প্রতি বছর ২১শে জুন পালিত হয় বিশ্ব মার্টিনি দিবস (World Martini Day)। যদি আপনি ক্লাসিক এবং সরল পানীয়ের প্রেমী হন, তাহলে এই দিনটি আপনার জন্য বিশেষ। জেমস বন্ড স্টাইলে "শেকেন, নট স্টার্ড" মার্টিনি পান করার আলাদা একটা আনন্দ আছে। চাই অলিভের সাথে নিন, লেবুর টুইস্টের সাথে নিন অথবা শুধু বরফের উপর, মার্টিনি দিবস বন্ধুদের সাথে উৎসব পালনের একটি চমৎকার অজুহাত।
মার্টিনি দিবস কেন বিশেষ?
১. সাদামাটাতেই লুকিয়ে আছে স্টাইল
মার্টিনিতে মাত্র দুটি প্রধান উপাদান থাকে – जिन (Gin) এবং ভার্মাউথ (Vermouth)। এই দুটিকে মিশিয়ে একটি গ্লাসে পরিবেশন করা হয়, উপরে একটি অলিভ অথবা লেবুর ছাল। বাস, আপনার পানীয় তৈরি। কোনও ফ্যান্সি চিনি, ফলের পিউরি অথবা সাজসজ্জা নেই। এই সরলতাই একে এত রাজকীয় এবং ক্লাসিক করে তোলে।
২. স্বাদের অনন্যতা
জিনের সুগন্ধিত জুনিপার বেরির স্বাদ এবং ভার্মাউথের শুষ্ক স্বাদ মিলেমিশে একটা এমন ভারসাম্য তৈরি করে, যা খুব কম ককটেলের ক্ষেত্রে দেখা যায়। যদি আপনার जिन পছন্দ না হয়, তাহলে আপনি ভডকা মার্টিনিও চেষ্টা করতে পারেন।
৩. জেমস বন্ড স্টাইল
'শেকেন, নট স্টার্ড'—এই কথাগুলি চলচ্চিত্র প্রেমীদের ভালোভাবে মনে থাকবে। মার্টিনির সবচেয়ে বড় বৈশিষ্ট্য হল এটি পান করতেই আপনার ক্লাসিক চলচ্চিত্রের অনুভূতি হয়। বন্ডের মতো স্টাইলে মার্টিনি ধরা, ঈষৎ করে পান করা এবং শান্ত থাকা – এটাই এর সৌন্দর্য।
বিশ্ব মার্টিনি দিবস কীভাবে উদযাপন করবেন?
১. ঘরে তৈরি করুন পারফেক্ট মার্টিনি
আপনার বন্ধুদের সাথে একটি ছোট্ট হোম ককটেল পার্টি করুন। প্রত্যেকে তার প্রিয় মার্টিনি রেসিপি নিয়ে আসুক। কেউ ভডকা মার্টিনি তৈরি করুক, কেউ जिन ভিত্তিক। এভাবে আপনি শুধুমাত্র একে অপরের পছন্দ জানতে পারবেন না, নতুন রেসিপিও চেষ্টা করতে পারবেন।
টীপ
যদি প্রথমবার চেষ্টা করছেন, তাহলে ক্লাসিক মার্টিনি রেসিপি নিন:
- ২ অংশ जिन
- ১ অংশ ড্রাই ভার্মাউথ
- বরফের সাথে মিশিয়ে নিন এবং অলিভ অথবা লেবুর টুইস্ট দিয়ে সাজিয়ে নিন।
২. বার হপিং করুন
আপনার বিশেষ বন্ধুদের সাথে সাজগোজ করে শহরের চমৎকার বারগুলিতে যান। প্রতিটি বারে একটি মার্টিনি চেষ্টা করুন, তার রিভিউ দিন এবং শেষে সিদ্ধান্ত নিন কোন বারটি সবচেয়ে ভালো মার্টিনি পরিবেশন করেছে। যদি কোনও বারে পিয়ানো অথবা লাইভ সিঙ্গার থাকে তাহলে বোনাস পয়েন্টস!
মার্টিনির ইতিহাস
মার্টিনির ইতিহাস কিছুটা বিতর্কিত, তবে মনে করা হয় সর্বপ্রথম ১৮৮৭ সালে সান ফ্রান্সিসকোর একজন বারটেন্ডারের বইতে 'মার্টিনেজ' নামে এর উল্লেখ পাওয়া গেছে।
১৯১১ সালে নিউইয়র্কের মার্টিনি দি অরমা দি তাজ্জিয়া নামক বারটেন্ডার এটিকে जिन, ভার্মাউথ এবং অরেঞ্জ বিটারসের সাথে পরিবেশন করেন এবং একটি নতুন ককটেলের জন্ম হয়।
ধীরে ধীরে এই পানীয় ম্যানহাটানের উচ্চপদস্থ সমাজের লোকদের মধ্যে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে এবং আজও তার মর্যাদা অক্ষুণ্ণ রয়েছে।
মার্টিনি গ্লাসের রহস্য
মার্টিনি যে বিশেষ গ্লাসে পরিবেশন করা হয়, তাও এর ক্লাস এবং মার্জিততার প্রতীক। পাতলা লম্বা ডাঁটা এবং চওড়া শঙ্কু আকৃতির গ্লাস শুধু দেখতে স্টাইলিশ নয়, এর নকশাও ব্যবহারিক। কারণ মার্টিনি বরফ ছাড়া পরিবেশন করা হয়, ডাঁটা ধরে পান করলে হাতের উষ্ণতা পানীয় পর্যন্ত পৌঁছায় না এবং এটি ঠান্ডা থাকে।
মার্টিনির বিখ্যাত ভক্তরা
মার্টিনি সময়ের সাথে সাথে অনেক বড় বড় নামকে তার ভক্ত করেছে।
- জেমস বন্ড (অবশ্যই!)
- এর্নেস্ট হেমিংওয়ে – নোবেল পুরষ্কার বিজয়ী লেখক
- ক্লার্ক গেবল – হলিউডের রাজা
- হামফ্রি বোগার্ট – যার শেষ কথা ছিল: 'I should never have switched from Scotch to Martinis.'
- ফ্রাঙ্কলিন ডি. রুজভেল্ট – আমেরিকান রাষ্ট্রপতি
বিশ্ব মার্টিনি দিবস শুধু একটি পানীয় উৎসব নয়, বরং একটি স্টাইলিশ অভিজ্ঞতা যা বন্ধুদের সাথে ভাগ করে নেওয়া এবং স্মরণীয় করে তোলা উচিত। এর সাদামাটা, স্বাদ এবং গ্ল্যামার এটিকে বিশেষ করে তোলে। চাই ঘরে তৈরি করুন অথবা বাইরে কোনও বারে চেষ্টা করুন, এই দিনটি শুধুমাত্র একটি পানীয় নয় বরং একটি উৎসব – মার্টিনির নামে।