ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা (ISRO) এক গুরুত্বপূর্ণ সাফল্য অর্জন করেছে। তাদের দ্বারা উন্নত C20 ক্রায়োজেনিক ইঞ্জিন সম্প্রতি একটি গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষায় সফলভাবে উত্তীর্ণ হয়েছে, যা ISRO-র ভবিষ্যৎ মহাকাশ অভিযানে এর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিশ্চিত করে। এই পরীক্ষাটি 29 নভেম্বর 2024-এ তামিলনাড়ুর মহেন্দ্রগিরিতে অবস্থিত ISRO প্রপালশন কমপ্লেক্সে সম্পন্ন হয়েছে, যেখানে CE20 ক্রায়োজেনিক ইঞ্জিনের সমুদ্রপৃষ্ঠে হট টেস্ট সম্পন্ন হয়েছে।
সমুদ্রপৃষ্ঠে হট টেস্ট: চ্যালেঞ্জিং প্রক্রিয়া
সমুদ্রপৃষ্ঠে এই ইঞ্জিনের পরীক্ষা একটি চ্যালেঞ্জিং কাজ ছিল, কারণ উচ্চ চাপের নোজেল অঞ্চলে প্রায় 50 mbar এর এগজিট চাপ থাকে। এই সময়, ইঞ্জিনের নোজেলের ভেতর দিয়ে বয়ে যাওয়া পৃথকীকরণের ফলে গুরুতর কম্পন এবং থার্মাল সমস্যা তৈরি হতে পারে, যা নোজেলকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে। এই ঝুঁকি কমানোর জন্য, ISRO ফ্লাইট টেস্টের জটিলতা কমাতে নোজেল প্রোটেকশন সিস্টেম ব্যবহার করেছে, যার মাধ্যমে পরীক্ষা প্রক্রিয়া আরও নিরাপদ ও ব্যয়-কার্যকর হয়েছে।
মাল্টি-এলিমেন্ট ইগ্নাটারের পারফরম্যান্স
C20 ক্রায়োজেনিক ইঞ্জিনের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হল এর পুনরায় স্টার্ট করার ক্ষমতা, যা একটি জটিল প্রক্রিয়া হিসেবে বিবেচিত হয়। এই পরীক্ষায়, ইঞ্জিনের পুনরায় স্টার্ট করার প্রক্রিয়াও পরীক্ষা করা হয়েছে, যা মাল্টি-এলিমেন্ট ইগ্নাটারের পারফরম্যান্সের অন্তর্ভুক্ত ছিল। এই প্রযুক্তিগত দিকটি পরীক্ষার সময় পরীক্ষা করা হয়েছিল, যেখানে শুধুমাত্র প্রথম এলিমেন্টকে সক্রিয় করা হয়েছিল, অন্য দুটি এলিমেন্টের অবস্থা পর্যবেক্ষণ করা হয়েছিল।
উচ্চ পারফরম্যান্সের সাথে ইঞ্জিনের সাফল্য
এই পরীক্ষায় CE20 ইঞ্জিন সব নির্ধারিত পারফরম্যান্স পরামিতি পূরণ করেছে। এই ইঞ্জিন LVM3 লঞ্চ ভেহিকেলের উপরের স্তরে শক্তি সরবরাহ করে এবং ১৯ টন থ্রাস্ট লেভেলের কাজ করতে সক্ষম। এখন পর্যন্ত, এই ইঞ্জিন ৬টি LVM3 মিশনে সফলভাবে অংশগ্রহণ করেছে। এছাড়া, সম্প্রতি এটি গগনযান মিশনের জন্য ২০ টন থ্রাস্ট স্তরেও যোগ্যতা অর্জন করেছে। ভবিষ্যতে এটি C32 স্তরের জন্য ২২ টন থ্রাস্ট লেভেলের যোগ্যতা অর্জন করবে, যার ফলে LVM3-এর পেলোড ধারণ ক্ষমতা আরও বৃদ্ধি পাবে।
ISRO-র সাফল্য দ্বারা মহাকাশ কর্মসূচীতে গতিশীলতা আসবে
ISRO-র এই পদক্ষেপ ভারতের মহাকাশ কর্মসূচীকে আরও শক্তিশালী করার দিকে একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক। ISRO-র বিজ্ঞানীদের দ্বারা পরিচালিত এই পরীক্ষার সাফল্য কেবলমাত্র প্রযুক্তিগত দিক থেকে ভারতের প্রযুক্তিকে উন্নত করেছে, তা না, বরং দেশের মহাকাশ অভিযানকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাওয়ার দিকে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিয়েছে।
এই সাফল্য নিশ্চিত করে যে ISRO আগামী বছরগুলিতে আরও বড় মহাকাশ অভিযান সম্পন্ন করতে পারবে এবং ভারতের নাম মহাকাশ ক্ষেত্রে আরও উজ্জ্বল হবে।
```
