পুণে হাইওয়ে: এক চমৎকার ধারণার অসম্পূর্ণ বাস্তবায়ন

🎧 Listen in Audio
0:00

বিলিয়াম শেক্সপিয়ারের ‘রোমিও জুলিয়ট’, ‘ম্যাকবেথ’, ‘হ্যামলেট’ এবং ‘ওথেলো’র মতো বিশ্ববিখ্যাত নাটকগুলির উপর বিশ্বজুড়ে অনেক ছবি নির্মিত হয়েছে। কিন্তু লেখক-পরিচালক রাহুল ডা কুনহা তার জনপ্রিয় নাটক ‘পুণে হাইওয়ে’ বড় পর্দায় নিয়ে এসে নিজের আলাদা পরিচয় তৈরি করেছেন।

  • মুভি রিভিউ: পুণে হাইওয়ে
  • অভিনয়: অমিত সাধ, জিম সার্ব, অনুবব পাল, মঞ্জরী ফাডনিস, কেতকী নারায়ণ
  • পরিচালক: ব্যাগস ভার্গব কৃষ্ণা, রাহুল ডা কুনহা
  • বিভাগ: হিন্দি, সাসপেন্স, মিস্ট্রি, ক্রাইম
  • দৈর্ঘ্য: ২ ঘন্টা ১ মিনিট
  • সমালোচকদের রেটিং: ২০/৫
  • প্রেক্ষকদের রেটিং: NA

পুণে হাইওয়ে মুভি রিভিউ: বিলিয়াম শেক্সপিয়ারের ক্লাসিক ‘রোমিও ও জুলিয়ট’, ‘ম্যাকবেথ’, ‘হ্যামলেট’ এবং ‘ওথেলো’র উপর অনেক ছবি নির্মিত হয়েছে, কিন্তু লেখক-পরিচালক রাহুল ডা কুনহা তার জনপ্রিয় নাটক ‘পুণে হাইওয়ে’ বড় পর্দায় নিয়ে এসে একটা আলাদা ধরণের চেষ্টা করেছেন। এই ছবিটি একটি মার্ডার মিস্ট্রির চারপাশে ঘোরে, যেখানে বন্ধুত্ব, অপরাধ এবং নৈতিক দ্বন্দ্বের জটিল স্তর বুনো হয়েছে। তবে, দুর্বল চিত্রনাট্য এবং ধীর গতির গল্পের কারণে ছবিটি দর্শকদের কাছে সেই ধাক্কা দিতে পারেনি যা আশা করা হয়েছিল।

‘পুণে হাইওয়ে’র গল্প: বন্ধুত্ব, রাজনীতি এবং রহস্যের সমাহার

ছবির গল্প চারজন বাল্য বন্ধু – খান্ডু (অমিত সাধ), বিষ্ণু (জিম সার্ব), নিক্কি (অনুবব পাল), এবং বাবু (হিমাংশু বালপান্ডে)-র চারপাশে গোছানো। এরা সবাই একসাথে বড় হয়েছে এবং তাদের বন্ধুত্ব বেশ গভীর। গল্পে টুইস্ট আসে যখন বাবুর উপর প্রাণঘাতী হামলা হয়, এবং এই হামলার পেছনে একজন ক্ষমতাসীন নেতা মানসেকার (শিশির শর্মা)-র হাত থাকার ধারণা করা হয়।

খান্ডু নিজেই মানসেকারের জন্য কাজ করে, যার ফলে বিষ্ণু এবং খান্ডুর মধ্যে নৈতিক প্রশ্ন উঠে, কিন্তু তাদের বন্ধুত্ব অক্ষুণ্ণ থাকে। বিষ্ণুর কারণে খান্ডুর বোন নাটাসা (মঞ্জরী ফাডনিস)-র মন ভেঙে যায়, কিন্তু তাও তাদের বন্ধুত্বের উপর প্রভাব ফেলতে পারে না। কিন্তু সবকিছু জটিল হয়ে ওঠে যখন মানসেকারের মেয়ে মোনা (কেতকী নারায়ণ)-র হত্যা হয়। হত্যার সত্য এবং চার বন্ধুর এই ঘটনার সাথে জড়িত থাকা ছবির মূল সাসপেন্সের কেন্দ্রবিন্দু। শেষ পর্যন্ত, ছবিতে প্রশ্ন উঠে, কে হত্যা করেছে এবং কেন?

দুর্বল চিত্রনাট্য, অসম্পূর্ণ গল্প

ছবির সবচেয়ে বড় ঘাটতি হল এর চিত্রনাট্য এবং চিত্রনাট্যের দুর্বল গঠন। মার্ডার মিস্ট্রি এবং থ্রিলারের ছোঁয়া দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে, কিন্তু গল্পে অনেক জায়গায় ধীর গতি লক্ষ্য করা যায়। সাসপেন্স শেষ পর্যন্ত বজায় থাকে, কিন্তু তার উপস্থাপনা এতটাই প্রভাবশালী নয় যে দর্শকদের সম্পূর্ণরূপে আকর্ষণ করতে পারে। অনেক চরিত্র অসম্পূর্ণ থেকে যায়, বিশেষ করে খান্ডু এবং নাটাসার পারিবারিক পটভূমি নিয়ে বেশি কাজ করা হয়নি।

নিক্কির চরিত্র আকর্ষণীয় দিকে ভরা, বিশেষ করে তার মায়ের সাথে সম্পর্ক এবং তার মানসিক প্রভাব। কিন্তু এই চরিত্রের স্বভাব পুরো গল্পে স্থির থাকে না। কখনো সে স্বাভাবিক, আবার কখনো হঠাৎ অদ্ভুত আচরণ করে, যার ফলে চরিত্রে ধারাবাহিকতার অভাব বোঝা যায়।

বিষ্ণু ছাড়া অন্যান্য বন্ধুদের ব্যক্তিত্বের গভীরেও যাওয়া যেতে পারত। খান্ডুর চরিত্র নিয়েও গল্পে দ্বিধা স্পষ্ট দেখা যায়, তাকে ইতিবাচক দেখাতে হবে নাকি নেতিবাচক, যার ফলে চরিত্রে প্রাণ ভর্তি হয় না।

অভিনয়ের ছাপ

যেখানে গল্প দুর্বল হয়, সেখানে অভিনয়ের দিক থেকে জিম সার্ব তার ভূমিকার দ্বন্দ্বকে কার্যকরভাবে উপস্থাপন করেছেন। অমিত সাধও তার চরিত্রে পুরোপুরি পরিশ্রম দেখিয়েছেন, কিন্তু চিত্রনাট্যের সীমাবদ্ধতার কারণে তিনি সম্পূর্ণরূপে উজ্জ্বল হতে পারেননি। অনুবব পাল এবং কেতকী নারায়ণও ভালো অভিনয় করেছেন, যদিও তাদের চরিত্রগুলিতে আরও বিস্তার দেওয়া যেতে পারত।

মঞ্জরী ফাডনিস সীমিত সময়ে ভালো অভিনয় করেছেন। অন্যদিকে, ইন্সপেক্টর পেঠের চরিত্রে সুদীপ মোডক অনেক সময় অভিনয়ের অতিরিক্ততা করেছেন, যা ছবির গুরুত্ব কিছুটা কমিয়ে দেয়। শিশির শর্মা এবং রজিত কাপুরের মতো শিল্পীরাও গড় অভিনয় করেছেন।

প্রযুক্তিগত দিক এবং সঙ্গীত

প্রযুক্তিগত দিক থেকে ছবিটি গড়। ব্যাকগ্রাউন্ড স্কোর এবং সম্পাদনায় উন্নতির সুযোগ স্পষ্ট। সঙ্গীত ছবির মুডকে সমর্থন করতে ব্যর্থ বলে মনে হয় এবং সম্পাদনায় কিছু জায়গায় গল্পের গতি কমে যায়। ‘পুণে হাইওয়ে’ এমন একটি মার্ডার মিস্ট্রি যা গল্পের সম্ভাবনার পরও দুর্বল উপস্থাপনার কারণে নিজের ছাপ রাখতে ব্যর্থ হয়।

যদি চিত্রনাট্য কিছুটা শক্তিশালী হতো এবং চরিত্রগুলিতে গভীরতা থাকত, তাহলে এটি একটি প্রভাবশালী থ্রিলার হতে পারত। তবুও, যারা মার্ডার মিস্ট্রি এবং সাসপেন্সের ছবিতে আগ্রহী, তারা এটি একবার দেখতে পারেন।

Leave a comment