নয়া দিল্লি: রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড উত্তর-পূর্বাঞ্চলের উন্নয়নের জন্য একটি বৃহৎ উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। চেয়ারম্যান মুকেশ আম্বানি ‘রাইজিং নর্থ ইস্ট ইনভেস্টর্স সামিট’-এর সময় ঘোষণা করেছেন যে, আগামী পাঁচ বছরে সংস্থাটি এই অঞ্চলে ৭৫,০০০ কোটি টাকার বিনিয়োগ করবে। এই বিনিয়োগের ফলে ২৫ লক্ষেরও বেশি প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
বিনিয়োগের উদ্দেশ্য ও প্রধান ক্ষেত্র
বর্তমানে রিলায়েন্সের এই অঞ্চলে ৩০,০০০ কোটি টাকার বিনিয়োগ রয়েছে। আগামী সময়ে এই বিনিয়োগ বেড়ে ৭৫,০০০ কোটি টাকা হবে। এই অর্থ কৃষি, ডিজিটাল নেটওয়ার্ক, স্বাস্থ্যসেবা, খুচরা ব্যবসা, বায়োগ্যাস এবং খেলাধুলাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হবে। এই কৌশলের উদ্দেশ্য উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলির অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়নে গতি প্রদান করা।
ডিজিটাল সংযোগের সম্প্রসারণ
মুকেশ আম্বানি জানিয়েছেন যে, রিলায়েন্স জিও-র ৫জি নেটওয়ার্ক উত্তর-পূর্বাঞ্চলের ৯০% জনসংখ্যার কাছে পৌঁছে গেছে। বর্তমানে ৫০ লক্ষেরও বেশি মানুষ এটির সাথে যুক্ত, এবং বছরের শেষের মধ্যে এই সংখ্যা দ্বিগুণ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এর ফলে শিক্ষা, ব্যবসা এবং প্রশাসন ইত্যাদি ক্ষেত্রে ডিজিটাল অ্যাক্সেস এবং সুবিধা বৃদ্ধি পাবে।
কৃষিতে উন্নয়ন ও কৃষকদের উপকার
রিলায়েন্স রিটেইল আঞ্চলিক কৃষকদের কাছ থেকে সরাসরি ক্রয় বৃদ্ধি করবে। এর ফলে দালালদের ভূমিকা কমবে এবং কৃষকদের আয় বৃদ্ধি পাবে। এই পদক্ষেপ গ্রামীণ অর্থনীতিকে শক্তিশালী করতে সাহায্য করবে।
সবুজ শক্তি ও পরিবেশের দিকে পদক্ষেপ
সংস্থাটি উত্তর-পূর্বে ৩৫০টি বায়োগ্যাস প্ল্যান্ট স্থাপনের পরিকল্পনায় কাজ করছে। এর ফলে পরিষ্কার শক্তির পাশাপাশি স্থানীয়ভাবে কর্মসংস্থানের সুযোগও বৃদ্ধি পাবে। এই প্রকল্প পরিবেশ সংরক্ষণের দিকেও একটি ইতিবাচক উদ্যোগ হবে।
স্বাস্থ্যসেবায় শক্তিবৃদ্ধি
রিলায়েন্স ফাউন্ডেশন মণিপুরে একটি ১৫০-শয্যার ক্যান্সার হাসপাতাল চালু করেছে। পাশাপাশি মিজোরাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে মিলে জিনোমিক ডেটার মাধ্যমে স্তন ক্যান্সারের চিকিৎসার উপর কাজ করা হচ্ছে। গুয়াহাটিতে একটি আধুনিক গবেষণাগারও স্থাপন করা হয়েছে, যা দেশের সবচেয়ে বড় জিনোম সিকোয়েন্সিং সুবিধাগুলির মধ্যে একটি হবে।
খেলাধুলায় উত্তর-পূর্বের অবদান বৃদ্ধি পাবে
রিলায়েন্স ফাউন্ডেশন আটটি রাজ্যে অলিম্পিক প্রশিক্ষণ কেন্দ্র তৈরি করবে। এর ফলে উত্তর-পূর্বের যুবকরা বিশ্বমানের খেলাধুলা প্রশিক্ষণ পাবে এবং ভারত নতুন অলিম্পিক প্রতিভার সন্ধান পাবে।
রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজের এই বিনিয়োগ কেবলমাত্র উত্তর-পূর্ব ভারতের চেহারা বদলে দেওয়ার পদক্ষেপ নয়, এটি আঞ্চলিক উন্নয়নের দিকে একটি শক্তিশালী প্রচেষ্টা। আম্বানি বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর দূরদর্শী নেতৃত্বে উত্তর-পূর্ব এখন ভারতের উন্নয়নের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠছে।
