অপারেশন সিন্ধুর উপর এস. জয়শঙ্করের বক্তব্য: পাকিস্তান যদি বড় আক্রমণ করে, তাহলে ভারতও বড় আক্রমণ করতে প্রস্তুত।
এস জয়শঙ্করের মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে আলোচনার উপর মন্তব্য: ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে বর্ধমান উত্তেজনার উপর বিদেশমন্ত্রী এস. জয়শঙ্করের গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য প্রকাশিত হয়েছে। অপারেশন সিন্ধুর সময় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে যুদ্ধবিরতি করেছিল বলে মার্কিন দাবির প্রত্যাখ্যান করে জয়শঙ্কর স্পষ্ট করে দিয়েছেন যে, ভারত তৃতীয় কোনও দেশের কথামতো তার সিদ্ধান্ত নেয় না। জয়শঙ্কর সংসদের বিদেশী বিষয়ক পরামর্শদাতা কমিটির বৈঠকে স্পষ্ট করে বলেছেন, পাকিস্তান যদি বড় আক্রমণ করে, তাহলে ভারত তার চেয়েও বড় আক্রমণ করতে প্রস্তুত।
অপারেশন সিন্ধু ও মার্কিন হস্তক্ষেপ
সম্প্রতি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের একটি বক্তব্য নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়েছিল, যেখানে তিনি বলেছিলেন যে, ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে সংঘাত রোধ করার জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যুদ্ধবিরতি করেছিল। বিরোধী দল এই নিয়ে কেন্দ্র সরকারের উপর অনেক প্রশ্ন তুলেছিল। কিন্তু বিদেশমন্ত্রী আবারও স্পষ্ট করে দিয়েছেন যে, অপারেশন সিন্ধুতে তৃতীয় কোনও দেশের কোনও ভূমিকা ছিল না। জয়শঙ্কর জানিয়েছেন, অপারেশনের সময় যখন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ভারতের সাথে কথা বলে বলেছিলেন যে, পাকিস্তান বড় আক্রমণ করতে পারে, তখন ভারত তৎক্ষণাৎ জবাব দিয়েছিল যে, পাকিস্তান যদি বড় আক্রমণ করে, তাহলে ভারতও তার চেয়ে বড় আক্রমণ করার জন্য প্রস্তুত।
জয়শঙ্কর বিরোধীদের কী পরামর্শ দিয়েছেন
জয়শঙ্কর বিরোধী দলকে পরামর্শ দিয়েছেন, যদি কারও এই বিষয়ে কোনও তথ্য প্রয়োজন হয়, তাহলে তারা সরাসরি সরকারের সাথে কথা বলবে। মিডিয়ায় গিয়ে অপারেশন সিন্ধু নিয়ে প্রশ্ন তোলা ভুল, এতে পাকিস্তান সুযোগ পায় এবং পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়। তিনি আরও বলেছেন, অপারেশন সিন্ধু এখনও শেষ হয়নি। তাই এমন অসতর্ক বক্তব্য দেওয়া ঠিক নয়।
পাকিস্তানকে কী বার্তা দেওয়া হয়েছে
বিদেশমন্ত্রী জানিয়েছেন, অপারেশন সিন্ধুর প্রথম পর্যায়ের পরেই পাকিস্তানকে স্পষ্ট করে দেওয়া হয়েছিল যে, ভারত কেবলমাত্র সন্ত্রাসবাদী ঘাঁটিগুলিকে লক্ষ্য করেছে। ভারতের নীতি একেবারেই স্পষ্ট – পাকিস্তান যদি গুলি চালায়, তাহলে ভারতও গুলি চালাবে। পাকিস্তান যদি থেমে যায়, তাহলেই ভারত থেমে যাবে। কোন দেশই জিজ্ঞাসা করুক না কেন, এই বার্তাই প্রতিবার দেওয়া হয়েছে।
সিন্ধু জল চুক্তির উপর সরকারের অবস্থান
বৈঠকের সময় সিন্ধু জল চুক্তি নিয়েও আলোচনা হয়েছিল। এ বিষয়ে জয়শঙ্কর বলেছেন, সরকার দেশের স্বার্থেই সিদ্ধান্ত নেবে এবং যে সিদ্ধান্তই হোক না কেন, তা ভারতের স্বার্থেই হবে। তিনি বলেছেন, ভারতের অগ্রাধিকার জাতীয় সুরক্ষা ও আত্মনির্ভরশীলতা, এবং এই দিকে সরকারের পদক্ষেপ স্পষ্ট।
মার্কিন মধ্যস্থতার দাবিকে স্পষ্ট প্রত্যাখ্যান
জয়শঙ্কর স্পষ্ট করে দিয়েছেন যে, ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে কোনও যুদ্ধবিরতি নিয়ে সিদ্ধান্ত দুই দেশের ডিজিএমও-এর আলোচনার মাধ্যমে হয়। তৃতীয় কোনও দেশের এতে কোনও ভূমিকা থাকে না। মার্কিন মধ্যস্থতার দাবি তিনি সম্পূর্ণরূপে অস্বীকার করেছেন।