অদানি গ্রুপের অর্থনৈতিক শক্তি: পাকিস্তানের অর্থনীতির চেয়ে বড়?

🎧 Listen in Audio
0:00

নয়াদিল্লি: ভারতের বিখ্যাত শিল্পপতি হর্ষ গোয়েনকার সাম্প্রতিক টুইট ইন্টারনেটে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। তিনি ভারতের অদানি গ্রুপের অর্থনৈতিক শক্তির তুলনা পাকিস্তানের মোট অর্থনীতির সাথে করে বেশ কিছু তথ্য শেয়ার করেছেন। তার এই পোস্ট সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে এবং এর প্রতিক্রিয়াও দেখা গেছে।

একটি কোম্পানি বনাম একটি দেশ

হর্ষ গোয়েনকা মাইক্রোব্লগিং সাইট X (পূর্বে টুইটার) এ লিখেছেন, "কেবলমাত্র একটি ভারতীয় কোম্পানি, পুরো দেশের চেয়েও বড়। আর তারা আমাদের সাথে লড়াই করার সাহস করে!" এর সাথে তিনি অদানি গ্রুপ এবং পাকিস্তানের অর্থনৈতিক ক্ষমতার তুলনা করে একটি ছবিও শেয়ার করেছেন।

বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রে তুলনা:

  1. বাজার মূলধন: অদানি গ্রুপের মোট বাজার মূলধন ১৬১ বিলিয়ন ডলার, যখন পাকিস্তানের মোট জিডিপি প্রায় ৫০ বিলিয়ন ডলারের কাছাকাছি।
  2. নবায়নযোগ্য শক্তি: অদানি গ্রুপ ১০.৯ GW ক্ষমতার নবায়নযোগ্য শক্তির ব্যবস্থাপনা করে, যা পাকিস্তানের মোট ৯-১০ GW উৎপাদনের চেয়ে বেশি।
  3. গ্রিন হাইড্রোজেন: অদানি গ্রুপ এই ক্ষেত্রে বিশ্ব নেতৃত্বের লক্ষ্য রাখে, যখন পাকিস্তানের এতে কোনো উল্লেখযোগ্য উপস্থিতি নেই।
  4. বন্দর পরিচালনা: অদানি গ্রুপ ভারতে ১৫টি বন্দর পরিচালনা করে যার মোট ক্ষমতা ৬২৭ মিলিয়ন মেট্রিক টন, অন্যদিকে পাকিস্তানের মাত্র তিনটি প্রধান বন্দর রয়েছে যার ক্ষমতা ১৮৫ MMT।

সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রতিক্রিয়া

গোয়েনকার এই টুইটে মানুষের মতামত বিভক্ত। অনেক ব্যবহারকারী এটাকে ভারতের অর্থনৈতিক শক্তির প্রতীক বলে মনে করেছেন, আবার অনেকে এটাকে একটি দেশ এবং একটি কোম্পানির তুলনাকে অত্যন্ত সরলীকরণ বলে অভিহিত করেছেন। তাদের মতে, ভূ-রাজনৈতিক সমস্যার সমাধান এই ধরণের তুলনার মাধ্যমে করা যায় না।

পূর্বেও বক্তব্য দিয়েছেন

হর্ষ গোয়েনকা এর আগেও ভারত-পাকিস্তান সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় স্পষ্ট মতামত দিয়েছেন। অন্য একটি টুইটে তিনি মজার ছলে বলেছিলেন যে, যদি পাকিস্তান ভারতের কাছে যুদ্ধে পরাজিত হয়, তাহলে তাদের ভারতীয় খাবার, চাকরি এবং বিনোদনের সুযোগ পাওয়া যাবে।

তুরস্ক ও আজারবাইজান বর্জনের আহ্বান

সম্প্রতি পুলওয়ামা সন্ত্রাসবাদী হামলার পর পাকিস্তানের সমর্থনকারী তুরস্ক ও আজারবাইজানকে নিয়েও গোয়েনকা ভারতীয় নাগরিকদের এসব দেশ ভ্রমণ না করার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি জানিয়েছেন ২০২৪ সালে ভারতীয় পর্যটকরা এই দেশগুলির অর্থনীতিতে ৪০০০ কোটি টাকার বেশি অবদান রেখেছেন। তার মতে, ভারত এবং বিশ্বে আরও অনেক সুন্দর স্থান আছে, তাই এই দেশগুলির বিকল্প সহজেই পাওয়া যায়।

হর্ষ গোয়েনকার এই টুইট যদিও এক নজরে তুলনা মনে হতে পারে, কিন্তু এর মাধ্যমে ভারতের ব্যক্তিগত কোম্পানিগুলির ক্রমবর্ধমান বিশ্বব্যাপী ক্ষমতা এবং অর্থনৈতিক শক্তিকে তুলে ধরা হয়েছে। এটি দেখায় যে ভারতের কর্পোরেট জগৎ এখন বিশ্বব্যাপী প্রভাব ফেলার অবস্থানে পৌঁছেছে।

Leave a comment