমিশন কর্তৃক প্রকাশিত নতুন নির্দেশিকা অনুযায়ী, প্রার্থীরা ইভিএম পরীক্ষার সাথে সাথে মক পোলও করাতে পারবেন। মক পোল অর্থাৎ মেশিনে কিছু ভোট দিয়ে দেখা হবে যে তা সঠিকভাবে রেজিস্টার হচ্ছে কিনা। তবে, এই প্রক্রিয়ার জন্য প্রার্থীদের একটি নির্দিষ্ট অর্থ পরিশোধ করতে হবে:

  • কেবলমাত্র ইভিএম পরীক্ষা: ₹২৩,৬০০ (১৮% জিএসটি সহ)
  • ইভিএম + মক পোল: ₹৪৭,২০০
  • এই অর্থ ভারত ইলেকট্রনিক্স লিমিটেড (বিইএল) অথবা ইলেকট্রনিক্স কর্পোরেশন অফ ইন্ডিয়া লিমিটেড (ইসিল)-কে দিতে হবে, যারা ইভিএম-এর উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান।

গड़বড় পাওয়া গেলে পুরো টাকা ফেরত

সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল, যদি পরীক্ষায় ইভিএম-এ কোনও ধরণের ত্রুটি পাওয়া যায়, তাহলে প্রার্থীকে পুরো টাকা ফেরত দেওয়া হবে। এছাড়াও, সেই পরীক্ষার খরচ কেন্দ্রীয় অথবা রাজ্য সরকার বহন করবে, এটি নির্বাচনের ধরণ (লোকসভা অথবা বিধানসভা) এর উপর নির্ভর করবে। প্রার্থীদের ইভিএম পরীক্ষার জন্য নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার ৭ দিনের মধ্যে আবেদন করতে হবে। তারা প্রতিটি বিধানসভা কেন্দ্রের ৫% পর্যন্ত মেশিনের পরীক্ষা করাতে পারবেন। এতে ব্যালট ইউনিট, কন্ট্রোল ইউনিট এবং ভিভিপ্যাট অন্তর্ভুক্ত থাকবে।

মুখ্য নির্বাচন কর্মকর্তাকে ১৫ দিনের মধ্যে পরীক্ষার তালিকা সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলিকে পাঠাতে হবে। আগে এই সময়সীমা ছিল ৩০ দিন, যা এখন অর্ধেক করা হয়েছে যাতে প্রক্রিয়া দ্রুত এবং আরও কার্যকর হয়।

ভিডিও এবং ছবি রেকর্ডিং নিয়েও নিয়ম পরিবর্তন

নির্বাচন কমিশন নির্বাচনী ভিডিও এবং ছবি রেকর্ডিং নিয়ে আরও একটি বড় পরিবর্তন এনেছে। কমিশন সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে এখন এই রেকর্ড কেবলমাত্র ৪৫ দিন পর্যন্ত রাখা হবে। আগে এই সময়সীমা ছিল ৬ মাস থেকে ১ বছর পর্যন্ত। তবে, যদি কোনও নির্বাচনী আবেদন দায়ের করা হয়, তাহলে রেকর্ড সেই আবেদনের নিষ্পত্তি পর্যন্ত সুরক্ষিত রাখা হবে। এই পদক্ষেপটি সেই সোশ্যাল মিডিয়া ট্রেন্ডগুলি বন্ধ করার জন্য নেওয়া হয়েছে, যেখানে ভিডিও/ছবির অপব্যবহার করা হচ্ছে।

  • সন্দেহের সমাধান, জনগণের কাছে স্বচ্ছতা
  • নির্বাচন কমিশনের মতে এই নিয়মগুলির ফলে:
  • প্রার্থীরা সন্দেহের অবস্থায় সমাধানের সুযোগ পাবেন।
  • নির্বাচনী প্রক্রিয়া নিয়ে জনসাধারণের মধ্যে আস্থা বৃদ্ধি পাবে।
  • রাজনৈতিক দলগুলির অভিযোগ-প্রতি-অভিযোগ কমবে।
  • সোশ্যাল মিডিয়ায় ভুল তথ্যের প্রচার রোধ করা সম্ভব হবে।

এই পরিবর্তন নিয়ে কমিশন ৩০ মে সকল রাজ্যের মুখ্য নির্বাচন কর্মকর্তাদের চিঠি পাঠিয়ে জানিয়েছিল। এতে এটাও স্পষ্ট করা হয়েছিল যে রেকর্ডের অপব্যবহারের বর্ধমান ঘটনার কারণেই ৪৫ দিনের সময়সীমা নির্ধারণ করা হয়েছে। নির্বাচন কমিশনের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ইঙ্গিত করেছেন যে এই নতুন নিয়মগুলির শুরু বিহার বিধানসভা নির্বাচন থেকে হতে পারে। সেখানে শীঘ্রই নির্বাচনের প্রক্রিয়া শুরু হতে চলেছে এবং কমিশন চায় যে নতুন ব্যবস্থার পাইলট সেখান থেকে করা হোক।

Leave a comment