এই বছর, দেবী শক্তির প্রচণ্ড ও রক্ষাকারী রূপ মা ভদ্রকালীর আবির্ভাবের স্মৃতিতে, ২৩শে মে, ২০২৫, শুক্রবার, ভক্তি ও শ্রদ্ধার সাথে ভদ্রকালী জয়ন্তী পালিত হবে। হিন্দু পঞ্জিকার অনুসারে এই পবিত্র তিথি জ্যৈষ্ঠ মাসের কৃষ্ণপক্ষের একাদশী তিথিতে পড়ে। ভারতের অনেক রাজ্যে এই দিনটিকে আধ্যাত্মিক ও সাংস্কৃতিক আস্থার প্রতীক হিসেবে অপর একাদশী হিসেবেও পালন করা হয়, যা ক্ষেত্রীয় ঐতিহ্য ও ধর্মীয় গুরুত্বের একটি সুন্দর সমন্বয়।
বিশ্বাস করা হয় যে, দেবী ভদ্রকালীর আবির্ভাব হয়েছিল ভগবান শিবের ক্রোধের ফলে, যখন তিনি দেবী সতীর বিরহের সংবাদ শুনেছিলেন। সেই সময় শিবের জটাজুট থেকে প্রকট হয়েছিলেন দেবী ভদ্রকালী, যার আবির্ভাব রাক্ষসদের বিনাশের জন্য হয়েছিল। এই দিনে দেবীর পূজা করলে জীবনের সকল বাধা ও গ্রহদোষ দূর হয়।
এই বছর ভদ্রকালী জয়ন্তীতে বিশেষ যোগ
এই বার ভদ্রকালী জয়ন্তী শুক্রবারে পড়ছে। এই দিনের সূর্যোদয় সকাল ৫:৪৬ টায় এবং সূর্যাস্ত সন্ধ্যা ৭:০০ টায় হবে। একাদশী তিথি ২৩শে মে সকাল ১:১২ টা থেকে রাত ১০:৩০ টা পর্যন্ত থাকবে।
পূজাবিধি ও অনুষ্ঠান
এই দিনে ভক্তরা সকালে তাড়াতাড়ি উঠে স্নান করে কালো বা নীল বস্ত্র পরিধান করেন, কারণ এই রঙ দেবীকে অত্যন্ত প্রিয় বলে মনে করা হয়। এরপর পূজাস্থলে দেবী ভদ্রকালীর মূর্তি স্থাপন করা হয় এবং তাঁকে জল, দুধ, ঘি, মধু ও পঞ্চামৃত দিয়ে স্নান করানো হয়। এরপর নারকেলের পানি, চন্দন, বিল্বপত্র অর্পণ করে বিধিপূর্ণ পূজা করা হয়। দুপুরবেলা দেবীমন্ত্র জপ করা হয় এবং সন্ধ্যায় কালী মন্দিরে বিশেষ অনুষ্ঠানে ভক্তরা অংশগ্রহণ করেন।
ভদ্রকালী জয়ন্তীর গুরুত্ব
‘নীলমত পুরাণ’ এবং ‘বিতস্তা মহাত্ম্য’ জাতীয় গ্রন্থে ভদ্রকালী জয়ন্তীর বিশেষ উল্লেখ রয়েছে। বিশ্বাস করা হয় যে, এই দিনের পূজা করলে গ্রহদোষ, কুণ্ডলী দোষ এবং জীবনের নানা সমস্যা দূর হয়। এই দিনে পূজা করলে এগারোটি মনোকামনার পূর্ণতা লাভের বিশেষ ফল পাওয়া যায়। যদি এই তিথি মঙ্গলবারে এবং রেবতী নক্ষত্রে পড়ে, তাহলে এর গুরুত্ব আরও বেড়ে যায়।
কোথায় কোথায় উৎসব পালিত হয়
এই উৎসবটি বিশেষ করে হরিয়ানা, হিমাচল প্রদেশ এবং কাশ্মীরে ব্যাপক উৎসাহের সাথে পালিত হয়। আর্য সারস্বত ব্রাহ্মণ সম্প্রদায়ের কাছে এটি একটি প্রধান উৎসব।
আগামী বছরগুলিতে ভদ্রকালী জয়ন্তীর তিথি
- ২০২৫ শুক্রবার, ২৩শে মে
- ২০২৬ বুধবার, ১৩ই মে
- ২০২৭ মঙ্গলবার, ১লা জুন
- ২০২৮ শনিবার, ২০শে মে
- ২০২৯ বৃহস্পতিবার, ৭ই জুন
- ২০৩০ সোমবার, ২৭শে মে
এই ভক্তিপূর্ণ উৎসবে দেবী ভদ্রকালীর পূজা করে ভক্তগণ শক্তি, সাহস ও রক্ষার কামনা করেন। ভক্তদের কাছে এই দিনটি আস্থা, শক্তি ও ইতিবাচকতার প্রতীক।
