এএফসি এশিয়ান কাপ কোয়ালিফাইংয়ের প্রস্তুতির অংশ হিসেবে খেলা গুরুত্বপূর্ণ একটা প্রীতি ম্যাচে ৪ মে থাইল্যান্ডের কাছে ০-২ গোলে পরাজিত হয়েছে ভারতীয় ফুটবল দল।
খেলাধুলা সংবাদ: ৪ মে থাইল্যান্ডের বিরুদ্ধে প্রীতি ম্যাচে ০-২ গোলে পরাজিত হয়েছে ভারতীয় ফুটবল দল। এএফসি এশিয়ান কাপ কোয়ালিফাইং ম্যাচের প্রস্তুতির দিক থেকে এই ম্যাচটি বেশ গুরুত্বপূর্ণ ছিল। কিন্তু এই ম্যাচে ভারতীয় দল তাদের আশা অনুযায়ী পারফর্ম করতে পারেনি এবং থাইল্যান্ডের আক্রমণাত্মক খেলার সামনে চাপে পড়ে গেছে। বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য হলো, দলের তারকা খেলোয়াড় এবং অধিনায়ক সুনীল ছত্রীর এইবার গোল করার জাদু দেখানো সম্ভব হয়নি।
ম্যাচে থাইল্যান্ডের আধিপত্য, ভারতীয় দলের উপর চাপ
ম্যাচের শুরু থেকেই থাইল্যান্ড দল বলের উপর নিয়ন্ত্রণ বজায় রেখে ভারতের উপর চাপ প্রয়োগ করে। থাইল্যান্ডের খেলোয়াড়রা দ্রুত গতির খেলা দেখিয়ে ভারতীয় ডিফেন্স লাইনকে বারবার চ্যালেঞ্জ করে। ম্যাচের ৮ম মিনিটেই থাইল্যান্ডের বেঞ্জামিন ডেভিস দারুণ একটা গোল করে তার দলকে এগিয়ে নিয়ে যায়। এই গোল ভারতীয় খেলোয়াড়দের কিছুটা হতাশ করে এবং প্রথমার্ধের বাকি সময় থাইল্যান্ড দল নিয়ন্ত্রণ ধরে রাখে।
২৪তম মিনিটে ভারতীয় দলের সমতা ফেরানোর সুযোগ ছিল যখন অধিনায়ক সুনীল ছত্রী দারুণ একটি হেডার দেন। মনে হচ্ছিল গোল হবে, কিন্তু থাইল্যান্ডের অভিজ্ঞ গোলরক্ষক সারনোন অনুই অসাধারণ ডাইভ দিয়ে সেই চেষ্টা ব্যর্থ করে দেন। এটি ছিল ভারতের ম্যাচে সবচেয়ে কাছাকাছি সুযোগ। এর পর ভারতীয় দল থেকে আর কোনও বড় আক্রমণ বা গোল করার সুযোগ আসেনি।
ভারতীয় দলের দুর্বল মিডফিল্ড এবং ডিফেন্স
ম্যাচের সময় ভারতীয় মিডফিল্ড এবং ডিফেন্স লাইন থাইল্যান্ডের তীব্র আক্রমণের সামনে দুর্বল প্রমাণিত হয়। বারবার থাইল্যান্ডের খেলোয়াড়রা ভারতীয় পেনাল্টি এরিয়া বক্সের আশেপাশে চাপ তৈরি করে, যার ফলে ভারতীয় খেলোয়াড়রা তাদের কৌশল সঠিকভাবে প্রয়োগ করার সুযোগ পায়নি। ৫৯তম মিনিটে থাইল্যান্ডের পোরামেট অর্জাভিলই গোল করে স্কোর ২-০ করে দেয়, যা ভারতীয় দলের জন্য পুনরাগমনের আশা সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস করে দেয়।
সুনীল ছত্রীর থাইল্যান্ডের বিরুদ্ধে একটা বিশেষ রেকর্ড আছে। ২০১৯ সালে এএফসি এশিয়ান কাপে ভারত থাইল্যান্ডকে ৪-১ গোলে হারিয়েছিল, যেখানে ছত্রী দুটি গোল করেছিলেন। এই বছরই ভারত কিংস কাপেও থাইল্যান্ডকে ১-০ গোলে হারিয়েছিল। এই দুটি ম্যাচেই ছত্রীর উপস্থিতি এবং গোল গুরুত্বপূর্ণ ছিল। কিন্তু এবার থাইল্যান্ডের শক্তিশালী কৌশল এবং আক্রমণাত্মক খেলার সামনে ছত্রী তার ছাপ রাখতে পারেননি।
কোয়ালিফায়ারের আগে ভারতীয় দলের জন্য বড় শিক্ষা
এই প্রীতি ম্যাচ এশিয়ান কাপ কোয়ালিফায়ারের প্রস্তুতির জন্য ভারতের পক্ষে একটি গুরুত্বপূর্ণ সুযোগ ছিল। ১০ জুন ভারতের ম্যাচ হবে হংকং এর বিরুদ্ধে, এবং এই ম্যাচের আগে এই পরাজয় ভারতীয় দলের জন্য একটা সতর্কবার্তা। দলকে তাদের দুর্বলতাগুলি দূর করে আরও ভালো প্রস্তুতি নিতে হবে যাতে আগামী ম্যাচগুলিতে ভালো পারফর্ম করা যায়।
থাইল্যান্ড দল তাদের নিজেদের মাঠে চমৎকার খেলা দেখিয়েছে। তাদের দ্রুত গতির খেলোয়াড়রা বারবার ভারতীয় ডিফেন্স লাইনকে অবাক করে এবং গোল করার অনেক সুযোগ তৈরি করে। বেঞ্জামিন ডেভিস এবং পোরামেট অর্জাভিলই শুধু গোল করেনি, বরং সম্পূর্ণ দল মিলে আক্রমণাত্মক ফুটবল খেলে ভারতীয় দলকে চাপে রেখেছে। তাদের দল বিশ্ব র্যাঙ্কিংয়ে ভারতের চেয়ে উন্নত অবস্থানে আছে এবং এই ম্যাচে তারা তা পুরোপুরি প্রমাণ করেছে।
ভারতীয় দল এখন আসন্ন ১০ জুন এশিয়ান কাপ কোয়ালিফায়ারে হংকং এর বিরুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচের প্রস্তুতি নিচ্ছে। এই পরাজয় থেকে পাওয়া শিক্ষার পর কোচিং স্টাফ এবং খেলোয়াড়দের তাদের দুর্বলতার উপর কাজ করতে হবে।