গেটসের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা: বিশ্বের অন্যতম প্রধান শিল্পোদ্যোগী বিল গেটস ঘোষণা করেছেন যে তিনি তার সম্পত্তির ৯৯% দান করবেন। তিনি জানিয়েছেন, মাত্র ১% সম্পত্তি তার সন্তানদের দেওয়া হবে। বিল গেটসের পরিকল্পনা হল আগামী ২০ বছরে এই অর্থ আফ্রিকায় স্বাস্থ্য, পুষ্টি ও শিক্ষা উন্নয়নে ব্যয় করা হবে। এই উদ্যোগটি বিল এবং মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে পরিচালিত হবে।
আফ্রিকায় স্বাস্থ্য ও শিক্ষার উপর ফোকাস
মাইক্রোসফটের সহ-প্রতিষ্ঠাতা এবং দাতব্য কাজের জন্য বিখ্যাত বিল গেটস সম্প্রতি ইথিওপিয়ার আদিস আবাবায় আফ্রিকান ইউনিয়নের সদর দপ্তরে একটি সম্মেলনের সময় তার সম্পত্তি নিয়ে বড় ঘোষণা দিয়েছেন। তিনি বলেছেন যে তিনি তার মোট সম্পত্তির খুব সামান্য অংশই তার সন্তানদের জন্য রেখে দেবেন এবং বাকি ৯৯% অর্থ দান করবেন। এই অর্থ মূলত আফ্রিকায় স্বাস্থ্য ও শিক্ষা ব্যবস্থা শক্তিশালী করার জন্য ব্যবহার করা হবে।
গেটস মনে করেন সুস্থ জীবন ও ভালো শিক্ষা উন্নয়নের ভিত্তি। তিনি বলেছেন, “এই দুটি ক্ষেত্রে বিনিয়োগ করে আমরা আফ্রিকার মানুষের ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে পারি, যাতে তারা দেশের উন্নয়নে অবদান রাখতে পারে।”
৯৯% সম্পত্তি দান, সন্তানদের মাত্র ১%
ব্লুমবার্গ বিলিওনিয়ার্স ইন্ডেক্স অনুসারে, বিল গেটসের বর্তমান মোট সম্পত্তি ১৭৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, এবং ধারণা করা হচ্ছে যে ২০৪৫ সালের মধ্যে এটি ২০০ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছাতে পারে। গেটস স্পষ্ট করে বলেছেন যে এই আনুমানিক অর্থের মাত্র ১% তার সন্তানদের দেওয়া হবে। বাকি ৯৯% সম্পত্তি, অর্থাৎ প্রায় ১৯৮ বিলিয়ন ডলার, দান করা হবে।
এই দান কাজ ধাপে ধাপে আগামী ২০ বছরে সম্পন্ন করা হবে। গেটস এটিকে “একটি রোমাঞ্চকর যাত্রা” বলে অভিহিত করেছেন এবং বলেছেন যে তিনি এই উদ্যোগের মাধ্যমে আফ্রিকায় সামাজিক-অর্থনৈতিক উন্নয়ন আনতে চান।
মাতৃত্ব ও শিশু স্বাস্থ্য পাবে অগ্রাধিকার
গেটস ফাউন্ডেশন বিশেষ করে মাতৃত্ব ও শিশু পুষ্টির উপর মনোযোগ দেবে। গেটস জানিয়েছেন, যদি কোন মা গর্ভাবস্থার আগে এবং গর্ভাবস্থার সময় যথাযথ পুষ্টি ও স্বাস্থ্যসেবা পান, তাহলে শিশুর জন্য ইতিবাচক ফলাফল দেখা যায়।
গেটস আরও বলেছেন যে শিশুদের জীবনের প্রথম চার বছর পুষ্টি ও বিকাশের দিক থেকে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। এই সময় যদি সঠিক যত্ন নেওয়া হয় তাহলে তাদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশ আরও ভালোভাবে হতে পারে।
শিক্ষাকে বলা হয়েছে পরিবর্তনের চাবিকাঠি
গেটস শিক্ষাকে সমাজে পরিবর্তন আনার গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম বলে উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেছেন যে মানসম্পন্ন শিক্ষার মাধ্যমে তরুণদের সম্ভাবনা বৃদ্ধি পায় এবং তারা তাদের সম্প্রদায়ের উন্নয়নের জন্য অবদান রাখতে পারে। গেটসের পরিকল্পনা হল শিক্ষার ক্ষেত্রে বিশেষ মনোযোগ দেওয়া হবে, বিশেষ করে গ্রামীণ ও পিছিয়ে পড়া অঞ্চলে।
