এয়ার ইন্ডিয়া দুর্ঘটনা: ডিএনএ পরীক্ষায় ২৪৭ জনের পরিচয় নিশ্চিত

এয়ার ইন্ডিয়া দুর্ঘটনা: ডিএনএ পরীক্ষায় ২৪৭ জনের পরিচয় নিশ্চিত
🎧 Listen in Audio
0:00

এয়ার ইন্ডিয়ার দুর্ঘটনায় এখন পর্যন্ত ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে ২৪৭ জনের পরিচয় নিশ্চিত হয়েছে। ২৩২ টি মৃতদেহ তাদের আত্মীয়স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। মৃতদের মধ্যে ভারত, ব্রিটেন, পর্তুগাল ও কানাডার নাগরিক রয়েছেন।

এয়ার ইন্ডিয়া বিমান দুর্ঘটনা: ১২ জুন আহমেদাবাদে সংঘটিত ভয়াবহ এয়ার ইন্ডিয়া বিমান দুর্ঘটনার পর মৃতদের পরিচয় নিশ্চিত করার জন্য ডিএনএ পরীক্ষার আশ্রয় নেওয়া হয়। এখন পর্যন্ত ডিএনএ মিলানের মাধ্যমে ২৪৭ জনের পরিচয় নিশ্চিত হয়েছে। এর মধ্যে ২৩২ টি মৃতদেহ তাদের আত্মীয়স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এই দুর্ঘটনায় মোট ২৭০ জনের মৃত্যু হয়েছে, যার মধ্যে ২৪১ জন যাত্রী বিমানে ছিলেন এবং বাকিরা ছিলেন হস্টেল চত্বরে। এই দুর্ঘটনায় মাত্র একজন ব্যক্তি বেঁচে গেছেন, যার চিকিৎসা এখনও চলছে।

বিমান উড্ডয়নের পরই ঘটেছিল ভয়াবহ দুর্ঘটনা

এই বিমানটি লন্ডন যাচ্ছিল কিন্তু উড্ডয়নের মাত্র কয়েক মিনিট পরই মেঘাণী নগর এলাকার একটি হস্টেল চত্বরে বিধ্বস্ত হয়। দুর্ঘটনার ভয়াবহতার ধারণা পাওয়া যায় এই ব্যাপার থেকে যে বিমানে থাকা বেশিরভাগ মানুষ এবং মাটিতে থাকা অনেক মানুষ ঘটনাস্থলেই মারা যায়। উদ্ধার ও ত্রাণ কাজে বহু সংখ্যক স্থানীয় প্রশাসন, পুলিশ এবং চিকিৎসা কর্মী নিয়োজিত ছিলেন।

চলচ্চিত্র নির্মাতা মহেশ জিরাওয়ালা-র নিশ্চিতকরণ

এই দুর্ঘটনায় আহমেদাবাদের বাসিন্দা এবং চলচ্চিত্র নির্মাতা মহেশ জিরাওয়ালা-রও মৃত্যু হয়। পুলিশের মতে, দুর্ঘটনার সময় তিনি দুচক্কা যানবাহনে করে সেই এলাকা দিয়ে যাচ্ছিলেন। ডিএনএ পরীক্ষার পাশাপাশি পোড়া স্কুটারের ইঞ্জিন নম্বর, চ্যাসিস নম্বর এবং ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ফুটেজের সাহায্যেও তার পরিচয় নিশ্চিত করা হয়। তার মৃতদেহ তার আত্মীয়স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

কতগুলি দেশের নাগরিক দুর্ঘটনার শিকার হয়েছেন?

মেডিকেল সুপারিনটেনডেন্ট ডাক্তার রাকেশ যোশীর মতে, ২৪৭ টি ডিএনএ নমুনার মধ্যে ১৮৭ জন ভারতীয় নাগরিক ছিলেন। এছাড়াও ৫২ জন ব্রিটিশ, ৭ জন পর্তুগিজ এবং ১ জন কানাডিয়ান নাগরিকের পরিচয় নিশ্চিত হয়েছে। ভারতীয় নাগরিকদের মধ্যে গুজরাট, মহারাষ্ট্র, রাজস্থান, দিউ এবং নাগাল্যান্ডের লোকজন রয়েছেন। এটি একটি আন্তর্জাতিক ট্র্যাজেডি হয়ে উঠেছে, যেখানে বিভিন্ন দেশের নাগরিক প্রাণ হারিয়েছেন।

কিছু নমুনায় তাৎক্ষণিক মিলান সম্ভব হয়নি

ডাঃ যোশী জানিয়েছেন যে, আটটি ক্ষেত্রে পূর্বে সংগ্রহ করা আত্মীয়স্বজনদের ডিএনএ নমুনার সাথে মিলান সম্ভব হয়নি, তাই সেই সকল ক্ষেত্রে অন্যান্য নিকটাত্মীয়দের নমুনা চাওয়া হয়েছে। সাধারণত পিতা, পুত্র বা কন্যার নমুনাকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়। যদি তারা উপলব্ধ না থাকে তাহলে ভাই বা বোনের নমুনার সাথে মিলান করা হয়।

ডিএনএ পরীক্ষার পদ্ধতি এবং সহযোগী সংস্থা

ডিএনএ পরীক্ষা একটি সংবেদনশীল ও বৈজ্ঞানিক প্রক্রিয়া, যেখানে উচ্চ স্তরের সতর্কতা ও আইনি প্রোটোকল অনুসরণ করা জরুরি। এই কাজে ফরেনসিক বিজ্ঞান বিশ্ববিদ্যালয়, রাজ্য সরকারের স্বাস্থ্য বিভাগ, জেলা প্রশাসন এবং অন্যান্য বিশেষজ্ঞ সংস্থা মিলে কাজ করছে। দুর্ঘটনার শিকারদের পরিচয় নিশ্চিত করার জন্য এই যৌথ প্রচেষ্টা করা হচ্ছে যাতে মৃতদেহ তাদের পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা যায়।

মৃতদেহের সাথে আত্মীয়স্বজনদের অনুভূতি

মহারাষ্ট্রের থানে জেলার বদলাপুরের বাসিন্দা দীপক পাঠক এবং পুণের পিম্পরি চিঞ্চওয়াড়ের বাসিন্দা ইরফান শেখ-কে ডিএনএ মিলানের পর তাদের আত্মীয়স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়। উভয়েরই অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া এক আবেগঘন পরিবেশে সম্পন্ন হয়। দীপক গত ১১ বছর ধরে জাতীয় বিমান সংস্থায় কর্মরত ছিলেন। তার অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া হাজার হাজার মানুষের উপস্থিতিতে সম্পন্ন হয়, যারা এই দুঃখের মুহূর্তে তার পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন। ইরফানের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় তার বন্ধু, আত্মীয়স্বজন, প্রতিবেশী এবং রাজনৈতিক প্রতিনিধিরাও উপস্থিত ছিলেন।

Leave a comment