ভারতে প্রতি বছর ২৫শে ডিসেম্বর সুশাসন দিবস পালন করা হয়, যা দেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী এবং ভারতরত্ন দ্বারা সম্মানিত অটল বিহারী বাজপেয়ীর জন্মবার্ষিকী উপলক্ষ্যে পালন করা হয়। এই দিনটির উদ্দেশ্য হল সুশাসন, স্বচ্ছতা এবং সরকারের জবাবদিহিতা বাড়ানো। এর সাথে সাথে, এই দিনটি ই-গভর্নেন্স এবং নাগরিক-কেন্দ্রিক শাসনের দিকে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নেওয়ার প্রেরণা দেয়।
সুশাসন দিবসের ইতিহাস
সুশাসন দিবসের শুরু ২৫শে ডিসেম্বর ২০১৪ সালে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী দ্বারা হয়েছিল। এই দিনটির স্থাপনা অটল বিহারী বাজপেয়ীর অবদানকে সম্মানিত করার জন্য করা হয়েছিল। বাজপেয়ীর ভারতের প্রধানমন্ত্রী হিসাবে তিনটি কার্যকালে দেশ-এর শাসন এবং নীতি নির্মাণে গুরুত্বপূর্ণ অবদান ছিল। তাঁর শাসনকালে ভারত বেশ কিছু ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত নিয়েছে এবং দেশের বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিয়েছে।
যখন ২০১৪ সালে বাজপেয়ীকে ভারতরত্ন দ্বারা সম্মানিত করা হয়েছিল, তখন প্রধানমন্ত্রী মোদী ২৫শে ডিসেম্বরকে "সুশাসন দিবস" রূপে পালন করার ঘোষণা করেছিলেন, যাতে দেশজুড়ে ভালো শাসনের গুরুত্ব সম্পর্কে সচেতনতা ছড়িয়ে দেওয়া যায়।
সুশাসন দিবসের গুরুত্ব
সুশাসন দিবসের উদ্দেশ্য হল সরকারের জবাবদিহিতা এবং স্বচ্ছতা বাড়ানো। এই দিনটি নাগরিকদের এটা বোঝানোর জন্য উৎসর্গীকৃত যে, সরকারের নীতি এবং কাজকর্মে কিভাবে উন্নতি করা যেতে পারে। এর সাথে সাথে, এই দিনটি শাসনের প্রতিটি স্তরে দুর্নীতি কম করা এবং সার্বজনিক পরিষেবা বিতরণে উন্নতির দিকে কাজ করে।
এছাড়াও, সুশাসন দিবসে সরকারি বিভাগ এবং মন্ত্রালয় দ্বারা গুড গভর্নেন্স ইন্ডেক্স তৈরি করা হয়, যা বিভিন্ন রাজ্য এবং পৌরসভা সরকারগুলির কার্যকারিতা মূল্যায়ন করে। এই ইন্ডেক্সের মাধ্যমে এটা দেখা হয় যে, কোন ক্ষেত্রে উন্নতির প্রয়োজন এবং কোথায় সরকার তার প্রচেষ্টা আরও বাড়াতে পারে।
সুশাসন দিবস কবে পালন করা হয়?
সুশাসন দিবস প্রতি বছর ২৫শে ডিসেম্বর পালন করা হয়। এই দিনটি ভারতের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারী বাজপেয়ীর জন্মবার্ষিকী উপলক্ষ্যে পালন করা হয়। এই দিন তাঁর অবদান এবং চিন্তাধারাকে সম্মানিত করার একটি উপায়।
সুশাসন দিবসের উদ্দেশ্য
সুশাসন দিবসের মূল উদ্দেশ্য হল শাসন ব্যবস্থায় উন্নতি, স্বচ্ছতা এবং জবাবদিহিতা বাড়ানো। এই দিনটি পালন করার মাধ্যমে সরকারের নীতি এবং কার্যক্রমগুলিকে আরও উন্নত করার সংকল্প নেওয়া হয়। এই দিন নাগরিকদের তাদের অধিকার সম্পর্কে সচেতন করে এবং এটা নিশ্চিত করে যে সরকার তার দায়িত্বগুলি সম্পূর্ণ সততা ও স্বচ্ছতার সাথে পালন করে।
সুশাসন দিবসের সময় হতে চলা কার্যকলাপ
· সরকারি বিবৃতি এবং ঘোষণা: সুশাসন দিবসে সরকার বিভিন্ন পরিকল্পনা এবং নীতিগুলির ঘোষণা করে, যা জনগণের ভালোর জন্য হয়ে থাকে।
· সেমিনার এবং কর্মশালা: এই দিনে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং সরকারি বিভাগ সুশাসন, স্বচ্ছতা, এবং ডিজিটাল শাসনের গুরুত্ব নিয়ে সেমিনার এবং কর্মশালার আয়োজন করে।
· ই-গভর্নেন্স এবং ডিজিটাল উদ্যোগের প্রচার: এই দিনে সরকার তার অনলাইন নাগরিক পরিষেবা এবং ডিজিটাল উদ্যোগ যেমন ই-গভর্নেন্সকে উৎসাহিত করে, যাতে সরকারের পরিষেবাগুলি আরও সহজলভ্য এবং স্বচ্ছ হতে পারে।
· নাগরিকদের অধিকার সম্পর্কে সচেতনতা: "জাগো গ্রাহক জাগো" এর মতো অভিযান চালানো হয়, যা নাগরিকদের তাদের অধিকার এবং শাসনের গুরুত্ব সম্পর্কে তথ্য প্রদান করে।
· পুরস্কার ও সম্মান: সুশাসন দিবসে সেই সরকারি আধিকারিক এবং সিভিল সেবকদের সম্মানিত করা হয়, যারা শাসন ব্যবস্থায় উন্নতি এবং স্বচ্ছতার জন্য গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন।
সুশাসন দিবস থেকে জুড়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য
· অটল বিহারী বাজপেয়ীর জন্ম ২৫শে ডিসেম্বর ১৯২৪ সালে হয়েছিল, এবং তাঁর জন্মবার্ষিকীতে সুশাসন দিবস পালন করা হয়।
· সুশাসন দিবসের উদ্দেশ্য স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা, এবং কার্যকারিতা বৃদ্ধি করা।
· এই দিন ই-গভর্নেন্স এবং ডিজিটাল শাসনের গুরুত্বের উপর জোর দেয়।
· সুশাসন দিবস পালন করে সরকার তার নীতি এবং পরিকল্পনা সম্পর্কে জনগণকে সচেতন করে।
সুশাসন দিবস কেবল ভারতের শাসনের কাঠামোতে উন্নতি করার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নয়, বরং এটি সরকার এবং নাগরিকদের মধ্যেকার দূরত্বও কম করার কাজ করে। এই দিনটি এটা নিশ্চিত করে যে, শাসন ব্যবস্থায় স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা এবং নিরপেক্ষতা বজায় থাকে। অটল বিহারী বাজপেয়ীর চিন্তাধারাকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার সাথে সাথে, এই দিনের শুরু থেকে দেশে ভালো শাসনের দিকে একটি নতুন পদক্ষেপ বাড়ানো হয়েছে।
```