বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান অ্যাপলকে কেন্দ্র করে আমেরিকার নীতির পরিবর্তনের ফলে ভারতের প্রযুক্তি ও উৎপাদন খাতের দিকনির্দেশনা প্রভাবিত হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। पूर्व अमेरिकी राष्ट्रपति डोनाल्ड ट्रंप-এর সাম্প্রতিক মন্তব্যের পর থেকেই অ্যাপলের ভারতে চলমান উৎপাদন ও বিনিয়োগ পরিকল্পনা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। यदि अमेरिकी दबावে অ্যাপল ভারত থেকে উৎপাদন সরিয়ে নেয়, তাহলে এর প্রভাব কেবলমাত্র দেশের অর্থনীতিতেই নয়, অন্যান্য ক্ষেত্রেও পড়বে।
অ্যাপলের ভারতে উপস্থিতি ও বিনিয়োগ
অ্যাপল বর্তমানে ভারতে আইফোন তৈরির কাজ দ্রুত গতিতে এগিয়ে নিচ্ছে, আর তাতে তাইওয়ানের প্রতিষ্ঠান ফক্সকনের অবদান বিরাট। এই উৎপাদন প্রক্রিয়ায় প্রায় ৬০,০০০ জন সরাসরি কাজ করছেন, যার ফলে ভারতে কর্মসংস্থানের সুযোগ বৃদ্ধি পেয়েছে। ফক্সকন ভারতে এখন পর্যন্ত প্রায় ১.৫ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করেছে এবং সম্প্রতি তামিলনাড়ুতে তাদের কারখানা আরও বিস্তৃত করার জন্য ১.৪৯ বিলিয়ন ডলারের নতুন বিনিয়োগের ঘোষণা দিয়েছে। এটি স্পষ্ট ইঙ্গিত দিচ্ছে যে বৃহৎ প্রতিষ্ঠানগুলি এখন চীনের পরিবর্তে উৎপাদনের নতুন কেন্দ্র হিসেবে ভারতকে গ্রহণ করছে। অর্থাৎ, ভারত ধীরে ধীরে বিশ্বের প্রযুক্তিগত উৎপাদনে গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার হয়ে উঠছে, যা দেশের অর্থনীতি ও কর্মসংস্থান উভয় ক্ষেত্রেই সুফল বয়ে আনবে।
ট্রাম্পের সতর্কতা: ভারতে তৈরি আইফোনে ২৫% কর
पूर्व राष्ट्रपति डोनाल्ड ट्रাম্প সম্প্রতি এক বিবৃতিতে বলেছেন যে, যদি অ্যাপল চীনের পরিবর্তে ভারতে আইফোন তৈরি করে, তাহলে আমেরিকা তার উপর ২৫% আমদানি শুল্ক আরোপ করবে। ট্রাম্পের যুক্তি হলো আমেরিকাকে নিজেদের উৎপাদন ক্ষমতা দেশে ফিরিয়ে আনতে হবে। বর্তমানে আমেরিকায় ভারতে তৈরি আইফোনে ১০% এবং চীনে তৈরি ফোনে ৩০% কর আরোপ করা হয়, তাই ভারত এখনও অ্যাপলের জন্য বেশি লাভজনক। কিন্তু যদি ২৫% শুল্ক আরোপ করা হয়, তাহলে ভারতে উৎপাদন করা অ্যাপলের জন্য তেমন লাভজনক হবে না।
চীন ও ভারতের মধ্যে উৎপাদনের ভারসাম্য
বর্তমানে বিশ্বে বিক্রি হওয়া আইফোনের প্রায় ৮০% চীনে তৈরি হয়, আর ভারতের অংশীদারিত্ব মাত্র প্রায় ১৫%। তবে গত কয়েক বছরে ভারত দ্রুত গতিতে উৎপাদন খাতকে উন্নত করেছে এবং অ্যাপলের উৎপাদনে নিজেদের অংশীদারিত্ব বাড়াতে সক্ষম হয়েছে। ভারত প্রতি বছর আমেরিকাকে প্রায় ৬ বিলিয়ন ডলারের আইফোন ও অন্যান্য ফোন রপ্তানি করে, যা দেশের অর্থনীতিতে ব্যাপক অবদান রাখে। কিন্তু যদি আমেরিকার বাণিজ্য নীতিতে পরিবর্তন আসে, যেমন ভারতে তৈরি ফোনে বেশি কর আরোপ করা হয়, তাহলে ভারতের এই রপ্তানি কমে যেতে পারে এবং এর ফলে কর্মসংস্থান ও বিনিয়োগ উভয় ক্ষেত্রেই প্রভাব পড়বে। তাই ভারতের জন্য এটি গুরুত্বপূর্ণ যে তারা তাদের উৎপাদন ব্যবস্থাকে আরও শক্তিশালী করে এবং আন্তর্জাতিক বাজারে নিজেদের অবস্থান ধরে রাখে।
মাইক্রোন जैसी প্রতিষ্ঠানগুলিও প্রভাবিত হতে পারে
সূত্রের খবর, আমেরিকার এই নীতি কেবল অ্যাপল পর্যন্ত সীমাবদ্ধ নয়। ভবিষ্যতে আমেরিকার সরকার চিপ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান, যেমন মাইক্রোনকেও ভারত থেকে উৎপাদন সরিয়ে নেওয়ার জন্য বলতে পারে। মাইক্রোন আগে চীনে উৎপাদন করত, কিন্তু এখন ভারতে তাদের ইউনিট স্থাপন করছে। যদি আমেরিকা ভারতে তৈরি চিপের উপরও আমদানি শুল্ক বৃদ্ধি করে, তাহলে এর প্রভাব ভারতের অর্ধপরিবাহী শিল্পেও পড়বে।
আমেরিকান প্রতিষ্ঠানগুলির চিন্তাধারায় পরিবর্তন আসতে পারে
ভারত সরকার বিগত বছরগুলিতে অনেক আমেরিকান প্রতিষ্ঠানকে ভারতে বিনিয়োগ ও উৎপাদনের জন্য আমন্ত্রণ জানিয়েছে। খেলনা, চামড়া ও ইলেকট্রনিক্সের মতো খাতে ভারতীয় ও আমেরিকান প্রতিষ্ঠানের মধ্যে অংশীদারিত্বের ধারা বেড়েছে। কিন্তু যদি আমেরিকার এই কঠোর অবস্থান অব্যাহত থাকে, তাহলে আমেরিকান প্রতিষ্ঠানগুলি এই খাতে বিনিয়োগ বা অংশীদারিত্ব করতে দ্বিধা করবে। এর ফলে ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’র মতো অভিযানগুলি ব্যাপক ধাক্কা খেতে পারে।
কি ভারতের জন্য বিদেশী বিনিয়োগ বন্ধ হয়ে যাবে?
ভারতের জন্য এটি বেশ উদ্বেগজনক পরিস্থিতি হতে পারে, কারণ গত কয়েক বছরে চীন থেকে দূরত্ব বজায় রেখে যে বিনিয়োগ ভারতে আসছিল, তা আবার অন্য কোন দেশের দিকে ঘুরে যেতে পারে। অ্যাপলের মতো বৃহৎ প্রতিষ্ঠানের আস্থা ভারতে বজায় রাখার জন্য সরকারকে স্পষ্ট নীতি ও আন্তর্জাতিক কূটনীতির ক্ষেত্রে সক্রিয় ভূমিকা পালন করতে হবে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, ভারতকে এখন কূটনৈতিক কৌশল অবলম্বন করে আমেরিকার সাথে স্পষ্ট আলোচনা করতে হবে যে, কীভাবে বিশ্বের উৎপাদনের নতুন কেন্দ্র হিসেবে ভারতের ভূমিকাকে অক্ষুণ্ণ রাখা যায়।
সরকারের সামনে নতুন চ্যালেঞ্জ
ভারত সরকার ফক্সকন ও মাইক্রোনের মতো বৃহৎ প্রতিষ্ঠানগুলিকে দেশে বিনিয়োগ করার জন্য বিভিন্ন সুবিধা ও উৎসাহ প্রদান করেছে, যাতে তারা এখানে বেশি উৎপাদন করতে পারে এবং কর্মসংস্থান বৃদ্ধি পায়। কিন্তু যদি আমেরিকার মতো শক্তিশালী দেশ ভারতে তৈরি সামগ্রীর উপর বেশি কর আরোপ করে, তাহলে এটি ভারতের জন্য কঠিন হতে পারে। এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সামনে এটি একটি বড় চ্যালেঞ্জ যে তারা এই পরিস্থিতি মোকাবেলা করার জন্য নতুন পরিকল্পনা ও কৌশল তৈরি করবে। ভারতকে নিজেদের স্বার্থ রক্ষার জন্য শক্তিশালী পদক্ষেপ নিতে হবে, যাতে বিদেশী বিনিয়োগ বজায় থাকে এবং দেশের অর্থনীতিতে এর ইতিবাচক প্রভাব পড়ে।
আমেরিকা ও ভারতের মধ্যে বাণিজ্য নীতির এই সংঘাত ভবিষ্যতে ভারতের প্রযুক্তিগত দিকনির্দেশনাকে প্রভাবিত করতে পারে। যদি অ্যাপল ও অন্যান্য আমেরিকান প্রতিষ্ঠানকে ভারত থেকে তাদের উৎপাদন কার্যক্রম সরাতে হয়, তাহলে দেশটি কেবল কর্মসংস্থানের ক্ষতিই করবে না, বরং বিদেশী বিনিয়োগ ও আন্তর্জাতিক আস্থার উপরও গভীর প্রভাব পড়বে।