পেপসিকো ইন্ডিয়ার ‘টাইডি ট্রেইলস’: দিল্লিতে প্লাস্টিক দূষণ মোকাবেলায় নতুন উদ্যোগ

🎧 Listen in Audio
0:00

প্লাস্টিক দূষণের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় পেপসিকো ইন্ডিয়া একটি নতুন ও অনন্য উদ্যোগ ‘টাইডি ট্রেইলস’ শুরু করেছে। এই উদ্যোগটি ‘দ্য সোশ্যাল ল্যাব’-এর সহযোগিতায় জাতীয় রাজধানী দিল্লিতে শুরু হয়েছে।

ব্যবসা: বর্ধমান প্লাস্টিক আবর্জনার সমস্যা বিবেচনায় নিয়ে পেপসিকো ইন্ডিয়া ‘দ্য সোশ্যাল ল্যাব’-এর সাথে অংশীদারিত্ব করে দিল্লিতে ‘টাইডি ট্রেইলস’ নামক উদ্যোগটি শুরু করেছে। এই কর্মসূচিটি প্লাস্টিক আবর্জনা সংগ্রহ, ছাঁটাই এবং পুনর্ব্যবহারের উপর কেন্দ্রীভূত। এর অধীনে রাস্তার ফার্নিচারও তৈরি করা হচ্ছে। এই উদ্যোগের লক্ষ্য স্বচ্ছতার সংস্কৃতি বিকাশে সহায়তা করা এবং টেকসই উন্নয়নে অবদান রাখা।

প্লাস্টিক ব্যবস্থাপনার দিকে উদ্যোগ

বিশ্ব পরিবেশ দিবস (৫ জুন)-এর উপলক্ষে পেপসিকো ইন্ডিয়া সমাজসেবা সংস্থা ‘দ্য সোশ্যাল ল্যাব’-এর সাথে মিলে দিল্লিতে প্লাস্টিক আবর্জনার দায়িত্বশীল ব্যবস্থাপনার দিকে ‘টাইডি ট্রেইলস’ কর্মসূচির শুরু করেছে। এই কর্মসূচিটি শুধুমাত্র আবর্জনা সংগ্রহ ও নিষ্পত্তনে সীমাবদ্ধ নয়, বরং এর মাধ্যমে সাধারণ মানুষের মধ্যে জ্ঞান বৃদ্ধি করে দীর্ঘস্থায়ী পরিবর্তনের চেষ্টা করা হচ্ছে।

কী ‘টাইডি ট্রেইলস’

‘টাইডি ট্রেইলস’ একটি সম্প্রদায়ভিত্তিক কর্মসূচি, যার উদ্দেশ্য প্লাস্টিক আবর্জনা দায়িত্বশীলভাবে সংগ্রহ, ছাঁটাই এবং পুনর্ব্যবহার করা। এই উদ্যোগটি বিশেষ করে শহরাঞ্চলে পরিচালিত হচ্ছে যেখানে প্লাস্টিক আবর্জনার পরিমাণ বেশি। এই প্রকল্পের প্রথম ধাপে এটি দিল্লির ব্যস্ত বাজার এলাকা চাঁদনি চৌকে কার্যকর করা হয়েছে।

কর্মসূচির অধীনে দোকানদার ও স্থানীয় ব্যবসায়ীদের প্লাস্টিক আবর্জনা সংগ্রহের জন্য বড় ডাস্টবিন দেওয়া হয়েছে। তদুপরি একটি বিশেষ মোবাইল ভ্যানের মাধ্যমে নিয়মিতভাবে প্লাস্টিক আবর্জনা সংগ্রহ করা হচ্ছে।

পেপসিকো ইন্ডিয়ার দর্শন

পেপসিকো ইন্ডিয়া অ্যান্ড সাউথ এশিয়ার প্রধান কর্পোরেট বিষয়ক কর্মকর্তা ও টেকসই উন্নয়নের প্রধান যশিকা সিংহ জানিয়েছেন, এই উদ্যোগটি ‘উন্নতির অংশীদারিত্ব’ ধারণার উপর ভিত্তি করে তৈরি। এর মাধ্যমে শুধুমাত্র আবর্জনা ব্যবস্থাপনা নয়, সামাজিক অংশীদারিত্বকেও উৎসাহিত করা হচ্ছে। কর্মসূচিতে স্থানীয় প্রশাসন, বাজার সংঘ, দোকানদার এবং গ্রাহকদের একটি সাধারণ প্ল্যাটফর্মে আনা হয়েছে।

এই উদ্যোগের অধীনে ১,২০০-এর বেশি দোকানদারকে যুক্ত করার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে, যাতে সম্প্রদায় স্তরে প্লাস্টিক পুনর্ব্যবহারের অভ্যাস গড়ে উঠতে পারে।

কীভাবে কাজ করছে এই পরিকল্পনা

‘টাইডি ট্রেইলস’ পরিকল্পনায় নিম্নলিখিত ধাপগুলির উপর কাজ করা হচ্ছে:

  • আবর্জনা সংগ্রহ: দোকান ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠান থেকে প্লাস্টিক আবর্জনা সংগ্রহ করা হয়।
  • ছাঁটাই ও শ্রেণীবিন্যাস: প্লাস্টিক আবর্জনাকে তার ধরণ অনুযায়ী ছাঁটাই করা হয়, যাতে পুনর্ব্যবহার প্রক্রিয়া সহজ হয়।
  • পুনর্ব্যবহার ও পুনঃব্যবহার: সংগৃহীত প্লাস্টিক পুনঃব্যবহার করে রাস্তার ফার্নিচার যেমন বেঞ্চ ও চেয়ার তৈরি করা হচ্ছে।
  • স্থাপন: এই ফার্নিচারগুলি উদ্যান, সম্প্রদায় ভবন এবং বাজার এলাকায় স্থাপন করা হচ্ছে।

এই সম্পূর্ণ প্রক্রিয়ার উদ্দেশ্য হল প্লাস্টিক আবর্জনার ব্যবহার সমাজের জন্য উপকারী বস্তু তৈরিতে করা।

প্লাস্টিক থেকে তৈরি হচ্ছে রাস্তার ফার্নিচার

এই উদ্যোগের সবচেয়ে বিশেষ দিক হল সংগৃহীত প্লাস্টিক আবর্জনা থেকে বেঞ্চ এবং অন্যান্য জনসাধারণের ব্যবহারের বস্তু তৈরি করা হচ্ছে। এভাবে, আবর্জনা শুধুমাত্র পুনর্ব্যবহৃত হচ্ছে না, বরং সমাজের জন্য উপযোগীও হচ্ছে। এই বেঞ্চগুলি উদ্যান, সম্প্রদায় কেন্দ্র এবং বাজারে স্থাপন করা হচ্ছে। এতে শুধুমাত্র স্থানের উপযোগিতা ও সৌন্দর্য বৃদ্ধি হচ্ছে না, বরং নাগরিকদের পরিবেশ সংরক্ষণের ও বার্তা মিলছে।

জ্ঞান বৃদ্ধি ও অংশগ্রহণ

এই কর্মসূচির অন্তর্গত শুধুমাত্র আবর্জনা ব্যবস্থাপনায় সীমাবদ্ধ থাকা হয়নি, বরং জ্ঞান বৃদ্ধির উপর জোর দেওয়া হয়েছে। বিভিন্ন মাধ্যমে জনসাধ্য সুনিশ্চিত করা হচ্ছে:

  • সাইনবোর্ড ও সুচনা পাতার মাধ্যমে জ্ঞান বৃদ্ধি অভিযান
  • স্থানীয় সম্প্রদায়, দোকানদার ও ছাত্রছাত্রীর অংশগ্রহণ
  • স্বচ্ছতার শপথ ও সম্প্রদায়িক গোষ্ঠী
  • এই অভিযানগুলির মাধ্যমে লোকজনের মধ্যে স্বচ্ছতা ও প্লাস্টিক ব্যবস্থাপনা নিয়ে সकारात्मক চিন্তাধারা বিকাশ হচ্ছে।

সরকার ও উদ্যোগের অংশীদারিত্ব

‘টাইডি ট্রেইলস’ যে রকম কর্মসূচি তা দেখায় যে যদি সরকার, উদ্যোগ ও সমাজ একত্রিত হয়ে প্রয়াস করে তাহলে যেকোনো পরিবেশগত সমস্যার সমাধান সম্ভব। কেন্দ্র ও রাষ্ট্র সরকার ও স্বচ্ছতা ও আবর্জনা ব্যবস্থাপনার উপর নিরন্তর কাজ করছে। ‘স্বচ্ছ ভারত মিসন’ ও প্লাস্টিক প্রতিরোধ যে রকম পরিকল্পনা এই দিকেই প্রয়াস।

প্লাস্টিক আবর্জনার সাথে জড়িত তথ্য

ভারতে প্রতিবছর প্রায় ৩.৫ মিলিয়ন টন প্লাস্টিক আবর্জনা উৎপন্ন হয়, যার এক বড় অংশ অব্যবহৃত থাকে। কেন্দ্রীয় প্রদূষণ নিয়ন্ত্রণ বোর্ড (CPCB)-এর প্রতিবেদনের অনুযায়ী, দেশে প্রায় ৬০% প্লাস্টিক পুনর্ব্যবহৃত হয়, যখন বাকি আবর্জনা খোলা স্থানে ফেলে দেওয়া হয়। এই রকম পরিস্থিতিতে ‘টাইডি ট্রেইলস’ যে রকম উদ্যোগগুলি প্লাস্টিক আবর্জনার দায়িত্বশীল নিষ্পত্তির দিকে একটি সकारात्मক পদক্ষেপ রূপে দেখা হচ্ছে।

Leave a comment