দিল্লি-এনসিআর এবং উত্তর-পশ্চিম ভারত বর্তমানে প্রচণ্ড তাপমাত্রার কবলে আছে। তাপমাত্রা ক্রমাগত ৪৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কাছাকাছি পৌঁছেছে, যার ফলে জনজীবনে ব্যাপক প্রভাব পড়েছে। দিল্লি, নয়ডা, গাজিয়াবাদ, ফরিদাবাদ এবং গুরুগ্রামের মতো শহরগুলিতে প্রচণ্ড গরমের প্রভাবে (লু) মানুষের স্বাস্থ্যের উপর মারাত্মক প্রভাব পড়ছে।
আবহাওয়ার পূর্বাভাস: উত্তর ভারত বর্তমানে প্রচণ্ড তাপমাত্রার কবলে। দিল্লি-এনসিআর, উত্তরপ্রদেশ, হরিয়ানা, পাঞ্জাব এবং রাজস্থানের মতো রাজ্যগুলিতে সূর্যের তাপ প্রচণ্ড। অবস্থা এমন যে দুপুরে বাইরে বেরোনো মানুষের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। লু এবং ৪৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত পৌঁছানো তাপমাত্রা সাধারণ জনজীবনকে বিপর্যস্ত করে তুলছে। এদিকে ভারতীয় আবহাওয়া দপ্তর (IMD) কিছুটা স্বস্তির আশ্বাস দিয়েছে। ১৩ জুন থেকে আবহাওয়ায় পরিবর্তন আসার সম্ভাবনা রয়েছে, যার ফলে মানুষ কিছুটা স্বস্তি পেতে পারে।
দিল্লিতে ‘লাল’ হচ্ছে রোদ
রাজধানী দিল্লিতে তাপমাত্রা ৪৩ থেকে ৪৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে রয়েছে। রোদ এত তীব্র যে রাস্তায় কিছুক্ষণ হাঁটলেই ত্বক পুড়ে যাওয়ার মতো অনুভূতি হচ্ছে। গরম বাতাস শরীর ছিড়ে ফেলার মতো অনুভূত হচ্ছে। ক্রমাগত বেড়ে চলা তাপমাত্রা শিশু, বৃদ্ধ এবং অসুস্থ মানুষের জন্য পরিস্থিতি আরও কঠিন করে তুলেছে।
আইএমডি-র মতে, ১৩ জুন দিল্লিতে প্রচণ্ড বাতাস এবং বজ্রপাতের সাথে হালকা বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। ওইদিন ৪০-৫০ কিমি/ঘণ্টা বেগে বাতাস বইতে পারে। এর ফলে সর্বোচ্চ তাপমাত্রায় কিছুটা হ্রাস পেতে পারে। তবে, আবহাওয়া দপ্তর অরেঞ্জ অ্যালার্ট জারি করে মানুষকে বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করার আহ্বান জানিয়েছে।
উত্তরপ্রদেশ, হরিয়ানা, পাঞ্জাবেও অবস্থা খারাপ
উত্তরপ্রদেশ, পাঞ্জাব এবং হরিয়ানায়ও তীব্র তাপমাত্রা মানুষের কঠিন পরীক্ষা নিয়েছে। লখনউ, অমৃতসর, রোহতক, কর্ণালের মতো শহরগুলিতে তাপমাত্রা ৪৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছাড়িয়ে গেছে। লু এবং শুষ্ক গরম বাতাসের ফলে সাধারণ জনজীবন ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। খেতের কাজ করা শ্রমিক, দিনমজুর এবং রাস্তার বিক্রেতাদের জন্য পরিস্থিতি অত্যন্ত কঠিন হয়ে উঠেছে।
রাজস্থানে ‘ভুট্টা’ হয়ে উঠেছে মরুভূমি
রাজস্থানে তাপমাত্রা চরমে পৌঁছেছে। বিষ্ণুপুর, চুরু, শ্রীগঙ্গানগর এবং জোধপুরের মতো এলাকায় তাপমাত্রা ৪৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত পৌঁছেছে। দুপুরে রাস্তাঘাটে নীরবতা ছড়িয়ে পড়ে এবং বাজারেও চहলপহল কমে গেছে। এখানে লু এত তীব্র যে দিনের বেলায় মানুষ বাইরে বেরোনো থেকে বিরত থাকছে।
উত্তরাখণ্ডে বৃষ্টিতে কিছুটা স্বস্তি
তীব্র তাপমাত্রার সাথে লড়াই করছে এমন উত্তর ভারতের মধ্যে উত্তরাখণ্ডের কিছু অংশে হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টিপাত কিছুটা স্বস্তি এনেছে। ১২ জুন নৈনিতাল, বাগেশ্বর এবং পিথোরাগড়ের মতো এলাকায় বৃষ্টি হয়েছে যার ফলে তাপমাত্রা কমেছে। আবহাওয়া দপ্তর ১৩ জুন এই জেলাগুলিতে ভারী বৃষ্টিপাতের সতর্কতা জারি করেছে। পাশাপাশি, ১৭ জুন পর্যন্ত হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে।
১৩ জুনের পর স্বস্তি আসতে পারে
আবহাওয়া দপ্তরের মতে, ১৩ জুন রাত থেকে আবহাওয়ায় পরিবর্তন শুরু হতে পারে। ১৪ জুন সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪১ ডিগ্রি এবং সর্বনিম্ন ২৮ ডিগ্রি থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। এর পর, ১৫ থেকে ১৮ জুন পর্যন্ত আংশিকভাবে মেঘলা আকাশ থাকবে এবং কিছু এলাকায় হালকা বৃষ্টি হতে পারে। এর ফলে তাপমাত্রায় ধীরে ধীরে হ্রাস পেতে পারে।