বীরত্ব, গৌরব ও রাজকীয় ভাবের ভূমি রাজস্থান ৩০শে মার্চ ২০২৫-এ তার ৭৬তম প্রতিষ্ঠা দিবস উদযাপন করার জন্য প্রস্তুত। ঐতিহাসিক ঐতিহ্য ও বিশাল প্রাসাদগুলির জন্য বিখ্যাত রাজস্থান ভারতের সবচেয়ে বড় রাজ্য। রাজ্য গঠনের সাত দশকেরও বেশি সময় পূর্ণ হওয়ার উপলক্ষে ২৫শে মার্চ থেকে ৩১শে মার্চ পর্যন্ত বিভিন্ন শহরে সাংস্কৃতিক ও উন্নয়নমূলক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হবে।
রাজস্থান গঠনের ইতিহাস
রাজস্থান গঠনের যাত্রা শুরু হয় ৩রা জুন ১৯৪৭ থেকে, যখন ভারতের স্বাধীনতা ও বিভাজনের ঘোষণা করা হয়। সেই সময় রাজস্থান ১৯টি রাজ্য ও তিনটি থানায় বিভক্ত ছিল। এই রাজ্যগুলির একীভূত রাজস্থানে বিলয় সাতটি পর্যায়ে বহু বছর ধরে সম্পন্ন হয়। রাজস্থানের চূড়ান্ত রূপ ৩০শে মার্চ ১৯৪৯ সালে আবির্ভূত হয়।
সরদার প্যাটেলের ভূমিকা
স্বাধীনতার পর, সরদার বল্লভভাই প্যাটেল ও ভি.পি. মেনন রাজ্যগুলির একীকরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। তারা একীকরণের জন্য দুটি প্রধান শর্ত আরোপ করেন: এক লক্ষের বেশি জনসংখ্যা এবং এক কোটি টাকার বেশি বার্ষিক আয়। জয়পুর, জোধপুর, উদয়পুর ও বিকানেরের মতো প্রধান রাজ্যগুলি এই শর্তগুলি পূরণ করে ভারতে বিলয়ের সিদ্ধান্ত নেয়, অন্যদিকে ডুঙ্গরপুর ও ভরতপুরের মতো কিছু রাজ্য প্রাথমিকভাবে অনিচ্ছা প্রকাশ করে।
রাজস্থান একীকরণের পর্যায়
রাজস্থানের একীকরণ সাতটি পর্যায়ে সম্পন্ন হয়:
মৎস্য সংঘ (১৭শে মার্চ ১৯৪৮)
রাজস্থান সংঘ (২৫শে মার্চ ১৯৪৮)
সংযুক্ত রাজস্থান (১৮শে এপ্রিল ১৯৪৮)
বিশাল রাজস্থান (৩০শে মার্চ ১৯৪৯)
সংযুক্ত বিশাল রাজস্থান (১৫ই মে ১৯৪৯)
সংযুক্ত রাজস্থান (২৬শে জানুয়ারী ১৯৫০)
পুনর্গঠিত রাজস্থান (১লা নভেম্বর ১৯৫৬)
রাজস্থান দিবস ২০২৫-এর বিশেষ অনুষ্ঠান
রাজস্থান দিবসের ৭৬তম উৎসব উদযাপনের জন্য রাজ্য সরকার সপ্তাহব্যাপী আয়োজনের পরিকল্পনা করেছে:
২৫শে মার্চ (বাড়মের): মহিলা সম্মেলন ও লাডলি প্রোৎসাহন যোজনার অধীনে ৭.৫০ কোটি টাকার ডিবিটি ট্রান্সফার।
২৬শে মার্চ (বিকানের): কৃষক সম্মেলন ও এফপিও মেলা, যেখানে ৩০,০০০ কৃষককে ১৩৭ কোটি টাকার অনুদান বিতরণ করা হবে।
২৭শে মার্চ (ভরতপুর): অন্ত্যোদয় কল্যাণ সমারোহ, ই-ওয়ার্ক পোর্টালের উদ্বোধন ও দিব্যাঙ্গদের সহায়ক সরঞ্জাম বিতরণ।
২৮শে মার্চ (ভিলওয়াড়া): উন্নয়ন ও সুশাসন উৎসব, গ্রীন অরাভলি উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন।
২৯শে মার্চ (কোটা): যুব ও কর্মসংস্থান উৎসব, ৭,০০০ যুবককে নিয়োগপত্র এবং নতুন কর্মসংস্থান নীতির উন্মোচন।
৩০শে মার্চ (জয়পুর - অ্যালবার্ট হল): বিশাল সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, যার মধ্যে লোক প্রদর্শনী অন্তর্ভুক্ত।
৩১শে মার্চ (জয়পুর): রাইজিং রাজস্থান কর্মসূচী, ৩ লক্ষ কোটি টাকার বিনিয়োগ প্রকল্পের শিলান্যাস।
রাজস্থান দিবস ২০২৫ কেবলমাত্র রাজ্যের গৌরবোজ্জ্বল অতীতকেই তুলে ধরে না, বরং রাজ্যের উন্নয়নশীল ভবিষ্যতেরও প্রতীক। এই উৎসব এগিয়ে যাওয়ার সাথে সাথে রাজস্থান একতা ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের প্রতীক হিসেবে উজ্জ্বল হয়ে উঠবে।