বলিউডে কোটি টাকার প্রতারণা: ২৫ জন তারকা প্রতারিত

🎧 Listen in Audio
0:00

চলচ্চিত্র শিল্পের ২৫ জনেরও বেশি তারকার সাথে কোটি কোটি টাকার প্রতারণার ঘটনা সামনে এসেছে। এনার্জি ড্রিঙ্কের বিজ্ঞাপনের নামে এই তারকাদের প্রচারের জন্য চুক্তিবদ্ধ করা হয়েছিল, কিন্তু বিজ্ঞাপনের শুটিং শেষ হওয়ার পর তাদের পারিশ্রমিক দেওয়া হয়নি।

মুম্বই: এনার্জি ড্রিঙ্কের বিজ্ঞাপনের নামে একটি সেলিব্রিটি ম্যানেজমেন্ট কোম্পানির সাথে প্রতারণার ঘটনা সামনে এসেছে, যেখানে প্রায় ২৫ জন বড় তারকা তাদের পারিশ্রমিক পাননি। এই ব্যাপারে মুম্বইয়ের চেম্বুর থানায় সেলিব্রিটি ম্যানেজমেন্ট কোম্পানিটির পক্ষ থেকে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। অভিযোগ করা হয়েছে যে, অনেক বিখ্যাত ব্যক্তিত্বকে এনার্জি ড্রিঙ্কের প্রচার করানো হয়েছে, কিন্তু তাদের পারিশ্রমিক দেওয়া হয়নি।

অভিযোগে প্রায় দেড় কোটি টাকার বকেয়া অর্থের উল্লেখ করা হয়েছে। পুলিশ তনিষ চেডজা, মানু শ্রীবাস্তব, ফয়সাল রফিক, আব্দুল এবং রিতিক পাঞ্চালসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করেছে। এই অভিযোগ সেলিব্রিটি ম্যানেজমেন্ট কোম্পানির পরিচালিকা রোশন গ্যারির দায়ের করা অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে।

কিভাবে হয়েছে প্রতারণা?

অভিযোগ অনুসারে, এই প্রতারণাটি একটি সেলিব্রিটি ম্যানেজমেন্ট কোম্পানির মাধ্যমে ঘটেছে, যা চলচ্চিত্র ও টেলিভিশন শিল্পীদের বিজ্ঞাপন ও অনুষ্ঠানের সাথে যুক্ত করে। কোম্পানির প্রধান রোশন গ্যারি জানিয়েছেন, জুলাই ২০২৪ সালে তাকে এক ব্যক্তির ফোন আসে, যিনি নিজেকে একটি এনার্জি ড্রিঙ্ক ব্র্যান্ডের প্রতিনিধি বলে পরিচয় দেন। তিনি ২৫ জন শিল্পীর দাবি রাখেন এবং অগ্রীম অর্থ প্রদানের প্রতিশ্রুতি দেন।

প্রথমবার যখন আলোচনা হয়, তখন অভিযুক্তরা ১০ লক্ষ টাকা অগ্রীম অর্থ স্থানান্তর করার দাবি করে, কিন্তু আসলে কোনো টাকা দেয়নি। এরপর, মুম্বইয়ের দাদারে একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়, যাতে প্রায় ১০০ জন শিল্পী অংশগ্রহণ করেন। এর মধ্যে ২৫ জনকে বিজ্ঞাপনের জন্য নির্বাচিত করা হয় এবং তাদের মোট ১.৩২ কোটি টাকা প্রদানের চুক্তি হয়।

জাল চেক এবং বন্ড ট্রানজ্যাকশন

বিজ্ঞাপনের শুটিং শেষ হওয়ার পর শিল্পী এবং কোম্পানিকে অর্থ প্রদান হিসেবে বেশ কিছু চেক দেওয়া হয়, কিন্তু সবগুলোই বন্ড হয়ে যায়। এর মধ্যে অভিনেত্রী তেজস্বী প্রকাশের ৬.৫ লক্ষ এবং অদ্রিজা রায়ের ১.২৫ লক্ষ টাকার চেকও অন্তর্ভুক্ত ছিল। ১৮ অক্টোবর ২০২৪ তারিখে ৩৫ লক্ষ এবং ৪৫ লক্ষ টাকার দুটি চেক জারি করা হয়, কিন্তু সেগুলোও নগদীকরণ করা যায়নি।

অভিযোগকারী রোশন গ্যারি জানিয়েছেন, তিনি প্রতিশ্রুতির উপর বিশ্বাস করে অনেক অভিনেতাকে নিজের কাছ থেকে অগ্রীম অর্থ প্রদান করেছিলেন, যার মধ্যে জয় ভানুশালী, অঙ্কিতা লোখণ্ডে, আয়ুষ শর্মা, কুশাল টান্ডন এবং অন্যান্য শিল্পীরা অন্তর্ভুক্ত ছিলেন।

মোট দেড় কোটি টাকার প্রতারণা, পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে

এই সমগ্র ঘটনায় মোট ১.৩২ কোটি টাকা শিল্পীদের দেওয়ার কথা ছিল, যখন রোশন গ্যারি তার ব্যক্তিগত তহবিল থেকে ১৬.৯১ লক্ষ টাকা অগ্রীম দিয়েছিলেন। অর্থাৎ মোট দেড় কোটি টাকার প্রতারণা হয়েছে। অভিযোগ দায়েরের পর পুলিশ এই ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। এই ঘটনায় পাঁচজন- তনিষ চেডজা, মানু শ্রীবাস্তব, ফয়সাল রফিক, আব্দুল এবং রিতিক পাঞ্চালের বিরুদ্ধে মামলা রুজু হয়েছে। পুলিশ অভিযুক্তদের জিজ্ঞাসাবাদ করছে এবং তাদের ব্যাংক লেনদেন ও অন্যান্য রেকর্ড যাচাই করছে।

এই ঘটনা বলিউড ও টেলিভিশন শিল্পের জন্য একটি বড় ধাক্কা, কারণ এটি দেখায় যে জাল ব্র্যান্ড এবং প্রতারকরা কীভাবে বড় বড় শিল্পীদেরও প্রতারিত করতে পারে। পুলিশ শীঘ্রই অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারে। অন্যদিকে, প্রভাবিত শিল্পীদেরও ন্যায় বিচার পাওয়ার আশা করা হচ্ছে।

```

Leave a comment