ঈদ-উল-ফিতর ২০২৫-এর প্রস্তুতি উৎসাহ ও উদ্দীপনার সাথে শুরু হয়েছে। রমজানের পবিত্র মাসের সমাপ্তির পর পালিত এই ঈদ মুসলমানদের জন্য সবচেয়ে বড় উৎসব। এই দিনে বিশ্বজুড়ে মুসলিম সম্প্রদায় ইবাদত করে, পরস্পরকে শুভেচ্ছা জানায় এবং প্রেম ও ভ্রাতৃত্বের বার্তা ছড়িয়ে দেয়।
ঈদ-উল-ফিতর ২০২৫ কবে?
এই বছর ঈদ-উল-ফিতর উৎসব ২ বা ৩ এপ্রিল ২০২৫-এ পালিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে, যা চাঁদ দেখার উপর নির্ভর করবে। ইসলামি ক্যালেন্ডার অনুযায়ী, ঈদ-উল-ফিতর শওয়াল মাসের প্রথম তারিখে পালিত হয়। চাঁদ দেখা মাত্রই ঈদের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা করা হয় এবং পরের দিন এই উৎসব পুরো উল্লাসের সাথে পালিত হয়।
রমজানের পর ঈদের বিশেষ গুরুত্ব
ঈদ-উল-ফিতর রমজান মাসের সমাপ্তির প্রতীক। রমজানে রোজা রাখার পর, ঈদের দিন আল্লাহর কৃতজ্ঞতা প্রকাশের সুযোগ হয়। এই দিনে মুসলিম সম্প্রদায় ফজরের নামাজ আদায় করে, যাকাত (দান) দেয় এবং দরিদ্রদের সাহায্য করে।
ঈদ-উল-ফিতরকে "মিষ্টি ঈদ"ও বলা হয় কারণ এই দিনে বিশেষ করে সিয়াইয়া, শিরখুর্মা এবং নানা রকম মিষ্টান্ন তৈরি করা হয়।
ঈদের প্রস্তুতি: বাজারে আনন্দ
ঈদের উপলক্ষে বাজারে ব্যাপক উৎসাহ দেখা যাচ্ছে। দিল্লি, লখনউ, হায়দ্রাবাদ, মুম্বাই, কলকাতা এবং ভোপালের মতো শহরগুলিতে ঈদের কেনাকাটা জোরেশোরে চলছে।
লোকেরা কি কি কিনছে?
* নতুন পোশাক ও ইতর – পুরুষদের জন্য কুর্তা-পায়জামা, শেরওয়ানী এবং নারীরা বিশেষ করে শাড়ি-চুড়িদার ও হিজাব কিনছে।
* সিয়াইয়া এবং ড্রাই ফ্রুটস – বাজারে সিয়াইয়া, বাদাম, খেজুর এবং ড্রাই ফ্রুটসের ব্যাপক বিক্রি হচ্ছে।
* মেহেদি ও চুড়ি – নারীরা ঈদের রাতে "চাঁদ রাত" উৎসবে মেহেদি লাগিয়ে এবং চুড়ি পরে তা আরও বিশেষ করে তোলে।
* উপহার ও ঈদি – ঈদের দিনে শিশুদের ঈদি (উপহার বা টাকা) দেওয়ার প্রথা রয়েছে, যার ফলে তারা অত্যন্ত খুশি থাকে।
ঈদের নামাজ ও দোয়া
ঈদের দিন সর্বপ্রথম ঈদগাহ ও মসজিদে বিশেষ নামাজ আদায় করা হয়। এই সময় মানুষ পরস্পরকে আলিঙ্গন করে "ঈদ মোবারক" বলে এবং দোয়া করে।
ঈদের নামাজের পর করা বিশেষ কাজ:
* দরিদ্র ও অভাবীদের ফিতরা (দান) দেওয়া হয়।
* পরিবার ও বন্ধুবান্ধবদের সাথে মিলে সুস্বাদু খাবারের আনন্দ উপভোগ করা হয়।
* সমাজে ভ্রাতৃত্ব ও ঐক্যের বার্তা দেওয়া হয়।
ঈদের বিশেষ খাবার: শিরখুর্মা ও সুস্বাদু খাবার
ঈদে বিশেষ করে শিরখুর্মা তৈরি করা হয়, যা দুধ, সিয়াইয়া, খেজুর এবং মিষ্টান্ন দিয়ে তৈরি একটি ঐতিহ্যবাহী মিষ্টি খাবার। এছাড়াও, বিভিন্ন ধরণের বিরিয়ানি, কাবাব, সমোসা এবং ফিরনিও ঈদের উৎসবের অংশ।
ঈদের বার্তা: ঐক্য, প্রেম ও করুণা
ঈদ-উল-ফিতর কেবলমাত্র একটি উৎসব নয়, বরং ঐক্য, প্রেম, করুণা এবং সামাজিক সহযোগিতার প্রতীক। এই দিনটি আমাদের শেখায় যে আমাদের অভাবীদের সাহায্য করা উচিত, সবার সাথে সমান ব্যবহার করা উচিত এবং মানবতাকে উন্নত করা উচিত।