আমেরিকার প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্প বিভিন্ন দেশের উপর ট্যারিফ সংশোধন করে বড় সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, যার মধ্যে চীনের উপর সবচেয়ে বেশি ট্যারিফ আরোপ করা হয়েছে। এই সিদ্ধান্তের প্রত্যক্ষ প্রভাব পড়তে পারে আমেরিকার টেক ইন্ডাস্ট্রিতে, বিশেষ করে অ্যাপল এবং তার আইফোন মডেলগুলিতে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই সিদ্ধান্তের ফলে আইফোনের দাম ৩০ থেকে ৪০% পর্যন্ত বৃদ্ধি পেতে পারে। এতটুকুই নয়, ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্তের পর অ্যাপলের শেয়ার ৯.৩% পর্যন্ত নেমে গেছে, যা ২০২০ সালের মার্চের পর সবচেয়ে বড় ধস বলে মনে করা হচ্ছে।
আইফোনের দামে প্রচুর বৃদ্ধির সম্ভাবনা
অ্যাপল প্রতি বছর প্রায় ২০০ মিলিয়ন আইফোন ইউনিট বিক্রি করে, যার মধ্যে সবচেয়ে বড় বাজার চীন, আমেরিকা এবং ইউরোপ। এখনও অধিকাংশ আইফোন মডেল চীনে তৈরি হয়। আগে এদের উপর ৫৪% পর্যন্ত ট্যারিফ ছিল, কিন্তু ট্রাম্পের নতুন নীতি অনুযায়ী এতে আরও বৃদ্ধি করা হতে পারে।
যদি অ্যাপল এই অতিরিক্ত খরচ সরাসরি গ্রাহকদের কাছে পৌঁছে দেয়, তাহলে আইফোন ১৬-এর সবচেয়ে সস্তা মডেলের দাম ৭৯৯ ডলার থেকে বেড়ে প্রায় ১১৪২ ডলারে পৌঁছাতে পারে, অর্থাৎ ৪৩% পর্যন্ত বৃদ্ধি হতে পারে। একইভাবে, সম্প্রতি লঞ্চ করা আইফোন ১৬e-র দাম ৫৯৯ ডলার থেকে বেড়ে ৮৫৬ ডলার হতে পারে।
অ্যাপল উৎপাদন স্থানান্তর করতে পারে
বর্ধিত ট্যারিফের চাপের কারণে অ্যাপল চীন থেকে অন্যান্য দেশে তার উৎপাদন স্থানান্তর করার বিষয়টি বিবেচনা করতে পারে। ইতোমধ্যেই কোম্পানি ভারত এবং ভিয়েতনামে তার কিছু আইফোন মডেলের উৎপাদন শুরু করেছে, কিন্তু এখনও সবচেয়ে বেশি উৎপাদন চীনেই হয়। যদি ট্যারিফ আরও বেশি বৃদ্ধি পায়, তাহলে অ্যাপলকে বাধ্য হয়ে মেক্সিকো বা অন্যান্য দেশে উৎপাদন বাড়াতে হতে পারে। তবে, এটি সম্পূর্ণরূপে কোম্পানির দীর্ঘমেয়াদী কৌশলের উপর নির্ভর করবে।
Samsung-এর কি লাভ হবে?
অ্যাপলের তুলনায় Samsung এই ট্যারিফ নীতি থেকে কিছুটা লাভ পেতে পারে। Samsung-এর অধিকাংশ পণ্য চীনের পরিবর্তে অন্যান্য এশীয় দেশে তৈরি হয়, যার উপর কম ট্যারিফ আরোপ করা হয়েছে। এর ফলে Samsung-এর স্মার্টফোন এবং অন্যান্য গ্যাজেটের চাহিদা বৃদ্ধি পেতে পারে। যদি আইফোন মূল্যবান হয়ে যায়, তাহলে গ্রাহকদের কাছে Samsung-এর মতো ব্র্যান্ডগুলির বিকল্প আরও আকর্ষণীয় হতে পারে।
ট্যারিফের বৈশ্বিক প্রভাব কী হবে?
চীনের উপর প্রচুর ট্যারিফ আরোপ করার সিদ্ধান্তের ফলে কেবলমাত্র আমেরিকাই নয়, অন্যান্য দেশের অর্থনীতি এবং টেক ইন্ডাস্ট্রির উপরও প্রভাব পড়বে। চীনও এর জবাব তার রপ্তানি নীতি পরিবর্তন করে দিতে পারে, যার ফলে অনেক কোম্পানিকে দীর্ঘমেয়াদী ক্ষতি হতে পারে। বর্তমানে, এটি দেখার জন্য আকর্ষণীয় হবে যে অ্যাপল এই চ্যালেঞ্জের সাথে কীভাবে মোকাবিলা করে এবং আইফোনের বাড়ন্ত দাম গ্রাহক চাহিদাকে প্রভাবিত করবে কিনা।