সোশ্যাল মিডিয়ায় এই সময়ে OpenAI-এর ChatGPT 4o ব্যবহার করে তৈরি করা ঘিবলি স্টাইলের ছবির ট্রেন্ড দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে। লোকেরা নিজেদের এবং পরিবারের ছবি AI-এর সাথে শেয়ার করছে, কিন্তু কি আপনি জানেন এভাবে আপনি আপনার ফেসিয়াল রিকগনিশন ডেটা AI কোম্পানিগুলিকে দিয়ে দিচ্ছেন? ২০২৫ সালের মধ্যে ফেসিয়াল রিকগনিশন টেকনোলোজির বাজার ৫.৭৩ বিলিয়ন ডলার এবং ২০৩১ সালের মধ্যে ১৪.৫৫ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছানোর সম্ভাবনা রয়েছে। প্রশ্ন উঠছে, কি আপনি আপনার পরিচয় অনিচ্ছাকৃতভাবে এই কোটি কোটি ডলারের বাজারের অংশ করে তুলছেন?
প্রতিদিন আপনার মুখ চুরি হচ্ছে
ঘিবলি স্টাইলের ছবি শুধুমাত্র একটি উদাহরণ। আসলে, আমরা প্রতিদিন আমাদের মুখের ডেটা AI কোম্পানিগুলিকে দিয়ে দিচ্ছি, চাই সেটা ফোন আনলক করার জন্য হোক, সোশ্যাল মিডিয়ায় ট্যাগ করার জন্য হোক বা অন্য কোন ডিজিটাল সেবার ব্যবহারের সময়। যখন আমরা সোশ্যাল মিডিয়ায় আমাদের ছবি আপলোড করি বা অ্যাপগুলিকে ক্যামেরা অ্যাক্সেস দিই, তখন কোম্পানিগুলি আমাদের মুখের বৈশিষ্ট্যগুলি স্ক্যান করে সংরক্ষণ করে। এই ডেটা আপনার পাসওয়ার্ড বা ক্রেডিট কার্ড থেকেও বেশি সংবেদনশীল কারণ আপনি আপনার মুখ পরিবর্তন করতে পারবেন না।
ভারতীয়দের অসাবধানতা এবং ডেটা চুরির ঘটনা
ভারতীয়রা প্রায়ই ডিজিটাল সুরক্ষাকে হালকাভাবে নেয়। Clearview AI বিতর্ক এর সবচেয়ে বড় উদাহরণ, যেখানে অনুমতি ছাড়াই ৩ বিলিয়ন এর বেশি ছবি সংগ্রহ করে তা পুলিশ এবং প্রাইভেট কোম্পানিগুলিকে বিক্রি করা হয়েছিল। মে ২০২৪ সালে অস্ট্রেলিয়ান কোম্পানি Outabox-এর ডেটা লিক হয়, যেখানে ১.০৫ মিলিয়ন মানুষের ফেসিয়াল স্ক্যান, ড্রাইভিং লাইসেন্স এবং ঠিকানা চুরি হয়। এই ডেটার ব্যবহার আইডেন্টিটি থেফ্ট এবং ডিপফেক স্ক্যামের জন্য করা হয়েছিল। এইভাবেই, দোকানে চুরি রোধ করার জন্য ব্যবহৃত FRT সিস্টেমও হ্যাকারদের টার্গেটে থাকে।
আপনার মুখ থেকে কে আয় করছে টাকা?
Statista-এর রিপোর্ট অনুযায়ী, ফেসিয়াল রিকগনিশন টেকনোলোজির বাজার ১৬.৭৯% CAGR হারে ২০৩১ সালের মধ্যে ১৪.৫৫ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছাবে। মেটা এবং গুগলের মতো কোম্পানি ব্যবহারকারীদের ছবি ব্যবহার করে তাদের AI মডেল ট্রেন করছে, কিন্তু এই তথ্য জনসাধারণের কাছে প্রকাশ করা হয় না। PimEyes-এর মতো ওয়েবসাইট যে কারও ছবি অনলাইনে ট্র্যাক করার সুবিধা দেয়, যার ফলে স্টকিং এবং অন্যান্য ঝুঁকি বেড়ে যায়।
এই ঝুঁকি থেকে কীভাবে বাঁচবেন?
যদি আপনি আপনার বায়োমেট্রিক ডেটা সুরক্ষিত রাখতে চান, তাহলে প্রথমে ঘিবলি স্টাইলের ছবি তৈরি করা বন্ধ করুন। সোশ্যাল মিডিয়ায় উচ্চ-রেজোলিউশনের ছবি আপলোড করা এড়িয়ে চলুন। ফেস আনলকের পরিবর্তে পিন বা পাসওয়ার্ড ব্যবহার করুন। এছাড়াও, সরকার এবং কোম্পানিগুলিকে চাপ দিন যাতে তারা স্বচ্ছভাবে জানায় যে আপনার ডেটা কীভাবে ব্যবহার করা হচ্ছে।
যদিও, এগুলি শুধুমাত্র অস্থায়ী ব্যবস্থা। আসল সমাধান তখনই আসবে যখন সরকারগুলি ফেসিয়াল রিকগনিশন টেকনোলোজির অবৈধ ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে কঠোর আইন তৈরি করবে এবং AI-এর দুর্ব্যবহারে রোধ করবে।
