মুডি'স ভারতের জিডিপি বৃদ্ধির পূর্বাভাস ৬.৩% এ নামিয়ে দিল

🎧 Listen in Audio
0:00

মুডি'স ভারতের জিডিপি বৃদ্ধির পূর্বাভাস ৬.৩% এ নামিয়ে দিয়েছে, বিশ্বব্যাপারী অনিশ্চয়তা এবং ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনার কারণে। ২০২৬ সালের জন্য বৃদ্ধি ৬.৫% থাকবে।

ভারতের জিডিপি পূর্বাভাস: গ্লোবাল রেটিং এজেন্সি মুডি'স ভারতের জিডিপি বৃদ্ধির পূর্বাভাস ২০২৫ সালের জন্য ৬.৫% থেকে কমিয়ে ৬.৩% করেছে। মুডি'স এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে বিশ্বব্যাপারী অনিশ্চয়তা, ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনা এবং বিশেষ করে ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে বর্ধমান উত্তেজনার কারণে। সংস্থার বক্তব্য, এই কারণগুলোর ফলে বিনিয়োগকারী ও ব্যবসায়ীদের উপর চাপ বৃদ্ধি পেতে পারে, যার ফলে ভারতের অর্থনৈতিক বৃদ্ধির গতি ধীর হতে পারে।

ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনা এবং বিশ্বব্যাপারী অনিশ্চয়তা

মুডি'সের মতে, ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে বর্ধমান ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনার প্রভাব ভারতের উন্নয়ন হারের উপর পড়েছে। এছাড়াও, মার্কিন বাণিজ্য নীতির অনিশ্চয়তা এবং বিশ্বব্যাপারে দেখা দেওয়া সমস্যাগুলি ভারতের অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। সংস্থার বক্তব্য, এই পরিস্থিতিতে বিনিয়োগকারী ও ব্যবসায়ীদের নতুন সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় সতর্ক থাকতে হবে, যার ফলে তাদের ব্যবসা ও বিনিয়োগ প্রভাবিত হতে পারে।

২০২৬ সালের জন্য ৬.৫% বৃদ্ধির পূর্বাভাস

মুডি'স ২০২৫ সালের জন্য ভারতের জিডিপি বৃদ্ধির পূর্বাভাস কমিয়েছে, কিন্তু ২০২৬ সালের জন্য এটি ৬.৫% এ অপরিবর্তিত রেখেছে। মুডি'স মনে করে ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাংক (আরবিআই) নীতিগত সুদের হার কমিয়ে ২০২৬ সালে অর্থনৈতিক বৃদ্ধিকে উৎসাহিত করতে পারে। ২০২৪ সালে ভারতের জিডিপি বৃদ্ধি ৬.৭% থাকার পূর্বাভাস ছিল, যা এখন ২০২৫ সালে কমে ৬.৩% হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

বিশ্বব্যাপী বৃদ্ধির উপরও প্রভাব

মুডি'স তাদের প্রতিবেদনে বলেছে যে, কেবলমাত্র ভারত নয়, অন্যান্য প্রধান অর্থনীতিও চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হতে পারে। আমেরিকা এবং চীন উভয় দেশের জন্যই বৃদ্ধির পূর্বাভাস কমানো হয়েছে। মুডি'স বলেছে ২০২৫ সালে আমেরিকার জিডিপি বৃদ্ধি ১% থাকার পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে, যেখানে চীনের জন্য এটি ৩.৮% থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। এর ফলে বিশ্ব অর্থনৈতিক পরিস্থিতির উপর নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে এবং এর প্রভাব ভারতের অর্থনীতিতেও পড়বে।

উত্তেজনার কারণে পাকিস্তানের অর্থনীতিতে চাপ

মুডি'স পাকিস্তানের অবস্থা নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। ভারত এবং পাকিস্তানের মধ্যে বর্ধমান উত্তেজনার ফলে পাকিস্তানের দুর্বল অর্থনীতিতে আরও চাপ পড়তে পারে। মুডি'সের বক্তব্য, যদি এই উত্তেজনা বৃদ্ধি পায়, তাহলে পাকিস্তানকে বিদেশী তহবিল সংগ্রহে অসুবিধা হতে পারে, যার ফলে পাকিস্তানের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের উপর চাপ পড়বে। এটি পাকিস্তানের আর্থিক স্থিতিশীলতার জন্য বড় হুমকি হতে পারে। পাকিস্তানকে আগামী কয়েক বছরে অত্যধিক পরিমাণ বৈদেশিক ঋণ পরিশোধ করতে হবে এবং যদি তহবিল বন্ধ হয়ে যায় তাহলে পাকিস্তানের অবস্থা আরও খারাপ হতে পারে।

ভারতের জন্য কী গুরুত্বপূর্ণ?

ভারতের জন্য এই প্রতিবেদন একটি সতর্কবার্তা হিসেবে এসেছে। যদিও ২০২৫ সালে জিডিপি বৃদ্ধিতে হ্রাসের সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে, তবে ২০২৬ সালে পরিস্থিতি উন্নত হতে পারে। ভারতকে বিশ্বব্যাপী এবং দেশীয় চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হবে। ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনা, বিশ্বব্যাপারী অনিশ্চয়তা এবং নীতিগত পরিবর্তন ভারতীয় অর্থনীতির জন্য আগামী সময়কে চ্যালেঞ্জিং করে তুলতে পারে।

Leave a comment