বির্তকে জড়ালেন জনপ্রিয় ইউটিউবার রণবীর আল্লাহাবাদিয়া

🎧 Listen in Audio
0:00

ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে সাম্প্রতিক যুদ্ধবিরতি চুক্তির পর যেখানে উভয় দেশের সরকারই উত্তেজনা কমাতে চেষ্টা করছে, সেখানেই জনপ্রিয় ইউটিউবার এবং পডকাস্টার রণবীর আল্লাহাবাদিয়া উর্ফে BeerBiceps নতুন এক বিতর্কে জড়িয়ে পড়েছেন।

India Pakistan Ceasefire: খ্যাতনামা পডকাস্টার এবং ইউটিউবার রণবীর আল্লাহাবাদিয়া (Ranveer Allahbadia) আবারও বিতর্কে জড়িয়ে পড়েছেন। সম্প্রতি ভারত এবং পাকিস্তানের মধ্যে যুদ্ধবিরতি ঘোষণার অব্যবহিত পর রণবীর এমন একটি পোস্ট শেয়ার করেছেন যেখানে তিনি প্রতিবেশী দেশের মানুষের কাছে ক্ষমা চেয়েছেন। এই পোস্ট নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় হইচই পড়ে গেছে এবং ব্যবহারকারীরা তাঁকে তীব্রভাবে ট্রোল করতে শুরু করেছেন।

দেশের জনতার ক্ষোভ দেখে রণবীর অবিলম্বে পোস্টটি ডিলিট করে দিয়েছেন, কিন্তু ততক্ষণে তাঁর বক্তব্য সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে গেছে। অনেকে এটিকে দেশদ্রোহী মানসিকতা বলে দাবি করছেন, আবার কেউ কেউ এটিকে ভুল সময়ে নেওয়া পদক্ষেপ বলে মনে করছেন।

রণবীরের আবেগঘন বার্তা, ট্রোলদের আক্রমণ

১০ মে রণবীর ইনস্টাগ্রামে একটি দীর্ঘ পোস্ট শেয়ার করেছেন যেখানে তিনি পাকিস্তানের সাধারণ মানুষের কাছে ক্ষমা চেয়েছেন এবং ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে ঘৃণার রাজনীতি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। তিনি লিখেছেন, প্রিয় পাকিস্তানি ভাই ও বোনেরা, আমি জানি এই পোস্টের জন্য আমাকে আমার দেশবাসীর সমালোচনা সহ্য করতে হবে, কিন্তু এটা বলা জরুরি যে প্রতিটি ভারতীয়ের হৃদয়ে পাকিস্তানের জন্য ঘৃণা নেই।

এই পোস্টে তিনি স্পষ্ট করে বলেছেন যে তাঁর লক্ষ্য পাকিস্তানের সাধারণ মানুষ নয়, বরং সেখানকার সেনাবাহিনী এবং গোয়েন্দা সংস্থা ISI। তিনি অভিযোগ করেছেন যে এই সংস্থাই ভারতে সন্ত্রাসবাদ ছড়ানোর জন্য দায়ী এবং উভয় দেশের মধ্যে ঘৃণার মূল কারণ।

এই যুদ্ধ জনতা বনাম জনতা নয়

রণবীর তার পোস্টে লিখেছেন, ভারত এবং পাকিস্তানের সাধারণ জনতা শান্তি চায়। কিন্তু পাকিস্তান সরকার, সেনাবাহিনী এবং ISI-এর কার্যকলাপ আমাদের বাধ্য করে আমাদের দেশের রক্ষার জন্য কঠোর পদক্ষেপ নিতে। তিনি কিছু তথ্যের উদ্ধৃতি দিয়ে পাকিস্তানে রাষ্ট্র-প্রায়োজিত সন্ত্রাসবাদের ঘটনা উন্মোচন করার চেষ্টা করেছেন, যার মধ্যে জৈশ-ই-মোহাম্মদ-এর মতো সন্ত্রাসী সংগঠনের সাথে সরকারের कथিত সম্পৃক্ততা অন্তর্ভুক্ত ছিল।

পোস্টে রণবীর লিখেছেন, দিল থেকে দুঃখিত যদি মনে হয় আমরা ঘৃণা ছড়াচ্ছি। আমাদের উদ্দেশ্য শান্তি। মিডিয়া, ভারতীয় হোক বা পাকিস্তানী, এখন শুধু মিথ্যা বিক্রি করছে। কিন্তু এই ক্ষমা প্রার্থনা ভারতীয় সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারকারীদের পছন্দ হয়নি। টুইটার (এখন এক্স), ইনস্টাগ্রাম এবং ইউটিউবে ব্যবহারকারীরা রণবীরকে পাকহিপোক্রিসি এবং বিশ্বাসঘাতকতা-এর মতো শব্দ দিয়ে আক্রমণ করেছেন। অনেক ব্যবহারকারী তাঁকে শান্তির নামে ভান করার অভিযোগ করেছেন, আবার কেউ কেউ তাঁকে পাকিস্তানের এজেন্ডার সমর্থক বলেও অভিহিত করেছেন।

পোস্ট সরিয়ে নেওয়া হলেও বিতর্ক অব্যাহত

ট্রোলদের চাপের মুখে রণবীর তার ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্ট থেকে পোস্টটি সরিয়ে নিয়েছেন, কিন্তু ততক্ষণে পোস্টের স্ক্রিনশট ইন্টারনেটে ভাইরাল হয়ে গেছে। অনেকে তার কথার সমর্থন করেছেন, বিশেষ করে যারা দক্ষিণ এশিয়ায় স্থায়ী শান্তির পক্ষে। কিন্তু অন্যদিকে, অধিকাংশ মানুষের মতে এটি পাকিস্তানের প্রতি নমনীয়তা দেখানোর সময় নয়, বরং ঐক্যবদ্ধ এবং কঠোর অবস্থান নেওয়ার সময়।

এই বিতর্কের পরে বারবার একটি প্রশ্ন উঠে আসছে—রণবীর আল্লাহাবাদিয়া কি সত্যিই শান্তি এবং বুদ্ধিমত্তার কথা বলছিলেন নাকি এটি সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাটেনশন এবং আলোচনা আকর্ষণ করার চেষ্টা ছিল? রণবীরের চিত্র একটি সংবেদনশীল এবং চিন্তাশীল কন্টেন্ট ক্রিয়েটর হিসেবে ছিল, কিন্তু এবারের ঘটনা অত্যন্ত সংবেদনশীল হয়ে উঠেছে, কারণ এটি সরাসরি জাতীয় সুরক্ষা এবং যুদ্ধবিরতির মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের সাথে জড়িত।

Leave a comment