ক্রীড়াপ্রেমীদের, বিশেষ করে ক্রিকেটপ্রেমীদের জন্য একটি ঐতিহাসিক ও রোমাঞ্চকর খবর। ১২৮ বছরের দীর্ঘ অপেক্ষার পর ক্রিকেটের অলিম্পিকে ফিরে আসা নিশ্চিত হয়েছে। লস অ্যাঞ্জেলেস ২০২৮ অলিম্পিকে ক্রিকেট আবারও টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে এবং সম্পূর্ণ ঐশ্বর্যের সাথে বিশ্বব্যাপী মঞ্চে ফিরে আসবে।
খেলাধুলা সংবাদ: ক্রিকেটকে বিশ্বে জনপ্রিয় করার কৃতিত্ব যায় ইংরেজদের, যাদেরকে এর জনক বলে মনে করা হয়। ইংরেজরা যখন ওয়েস্ট ইন্ডিজ এবং ভারতীয় উপমহাদেশকে উপনিবেশ করেছিল, তখন ক্রিকেট সেখানেও ছড়িয়ে পড়ে এবং সময়ের সাথে সাথে অত্যন্ত জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। বিশেষ করে ভারতে, ক্রিকেট আজ কোন ধর্মের চেয়ে কম নয়, যেখানে লোকেরা ক্রিকেটারদের এক ঝলক দেখার জন্য ব্যাকুল থাকে।
সম্প্রতি ঘোষণা করা হয়েছে যে, ক্রিকেটকে ২০২৮ অলিম্পিকে অন্তর্ভুক্ত করা হবে, যা বিশ্বজুড়ে ক্রিকেটপ্রেমীদের মধ্যে উৎসাহের ঢেউ ছড়িয়ে দিয়েছে। এখন সর্বশেষ খবর হল লস অ্যাঞ্জেলেস অলিম্পিক ২০২৮-এ পুরুষ ও মহিলা উভয় শাখাতেই ৬টি করে দল অংশগ্রহণ করবে এবং স্বর্ণপদক জেতার জন্য তীব্র প্রতিযোগিতা দেখা যাবে।
কোন কোন দল অংশগ্রহণ করবে?
এখন পর্যন্ত স্পষ্ট হয়েছে যে অলিম্পিক ২০২৮-এ প্রতিটি বিভাগে মাত্র ৬টি করে দল স্থান পেতে পারবে। আয়োজক দেশ আমেরিকা স্বয়ংক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করতে পারে, অন্যদিকে বাকি পাঁচটি দলকে বাছাইপর্ব পেরোতে হবে। তবে, বাছাইপর্বের সম্পূর্ণ ফরম্যাট এখনও প্রকাশ করা হয়নি। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল (আইসিসি)-এর ১২টি পূর্ণ সদস্য দেশ রয়েছে: ভারত, অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড, পাকিস্তান, বাংলাদেশ, নিউজিল্যান্ড, দক্ষিণ আফ্রিকা, শ্রীলঙ্কা, আফগানিস্তান, ওয়েস্ট ইন্ডিজ, আয়ারল্যান্ড এবং জিম্বাবুয়ে। এই দেশগুলির অধিকাংশই তাদের দল পাঠানোর প্রতিযোগিতায় থাকবে।
কিন্তু ওয়েস্ট ইন্ডিজের ক্ষেত্রে জটিলতা রয়েছে। যেহেতু ক্যারিবীয় দেশগুলি অলিম্পিকে পৃথকভাবে প্রতিনিধিত্ব করে (যেমন জ্যামাইকা, বার্বাডোস ইত্যাদি), তাই দেখার বিষয় হলো যুক্ত ওয়েস্ট ইন্ডিজ দল অংশগ্রহণ করবে নাকি কোন এক দেশ।
ফরম্যাট: দুই দিন নয়, এখন হবে টি-টোয়েন্টি ধামাকা
অলিম্পিকে ক্রিকেটের আগের অংশগ্রহণ ১৯০০ সালে প্যারিসে হয়েছিল, যেখানে মাত্র ফ্রান্স এবং গ্রেট ব্রিটেনের দুটি দল খেলেছিল। সেটি ছিল দুই দিনের ম্যাচ, যাকে অ-সরকারী টেস্টের মর্যাদা দেওয়া হয়েছিল। এখন ২০২৮ সালে এই ফরম্যাট সম্পূর্ণরূপে বদলে গেছে; দ্রুত, রোমাঞ্চকর এবং मनोरंजक টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে ক্রিকেট খেলা হবে। প্রতিটি দলের ১৫ জন খেলোয়াড়ের স্কোয়াড থাকবে এবং মোট ৯০ জন খেলোয়াড়ের কোটা থাকবে, যার ফলে নির্বাচন প্রক্রিয়াও অত্যন্ত প্রতিযোগিতামূলক হবে।
ক্রিকেটের নতুন যুগের সূচনা
ক্রিকেটের অলিম্পিকে ফিরে আসা শুধুমাত্র এই খেলার জন্য একটি বড় সুযোগ নয়, এটি বিশ্বের সেসব অঞ্চলেও ক্রিকেটের প্রচারের সম্ভাবনা বাড়াবে, যেখানে এখনও পর্যন্ত এর আওতা সীমিত। বিশেষ করে আমেরিকা যেমন বাজারে ক্রিকেটকে উন্নীত করার জন্য এই পদক্ষেপ গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। ১২৮ বছর পর যখন অলিম্পিকে আবার বল এবং ব্যাটের সংঘর্ষ হবে, তখন তা শুধু খেলা নয়, ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি হবে। ২০২৮ সালের লস অ্যাঞ্জেলেস অলিম্পিক ক্রিকেটের জন্য একটি নতুন অধ্যায় লিখবে, যেখানে পদক জেতার স্বপ্ন প্রতিটি ক্রিকেটপ্রেমীর মুখে থাকবে।