দিল্লি-এনসিআর সহ সমগ্র উত্তর ভারতে বর্তমানে প্রচণ্ড গরম জনজীবনে মারাত্মক প্রভাব ফেলেছে। তাপমাত্রা ক্রমাগতভাবে বিপজ্জনক পর্যায়ে পৌঁছাচ্ছে, যার ফলে মানুষের স্বাস্থ্যগত সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে।
আবহাওয়ার পূর্বাভাস: উত্তর ভারত বর্তমানে প্রচণ্ড গরমের কবলে। দিল্লি, হরিয়ানা, পাঞ্জাব এবং রাজস্থানের মতো রাজ্যগুলিতে তাপমাত্রা ৪৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছাড়িয়ে গেছে। ভারতীয় আবহাওয়া বিভাগ (আইএমডি) দিল্লি-এনসিআর সহ অনেক এলাকায় অরেঞ্জ অ্যালার্ট জারি করেছে। অন্যদিকে দক্ষিণ ভারতের কর্ণাটক, তামিলনাড়ু, অন্ধ্রপ্রদেশ এবং তেলেঙ্গানায় মুষলধার বৃষ্টিপাত অব্যাহত রয়েছে, যার ফলে মানুষ গরম থেকে কিছুটা স্বস্তি পাচ্ছে। দেশের একদিকে যেখানে লু এবং গরম বাতাস জনজীবনকে অস্থির করে রেখেছে, অন্যদিকে প্রবল বৃষ্টিপাত বন্যার মতো পরিস্থিতির আশঙ্কা তৈরি করেছে।
দিল্লি-এনসিআর: লু বৃদ্ধি করেছে অসুবিধা
জাতীয় রাজধানী দিল্লি এবং তার আশেপাশের এলাকায় তাপমাত্রা ৪৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে পৌঁছেছে। মঙ্গলবার প্রবল পৃষ্ঠ বায়ু এবং ধুলোবালির ঝড় গরমকে আরও বেশি অনুভূত করে তুলেছে। আবহাওয়াবিদদের মতে, আগামী দিনগুলিতে উত্তর-পশ্চিম থেকে গরম বাতাস প্রবাহিত হওয়ার ফলে গরম আরও ভয়ঙ্কর রূপ ধারণ করতে পারে।
হরিয়ানা এবং পাঞ্জাব: গরমে অসুস্থ
হরিয়ানার সিরসায় পারদ ৪৬ ডিগ্রি ছাড়িয়ে গেছে, যা এই মৌসুমের সর্বোচ্চ। রোহতক, হিসার, ফতেহাবাদ এবং ভিওয়ানিতেও পারদ ৪৪-৪৫ ডিগ্রির মধ্যে রয়েছে। আবহাওয়া বিভাগ এই জেলাগুলিতে তাপপ্রবাহের সাথে অরেঞ্জ অ্যালার্ট জারি করেছে। পাঞ্জাবের লুধিয়ানা, পটিয়ালা এবং অমৃতসরের মতো শহরগুলিতেও প্রচণ্ড গরমের প্রভাব লক্ষ্য করা গেছে। সর্বোচ্চ তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে ৩-৫ ডিগ্রি বেশি রেকর্ড করা হয়েছে। উত্তর-পশ্চিম বায়ুর প্রভাবে তাপমাত্রা আরও বৃদ্ধির আশঙ্কা করা হচ্ছে।
রাজস্থান: ৪০টি জেলায় ৪০°C ছাড়িয়ে
রাজস্থানের বিকানের, জোধপুর, চুরু, বারমের এবং সিকর জেলায় তাপপ্রবাহের প্রভাব অব্যাহত রয়েছে। এখানে দিনের তাপমাত্রা ক্রমাগত ৪৪-৪৬ ডিগ্রির মধ্যে রয়েছে। তবে আবহাওয়া বিভাগ স্বস্তির খবর দিয়ে বলেছে যে ১৪ জুন থেকে কিছু এলাকায় বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। বিশেষ করে কোটা, ঝালাওয়ার, বানসওয়ারা এবং ডুঙ্গারপুর জেলায় বজ্রপাত সহ হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি হতে পারে। এর ফলে তাপমাত্রা কিছুটা কমতে পারে।
দক্ষিণ ভারত: বৃষ্টি স্বস্তি, কিন্তু সতর্কতার অবস্থা বৃদ্ধি
যেখানে উত্তর ভারত তপ্ত হচ্ছে, সেখানে দক্ষিণ ভারতের অনেক এলাকায় মৌসুমি পূর্ব বৃষ্টিপাত স্বস্তি এনেছে। মধ্য কর্ণাটকের চিকমঙ্গলুর, শিবমোগা এবং কোডগু জেলায় ৫০-৭০ কিমি/ঘণ্টা বেগে বৃষ্টিপাতের সতর্কতা জারি করা হয়েছে। উপকূলীয় এবং অভ্যন্তরীণ এলাকায়ও মুষলধার বৃষ্টির কারণে সতর্কতা জারি করা হয়েছে। চেন্নাই এবং আশেপাশের এলাকায় বজ্রপাত সহ মাঝারি থেকে প্রবল বৃষ্টির পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি ৩০-৬০ কিমি/ঘণ্টা বেগে বাতাস বয়ে যাওয়া এবং বিদ্যুৎপাতের আশঙ্কা রয়েছে।
অন্ধ্রপ্রদেশের রায়ালসিমা এবং উপকূলীয় এলাকায় বজ্রপাত সহ বৃষ্টি হচ্ছে। ইয়ানাম এলাকায়ও প্রবল বৃষ্টিপাতের আশঙ্কা রয়েছে। তেলেঙ্গানার অনেক জেলায় হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি হচ্ছে, যা কিছু স্থানে প্রবল হতে পারে।