জাতীয় আঙ্গুরের পপসিকল দিবস: ঠান্ডা, মিষ্টি স্মৃতি এবং আনন্দের উৎসব

🎧 Listen in Audio
0:00

গ্রীষ্মের আগমনীতেই সকলেরই ঠান্ডা-মিষ্টি কিছু খাওয়ার ইচ্ছে হয়। এমন সময় যদি হাতে থাকে একটি ঠান্ডা, রসালো, আঙ্গুরের স্বাদের পপসিকল, তাহলে তো দিনই ভালো হয়ে যায়! আর যখন কথা হচ্ছে ন্যাশনাল গ্রেপ পপসিকল ডে-এর, অর্থাৎ আঙ্গুরের স্বাদের পপসিকলকে উৎসর্গীকৃত একটি বিশেষ দিনের, তখন উৎসব তো হবেই।

প্রতি বছর ২৭শে মে আমেরিকায় ন্যাশনাল গ্রেপ পপসিকল ডে পালিত হয়, কিন্তু এর আনন্দ এবং ঠান্ডাটা পুরো বিশ্বেই উপভোগ করা যায়। ছোট থেকে বড় সকলের কাছে এই দিনটি মিষ্টি ঠান্ডা এবং শৈশবের স্মৃতির সঙ্গে পরিপূর্ণ।

পপসিকলের ইতিহাস – এক শিশু কারণ

জানেন কি পপসিকল একটি দুর্ঘটনার ফলে তৈরি হয়েছিল? প্রায় ১৯০৫ সালের কথা, যখন ১১ বছরের এক শিশু, ফ্রাঙ্ক এপারসন, সান ফ্রান্সিসকোতে তার বাড়ির বাইরে কিছু পানি এবং ফ্লেভারিং পাউডার দিয়ে সোডা তৈরির চেষ্টা করছিল। সে একটি কাঠের ছড়ি দিয়ে তা নাড়িয়েছিল এবং তারপর ভুলে বাইরে রেখে ভেতরে চলে গিয়েছিল। রাতে যখন তাপমাত্রা নেমে গেল, তখন সেই মিশ্রণ ছড়ির সাথে জমে গেল। পরের দিন সকালে যখন সে উঠল, তখন সে দেখল একটি ঠান্ডা মিষ্টি বরফের ছড়ি তৈরি হয়ে গেছে – এবং এটাই হলো বিশ্বের প্রথম পপসিকল!

পরে যখন সে বড় হল, তখন সে এই আইডিয়াটিকে ব্যবসায় পরিণত করে এবং ১৯২০-এর দশকে মেলা এবং পার্কে এটি বিক্রি শুরু করে। এভাবেই পপসিকল গ্রীষ্মের একটি জনপ্রিয় মিষ্টান্ন হয়ে উঠল, যার মধ্যে আঙ্গুরের স্বাদ সবার প্রিয় হয়ে উঠেছিল।

আঙ্গুরের পপসিকলের বিশেষত্ব

আঙ্গুরের স্বাদ সেই ক্লাসিক স্বাদের মধ্যে একটি, যা সবসময় প্রতি প্রজন্মের কাছেই পছন্দের। এর স্বাদ শুধুমাত্র তাজা ভাব দেয় না, বরং এর মধ্যে এক ধরণের মিষ্টি এবং হালকা টক স্বাদ রয়েছে, যা গ্রীষ্মে একেবারেই পারফেক্ট লাগে। ছোটদের এটির রঙও খুব পছন্দ – গাঢ় বেগুনি, যা চোখকেও ঠান্ডা ভাব দেয়।

কিভাবে পালন করবেন ন্যাশনাল গ্রেপ পপসিকল ডে?

নিজেই একটা গ্রেপ পপসিকলের আনন্দ নিন: সবচেয়ে সহজ উপায় হলো নিকটস্থ গ্রোসারি স্টোর বা সুপারমার্কেট থেকে গ্রেপ ফ্লেভারের পপসিকল কিনে নেওয়া। যদি মাল্টিপ্যাকে পাওয়া যায়, তাহলে বেগুনি রঙের পপসিকল বেছে নিন এবং এর আনন্দ উপভোগ করুন। চাইলে পরিবার এবং বন্ধুদের সাথে ভাগ করে নিন – একসাথে খাওয়া এবং ঠান্ডা পাওয়া আরও মজাদার।

ঘরে তৈরি করুন গ্রেপ পপসিকল: যদি আপনি কিছু নতুন চেষ্টা করতে চান, তাহলে ঘরে নিজেই পপসিকল তৈরি করাও একটি চমৎকার আইডিয়া। শুধু আপনার দরকার কিছু আঙ্গুরের রস বা আঙ্গুরের স্বাদের পানীয়, এবং তা কোনো মোল্ড (ছাঁচ) এ ঢেলে ফ্রিজে জমিয়ে রাখুন। যদি মোল্ড না থাকে, তাহলে বরফের ট্রে এবং টুথপিকও কাজে লাগতে পারে। ছোটদের এই কাজটি খুব পছন্দ হয় – এবং সাথে সাথে আপনি তাদের স্বাস্থ্যকর খাবার তৈরি করাও শেখাতে পারেন।

বন্ধু এবং ছেলেমেয়েদের সাথে ভাগ করে নিন মজার তথ্য: পপসিকল সম্পর্কে কিছু মজার তথ্য আছে, যা আপনি এই দিনে সকলকে বলতে পারেন:

  • 'Popsicle' আমেরিকায় একটি ব্র্যান্ডের নাম, বিশ্বে এটিকে সাধারণত 'ice pop' বা 'ice lolly' বলা হয়।
  • সবচেয়ে প্রথম যেসব ফ্লেভারে পপসিকল এসেছিল, তার মধ্যে grape, cherry, lemon, banana, orange, root beer এবং watermelon ছিল।
  • ২০১২ সালে গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ড অনুযায়ী, এক মিনিটে ৬টি পপসিকল খাওয়ার রেকর্ড তৈরি করা হয়েছিল।

ছোটদের জন্য বিশেষ দিন

এই দিনটি আপনি ছোটদের সাথে আরও মজাদার করে উদযাপন করতে পারেন। কিছু আইডিয়া হতে পারে:

  • পপসিকল পার্টি করুন, যেখানে শুধুমাত্র ঠান্ডা মিষ্টান্ন এবং পানীয় থাকবে।
  • ছোটরা নিজেরাই পপসিকল তৈরি করুক এবং ক্রিয়েটিভ ফ্লেভার চেষ্টা করুক।
  • ছোটদের বলুন তারা তাদের শৈশবের সবচেয়ে স্মরণীয় গ্রীষ্মের ছুটির গল্প বলুক – পপসিকলের সাথে।

এই দিনের বিশেষত্ব কি?

আমাদের সকলের শৈশবে কিছু বিশেষ মিষ্টি এবং ঠান্ডা খাবারের স্মৃতি অবশ্যই থাকে, যার মধ্যে পপসিকলও একটি। পপসিকল শুধুমাত্র একটি ঠান্ডা এবং মিষ্টি খাবার নয়, বরং এটি শৈশবের আনন্দ, গ্রীষ্মের মজা এবং বন্ধুদের সাথে কাটানো সুন্দর মুহূর্তের স্মৃতি জাগ্রত করে। ন্যাশনাল গ্রেপ পপসিকল ডে সেই সুন্দর স্মৃতিগুলিকে আবার নতুন করে উপলব্ধি করার সুযোগ দেয়।

এই দিনের অর্থ শুধুমাত্র পপসিকল খাওয়া নয়, বরং তা বন্ধু এবং পরিবারের সাথে ভাগ করে নেওয়াও। এই দিনটি আমাদের শৈশবের মিষ্টি স্মৃতিগুলিকে স্মরণ করার এবং সেই আনন্দগুলিকে আবার অনুভব করার সুযোগ দেয়। ন্যাশনাল গ্রেপ পপসিকল ডে, মিষ্টান্ন এবং আনন্দকে একত্রিত করে এমন একটি বিশেষ দিন।

ন্যাশনাল গ্রেপ পপসিকল ডে আমাদের গ্রীষ্মের ঠান্ডা এবং শৈশবের মিষ্টি স্মৃতিগুলিকে স্মরণ করিয়ে দেয় এমন একটি বিশেষ দিন। এই দিনটি শুধুমাত্র সুস্বাদু পপসিকল উপভোগ করার নয়, বরং আনন্দ ভাগ করে নেওয়ার এবং একসাথে হাসিরও সুযোগ দেয়। এটি পালন করে আমরা আমাদের জীবনে সরল আনন্দগুলিকে আবার জীবন্ত করে তুলি।

Leave a comment