সিবিআই পরিচালক নিয়োগ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধী এবং সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি জাস্টিস সঞ্জীব খান্নার মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক হলেও কোনও একক নামে সম্মতি তৈরি হয়নি।
নতুন CBI প্রধান: দেশের সবচেয়ে প্রতিষ্ঠিত ও প্রভাবশালী তদন্ত সংস্থা কেন্দ্রীয় তদন্ত ব্যুরো (CBI)-এর নতুন পরিচালক নিয়োগ সংক্রান্ত পরিস্থিতি এখনও স্পষ্ট নয়। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর অধ্যক্ষতায় সোমবার অনুষ্ঠিত উচ্চ পর্যায়ের কমিটির বৈঠকে নতুন পরিচালক নির্বাচনে সর্বসম্মতিকা তৈরি হয়নি। এই নির্বাচন কমিটিতে লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধী এবং ভারতের প্রধান বিচারপতি জাস্টিস সঞ্জীব খান্নাও ছিলেন।
তিনটি শীর্ষ পদাধিকারীর এই গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে বেশ কয়েকজন জ্যেষ্ঠ আইপিএস কর্মকর্তার নাম নিয়ে আলোচনা হয়েছে, তবে কোনও একক নাম চূড়ান্ত হয়নি।
নির্বাচন প্রক্রিয়া: কীভাবে হয় CBI পরিচালকের নির্বাচন?
CBI পরিচালকের নিয়োগ একটি বিশেষ উচ্চ পর্যায়ের নির্বাচন কমিটির সুপারিশে হয়। এই কমিটি তিন সদস্যের হয়—প্রধানমন্ত্রী, লোকসভার বিরোধী দলনেতা এবং ভারতের প্রধান বিচারপতি। এই তিনজনের সম্মতিতে একজন কর্মকর্তাকে পরিচালক পদে নির্বাচিত করা হয়। কমিটিকে গৃহ মন্ত্রণালয় এবং কর্মী বিভাগের পক্ষ থেকে জ্যেষ্ঠতম আইপিএস কর্মকর্তাদের একটি তালিকা দেওয়া হয়, যাতে তাদের সেবা রেকর্ড, অভিজ্ঞতা এবং কর্মদক্ষতার বিস্তারিত বিবরণ থাকে। এই তালিকা থেকেই কমিটি কোনও একজন কর্মকর্তার নামে চূড়ান্ত সিলমোহর দেয়।
প্রতিযোগিতায় কারা কারা?
এইবার CBI পরিচালকের দৌড়ে বেশ কয়েকজন বিখ্যাত আইপিএস কর্মকর্তা রয়েছেন। সবচেয়ে এগিয়ে রয়েছেন ১৯৮৮ ব্যাচের আইপিএস কর্মকর্তা সঞ্জয় অরোরা, যিনি বর্তমানে দিল্লি পুলিশের কমিশনার। এছাড়াও রেলওয়ে সুরক্ষা বাহিনী (RPF)-এর প্রধান মনোজ যাদব এবং মধ্যপ্রদেশ পুলিশ প্রধান কৈলাশ মকওয়ানাও প্রধান দাবিদারদের মধ্যে রয়েছেন।
সূত্রের খবর, নির্বাচন কমিটিকে প্রদত্ত বিস্তৃত প্যানেলে DG SSB অমৃত মোহন প্রসাদ, DG BSF দলজিৎ চৌধুরী, DG CISF আরএস ভাট্টী এবং DG CRPF জিপি সিংহ-এর মতো নামও রয়েছে। তবে, এত বড় প্যানেল থাকা সত্ত্বেও একমত না হওয়া এইবারের নিয়োগ প্রক্রিয়াকে জটিল করে তুলছে।
কার্যকাল এবং সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশিকা
CBI পরিচালকের কার্যকাল সর্বোচ্চ পাঁচ বছর পর্যন্ত হতে পারে। সুপ্রিম কোর্ট এটাও স্পষ্ট করে দিয়েছে যে, কোনও কর্মকর্তাকে পরিচালক তখনই করা যাবে, যখন তার কার্যকালে অন্তত ছয় মাস বাকি থাকে। পাশাপাশি, দুই বছরের ন্যূনতম কার্যকাল নিশ্চিত করা বাধ্যতামূলক, যাতে সংস্থার স্বাধীনতা এবং স্থায়িত্ব প্রভাবিত না হয়।
যদি নির্বাচন কমিটি কোনও একক নামে সম্মতি করতে না পারে, তাহলে বর্তমান পরিচালকের কার্যকাল বাড়ানো যেতে পারে। এমনটাই বর্তমানে দেখা যাচ্ছে। বর্তমান CBI পরিচালক প্রবীণ সুদের কার্যকাল ২৫ মে ২০২৫ সালে শেষ হচ্ছে। যদি শীঘ্রই নতুন নামে সম্মতি না হয়, তাহলে সম্ভবত তাকে এক বছরের সেবা বৃদ্ধি দেওয়া হবে।
প্রবীণ সুদ কর্ণাটক ক্যাডারের ১৯৮৬ ব্যাচের আইপিএস কর্মকর্তা এবং মে ২০২৩ সালে তিনি CBI প্রধানের দায়িত্ব গ্রহণ করেছিলেন। এর আগে তিনি কর্ণাটকের DGP ছিলেন। তার কর্মশৈলী নিয়ে সরকার সন্তুষ্ট, তাই কার্যকাল বৃদ্ধির পথ সহজ বলে মনে করা হচ্ছে।