পটনায় খান স্যারের অসাধারণ সাফল্য: লক্ষ লক্ষ ছাত্রকে IAS-IPS পরীক্ষার প্রস্তুতির পথ দেখিয়েছেন। পড়াশোনায় গড়পড়তা হলেও পরিশ্রমের বলেই তিনি একজন অনুপ্রেরণার উৎস।
খান স্যারের সাফল্যের গল্প: পটনার বিখ্যাত শিক্ষক খান স্যারের জীবনী আজ লক্ষ লক্ষ ছাত্রছাত্রীর কাছে অনুপ্রেরণার উৎস। IAS থেকে শুরু করে IPS পর্যন্ত নানা প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার প্রস্তুতির ক্ষেত্রে তাঁর নাম সবারই জানা। কিন্তু জানেন কি, খান স্যারের এই যাত্রা কতটা কঠিন ছিল? আসুন জেনে নিই কীভাবে এবং কখন শুরু হয়েছিল খান স্যারের কোচিং জীবন, তাঁর শিক্ষাজীবন এবং সংগ্রামের গল্প।
শুরু এবং প্রাথমিক সংগ্রাম
খান স্যারের আসল নাম অনুপ সিং, কিন্তু তাঁর অনন্য শিক্ষাদান পদ্ধতি এবং সহজ ভাষার জন্য তিনি “খান স্যার” নামেই পরিচিত। তাঁর জন্ম বিহারে এবং শৈশবেই তাঁর পরিবারের আর্থিক অবস্থা ছিল খুব একটা ভালো নয়। খান স্যারের পিতা ভারতীয় সেনায় কর্মরত ছিলেন, এবং তাঁর বড় ভাইও সেনায় কর্মরত ছিলেন। খান স্যারও সেনায় যোগ দিতে চেয়েছিলেন, কিন্তু কিছু শারীরিক কারণে তিনি সামরিক স্কুলের ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে পারেননি। এতে তাঁর স্বপ্ন ভেঙে গিয়েছিল, কিন্তু তিনি হাল ছাড়েননি।
পড়াশোনায় গড়পড়তা কিন্তু উচ্চাকাঙ্ক্ষায় অতুলনীয়
খান স্যার নিজেই একটা সাক্ষাৎকারে বলেছেন যে তিনি পড়াশোনায় গড়পড়তা ছিলেন। তিনি ইঞ্জিনিয়ারিং, NDA এবং সেনাবাহিনীর ভর্তি পরীক্ষা সহ নানা প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছিলেন, কিন্তু সফলতা পাননি। কিন্তু তাঁর কাছে এই ব্যর্থতা হতাশার কারণ ছিল না। এর পরিবর্তে তিনি তাঁর পড়াশোনা চালিয়ে গিয়েছিলেন। বিএসসি-র পর তিনি এমএ এবং এমএসসি-ও করেছেন। তিনি ইলাহাবাদ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিজ্ঞানে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেছেন, পাশাপাশি ভূগোলেও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেছেন।
একটি শিশুর সাথে শুরু হল কোচিং
খান স্যার তাঁর কর্মজীবনের শুরু করেছিলেন একজন শিশুকে টিউশন পড়িয়ে। সেই শিশু স্কুলে টপ করে, যা খান স্যারকে আরও শিশুদের পড়ানোর অনুপ্রেরণা জোগায়। তাঁর শিক্ষাদান পদ্ধতি এবং সহজ ভাষা ছাত্রছাত্রীদের খুব পছন্দের হয়। ধীরে ধীরে তাঁর নাম ছড়িয়ে পড়ে এবং লক্ষ লক্ষ ছাত্রছাত্রী তাঁর ভিডিও এবং অনলাইন ক্লাসে যুক্ত হতে থাকে।
কোচিং শুরু করার পথে বাধা
কোচিং স্থাপন করার জন্য যখন খান স্যারের কাছে টাকা ছিল না, তখন তাঁর বন্ধুরা সাহায্য করে। কিন্তু যখন তাঁর কোচিং জনপ্রিয় হয়, তখন কিছু লোক এটা পছন্দ করে না। রিপোর্ট অনুযায়ী, তাঁর কোচিং কেন্দ্রে বোমা হামলাও হয়েছিল। এই ঘটনা তাঁর জন্য একটা বড় ধাক্কা ছিল, কিন্তু খান স্যার ভয় পেয়ে হাল ছাড়েননি, বরং আরও শক্তি নিয়ে তাঁর মিশন অব্যাহত রেখেছেন।
করোনা কালে অনলাইন কোচিং এর সূচনা
যখন করোনা মহামারীর কারণে সকল কোচিং সেন্টার বন্ধ হয়ে যায়, তখনও খান স্যার হাল ছাড়েননি। তিনি অনলাইনে পড়াশোনা শুরু করেন, যার ফলে দেশের লক্ষ লক্ষ ছাত্রছাত্রী তাঁর সাথে যুক্ত হয়। এই সময়ে তাঁর জনপ্রিয়তা আরও বেড়ে যায়। তাঁর কন্টেন্ট ছিল সহজ এবং স্পষ্ট, যা ছাত্রছাত্রীদের কঠিন থেকে কঠিন বিষয় বুঝতে সাহায্য করে।
খান স্যারের কোচিং এর বিশেষত্ব
খান স্যারের সবচেয়ে বড় বিশেষত্ব হল তাঁর ভাষা এবং শিক্ষাদান পদ্ধতি। তিনি প্রতিটি বিষয়কে সহজ এবং আকর্ষণীয়ভাবে ব্যাখ্যা করেন। তাঁর ফোকাস শুধুমাত্র পড়াশোনায় নয়, বরং ছাত্রছাত্রীদের চিন্তাভাবনা এবং বোধশক্তিকে বাড়ানোর উপর। তাই আজ IAS, IPS এবং অন্যান্য প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার প্রস্তুতিরত ছাত্রছাত্রীরা তাঁর ভিডিও এবং ক্লাসের অপেক্ষায় থাকে।
