জয়পুরে স্বামীর হাতে স্ত্রীর নৃশংস হত্যা: লাশ গর্তে পুঁতে আবর্জনায় ঢেকে দেওয়া

🎧 Listen in Audio
0:00

জয়পুরে পারিবারিক কলহের পর এক স্বামী গলা টিপে নিজের স্ত্রীর হত্যা করেছে। লাশটি বস্তায় ভরে গর্তে ফেলে তার উপর আবর্জনা ফেলে দেওয়া হয়। পুলিশ অভিযুক্ত স্বামীকে গ্রেফতার করেছে, যে জিজ্ঞাসাবাদে হত্যার কথা স্বীকার করেছে।

অপরাধ সংবাদ: জয়পুর শহরের বিশ্বকর্মা এলাকা থেকে একটি হৃদয়বিদারক ঘটনা প্রকাশ্যে এসেছে, যা আবারও সম্পর্কের উপর প্রশ্ন তুলে ধরেছে। এই ঘটনাটি পারিবারিক কলহের সাথে জড়িত, কিন্তু এর পরিণতি এত ভয়াবহ হয়েছে যে সকলেই অবাক হয়েছেন। উত্তরপ্রদেশের বাসিন্দা মোহাম্মদ শাহিদ কুরেশী তার স্ত্রী ফারহীনের গলা টিপে হত্যা করে এবং তারপর তার লাশ লুকিয়ে রাখার ষড়যন্ত্র করে। হত্যার পর তিনি লাশটিকে একটি বস্তায় ভরে নির্জন স্থানে একটি গর্তে ফেলে দেন এবং উপর থেকে আবর্জনা ফেলে দেন যাতে কারও সন্দেহ না হয়।

পারিবারিক কলহের পর রাগে স্বামী স্ত্রীর হত্যা করেছে

এই সম্পূর্ণ ঘটনাটি ১ মে দুপুরের। অভিযুক্ত শাহিদ জয়পুরের বিশ্বকর্মা এলাকার একটি আবর্জনা গুদামে কাজ করতেন। সেদিন তিনি তার স্ত্রী ফারহীনকেও গুদামে নিয়ে যান। বলা হচ্ছে, দুপুরের পর কোনো কারণে তাদের মধ্যে ঝগড়া হয়। এই ঝগড়া এতটাই বেড়ে যায় যে শাহিদ রাগে তার স্ত্রীর গলা টিপে হত্যা করে।

হত্যার পর তিনি ফারহীনের পোশাক খুলে দেন এবং উলঙ্গ অবস্থায় লাশটিকে বস্তায় ভরে দেন। এরপর তিনি লাশটিকে গুদামের কাছেই একটি গর্তে নিয়ে যান এবং সেখানে ফেলে দেন। উপর থেকে আবর্জনা ফেলে তিনি প্রমাণ লুকিয়ে রাখার চেষ্টা করেন। এরপর তিনি যেন কিছুই হয়নি, এমন ভাবে বাড়ি ফিরে তার সন্তানদের কাছে গিয়ে শুয়ে পড়েন।

স্ত্রীর হত্যার পর সন্তানদের সাথে শুয়ে পড়ে, যেন কিছুই হয়নি

হত্যার পর শাহিদের আচরণ দেখে পুলিশও অবাক হয়ে যায়। স্ত্রীর প্রাণ কেড়ে নেওয়ার পর তিনি যেন কিছুই হয়নি, এমন আচরণ করেন। তিনি সরাসরি তার বাড়ি গিয়ে সন্তানদের সাথে গিয়ে শুয়ে পড়েন। তার আচরণে কোনো উদ্বেগ বা ভয় দেখা যায়নি। তিনি কাউকে কিছু বলেননি, কারও সন্দেহও হয়নি। পুলিশের প্রথমে বিশ্বাস করা কঠিন হয়েছিল যে এত বড় অপরাধ করার পর একজন মানুষ এত সহজেই স্বাভাবিক হতে পারে।

শাহিদের এই কাজ প্রমাণ করে যে তিনি আগে থেকেই হত্যা এবং এর পরের পরিকল্পনা করে রেখেছিলেন। তিনি চাননি যাতে কেউ তার স্ত্রীর মৃত্যুর কথা জানতে পারে, তাই তিনি শুধুমাত্র লাশটিকে লুকিয়ে রাখেননি, বরং নিজেকেও সম্পূর্ণ স্বাভাবিক দেখানোর চেষ্টা করেছিলেন, যাতে কারও তার উপর সন্দেহ না হয়।

পরের দিন গর্তে মহিলার লাশ পাওয়া যায়

পরের দিন অর্থাৎ ২ মে পুলিশকে একটি বস্তায় পড়ে থাকা একজন মহিলার লাশের খবর পায়। খবর পেয়ে পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে তদন্ত শুরু করে। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ সন্দেহ করে যে শাহিদই হত্যা করেছে, কারণ ফারহীনকে শেষবার তার সাথেই দেখা গিয়েছিল। পুলিশ শাহিদকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে, তখন সে তার অপরাধ স্বীকার করে। সে বলে যে সে তার স্ত্রীর সাথে প্রায়ই ঝগড়া করত এবং রাগে তার হত্যা করে।

অভিযুক্ত পুলিশকে বলেছে – প্রতিদিনের ঝগড়ায় ছিলেন বিরক্ত

পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে শাহিদ জানায় যে তার স্ত্রী ফারহীন সামান্য কারণে ঝগড়া করত এবং এই ঝগড়াগুলি তার জন্য মানসিক যন্ত্রণার কারণ হয়ে উঠেছিল। শাহিদের দাবি ছিল যে সে এই ঝগড়াগুলিতে বিরক্ত হয়ে গিয়েছিল এবং তার আর কোনো উপায় ছিল না। রাগে তার স্ত্রীর হত্যা করে। শাহিদের এই কথাগুলি স্পষ্ট করে দেখায় যে হত্যাটি এক মুহূর্তের রাগ নয়, বরং দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা চাপ ও মানসিক ক্লান্তির ফল।

যদিও, তার দুঃখ ও চাপ কোনো কারণ হতে পারে না যা কারও প্রাণ কেড়ে নেওয়াকে যুক্তিসঙ্গত করে তুলতে পারে। এই ঘটনাটি প্রমাণ করেছে যে পারিবারিক হিংসা এবং মানসিক চাপ যদি সময়মতো নিয়ন্ত্রণ না করা হয়, তাহলে এরকম ভয়াবহ পরিণতি দেখা দিতে পারে।

Leave a comment