দিল্লিতে ২০১৩ সালের পর সবচেয়ে তাড়াতাড়ি মৌসুমি বৃষ্টির সম্ভাবনা

🎧 Listen in Audio
0:00

২৪শে জুন দিল্লিতে মৌসুমি বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে, যা ২০১৩ সালের পর সবচেয়ে তাড়াতাড়ি। আজও বৃষ্টি ও প্রবল বাতাসের সতর্কতা জারি করা হয়েছে। উত্তর ভারতের অনেক অংশে ভারী বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে।

দিল্লি মৌসুমি: দিল্লি-এনসিআরে মৌসুমি বৃষ্টিপাতের আগমনের উল্টো গণনা শুরু হয়ে গেছে। যদি দিল্লিতে ২৪শে জুন প্রথম মৌসুমি বৃষ্টি হয়, তাহলে এটি ২০১৩ সালের পর সবচেয়ে তাড়াতাড়ি মৌসুমি আগমন হবে। আবহাওয়া দপ্তর আজ ২৩শে জুন বৃষ্টি, প্রবল বাতাস এবং ঝড়ের সতর্কতা জারি করেছে। এর আগে ২০১৩ সালে ১৬শে জুন প্রথম বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছিল।

উত্তর ভারতের অনেক অংশে পৌঁছেছে মৌসুমি

ভারতীয় আবহাওয়া বিভাগ (আইএমডি)-এর মতে, মৌসুমি বৃষ্টিপাত এখন উত্তর ভারতের পাহাড়ি রাজ্যগুলিতে পৌঁছে গেছে। লাদাখ, হিমাচল প্রদেশ, জম্মু ও কাশ্মীর এবং পাঞ্জাবের বেশিরভাগ অংশে মৌসুমি বৃষ্টিপাত সক্রিয় হয়ে উঠেছে। আগামী ২৪ থেকে ৪৮ ঘন্টার মধ্যে এটি হরিয়ানা, দিল্লি, চণ্ডীগড়, রাজস্থান এবং পশ্চিম উত্তর প্রদেশেও পৌঁছাতে পারে।

বৃষ্টির সতর্কতা এবং বাতাসের প্রভাব

দিল্লিতে ২৩শে জুন সন্ধ্যা ও রাতে হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। এই সময় ৩০-৪০ কিলোমিটার প্রতি ঘন্টা বেগে প্রবল বাতাস বইতে পারে। এর সাথে সাথে বজ্রপাতেরও সম্ভাবনা রয়েছে। আবহাওয়া দপ্তর মানুষকে সতর্ক থাকার এবং প্রয়োজনীয় সাবধানতা অবলম্বন করার পরামর্শ দিয়েছে।

গত কয়েক বছরে মৌসুমি আগমনের তারিখ

২০১৩: ১৬ জুন

২০২১: ১৩ জুলাই

২০২২: ৩০ জুন

২০২৩: ২৫ জুন

২০২৪: ২৮ জুন

২০২৫ সালে যদি ২৪শে জুন দিল্লিতে মৌসুমি বৃষ্টিপাত পৌঁছায়, তাহলে গত ১২ বছরে এটি সবচেয়ে তাড়াতাড়ি হবে।

সারা দেশে ভারী বৃষ্টিপাতের সতর্কতা

আবহাওয়া দপ্তরের মতে, ২৬শে জুন পর্যন্ত উত্তর-পশ্চিম ভারত, মধ্যপ্রদেশ, গুজরাট, কঙ্কণ এবং গোয়ায় ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিপাত হতে পারে। মধ্যপ্রদেশে ২৩ ও ২৪শে জুন অতি ভারী বৃষ্টিপাতের আশঙ্কা রয়েছে। উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলিতে আগামী দুই দিন ভারী বৃষ্টিপাত এবং তারপরে হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে।

এই বার সময়ের আগেই দস্তক মৌসুমির

২০২৫ সালে মৌসুমি বৃষ্টিপাত ২৪শে মে কেরালায় পৌঁছেছিল, যা ২০০৯ সালের পর সবচেয়ে তাড়াতাড়ি আগমন। ২০০৯ সালে মৌসুমি বৃষ্টিপাত ২৩শে মে কেরালায় পৌঁছেছিল। আরব সাগর এবং বঙ্গোপসাগরে শক্তিশালী আবহাওয়ার ব্যবস্থার কারণে মৌসুমি বৃষ্টিপাত দ্রুত গতি পেয়েছিল এবং ২৯শে মে মুম্বই, উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য এবং মধ্য ভারতের বেশিরভাগ অংশকে আচ্ছাদন করেছিল।

তবে, এর পর ২৯শে মে থেকে ১৬শে জুন পর্যন্ত মৌসুমি বৃষ্টিপাতের গতিতে ধীরগতি দেখা গিয়েছিল এবং দেশের অনেক অংশে তাপমাত্রায় তীব্র বৃদ্ধি দেখা গিয়েছিল। তারপর ১৬শে জুন থেকে ১৮শে জুনের মধ্যে দুটি নিম্নচাপের ক্ষেত্র সক্রিয় হওয়ার কারণে মৌসুমি বৃষ্টিপাত আবার গতি পেয়েছিল।

মৌসুমি বৃষ্টিপাতের সাধারণ অগ্রগতি

কেরাল: ১ জুন

মুম্বই: ১১ জুন

দিল্লি: ৩০ জুন

সারা দেশে: ৮ জুলাই

প্রত্যাবর্তন: ১৭ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হয়ে ১৫ অক্টোবর পর্যন্ত সম্পূর্ণ হয়।

মৌসুমির প্রারম্ভিক তারিখ থেকে কি বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস করা যায়?

আবহাওয়া বিশেষজ্ঞদের মতে, মৌসুমির শুরুর তারিখের সাথে বৃষ্টিপাতের মোট পরিমাণের সরাসরি সম্পর্ক নেই। মৌসুমির অগ্রগতি বিশ্বব্যাপী, আঞ্চলিক এবং স্থানীয় কারণগুলির উপর নির্ভর করে। তাই মৌসুমির তাড়াতাড়ি বা দেরিতে আসা বৃষ্টিপাতের অধিকতা বা কমতির ইঙ্গিত দেয় না।

আইএমডির মৌসুমি পূর্বাভাস

ভারতীয় আবহাওয়া বিভাগের মতে, জুন থেকে সেপ্টেম্বরের মধ্যে গড়ে ১০৬% বৃষ্টিপাত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। দীর্ঘমেয়াদী গড় ৮৭ সেমি ধরা হয়। ৯৬ থেকে ১০৪% এর মধ্যে বৃষ্টিপাতকে 'সাধারণ' শ্রেণীতে রাখা হয়।

কোন রাজ্যে কত বৃষ্টিপাত সম্ভব

এই বছর দেশের বেশিরভাগ অংশে সাধারণের চেয়ে বেশি বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। লাদাখ, হিমাচল প্রদেশের সীমান্তবর্তী অঞ্চল, উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যের কিছু অংশ, বিহার, ঝাড়খণ্ড, পশ্চিমবঙ্গ এবং ওড়িশায় সাধারণ বৃষ্টিপাত হতে পারে। অন্যদিকে, পাঞ্জাব, হরিয়ানা, কেরাল এবং তামিলনাড়ুর কিছু অঞ্চলে সাধারণের চেয়ে কম বৃষ্টিপাত সম্ভব।

জনগণের জন্য প্রয়োজনীয় সতর্কতা ও পরামর্শ

বৃষ্টির সময় বজ্রপাত, প্রবল বাতাস এবং ঝড়ের মতো পরিস্থিতি থেকে বাঁচতে নিরাপদ স্থানে থাকুন। মোবাইল ফোন, চার্জার এবং ইলেকট্রনিক যন্ত্রপাতি ব্যবহার সাবধানতার সাথে করুন। রাস্তায় পানি জমে যাওয়া এবং যানজটের জন্য আগে থেকেই পরিকল্পনা করুন। কৃষকদেরও ক্ষেতগুলিতে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা নিশ্চিত করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

Leave a comment