এই বছর জুনের তাপদাহ দিল্লি-এনসিআরে চরমে পৌঁছেছে। ভারতীয় আবহাওয়া দপ্তর (আইএমডি)-এর পূর্বাভাস অনুযায়ী, আগামী কয়েক দিনে জাতীয় রাজধানীতে তাপমাত্রা ৪৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত পৌঁছতে পারে, যা স্বাস্থ্যের জন্য বিপজ্জনক হতে পারে।
আবহাওয়ার পূর্বাভাস: উত্তর ভারতে তাপদাহ আবারও ভয়ঙ্কর রূপ ধারণ করেছে। দিল্লি-এনসিআর সহ রাজস্থান, উত্তর প্রদেশ এবং বিহারে তাপমাত্রা ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে। ভারতীয় আবহাওয়া দপ্তর (আইএমডি)-এর মতে, দিল্লির পারদ আগামী কয়েক দিনে ৪৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত পৌঁছতে পারে, অন্যদিকে রাজস্থানের অনেক এলাকায় লু প্রকোপ চলছে। তবে, উত্তরপ্রদেশ ও বিহারের কিছু এলাকায় পূর্ব মৌসুমি বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে, যা সেখানকার মানুষকে কিছুটা স্বস্তি দিতে পারে।
দিল্লি-এনসিআর: তাপদাহের ‘ইয়েলো অ্যালার্ট’
রাজধানী দিল্লি ও তার আশপাশের এলাকায় তাপদাহ চরমে পৌঁছেছে। আবহাওয়া দপ্তর মঙ্গলবার থেকে আগামী তিন-চার দিন প্রচণ্ড তাপদাহের সতর্কতা জারি করেছে। দপ্তর রাজধানীর জন্য ‘ইয়েলো অ্যালার্ট’ ঘোষণা করেছে, যা বোঝায় আবহাওয়ার অবস্থা স্বাভাবিক নয় এবং মানুষকে সতর্ক থাকতে হবে। দিল্লিতে এই সপ্তাহে তাপমাত্রা ক্রমাগত ৪৩-৪৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে থাকতে পারে।
এছাড়াও দিনের বেলায় প্রবল স্থলীয় বাতাস (২০-৩০ কিমি/ঘণ্টা) বইতে পারে, কিন্তু এগুলি গরম বাতাস, যা স্বস্তির পরিবর্তে আরও বেশি গরম অনুভূত হতে পারে।
রাজস্থান: গঙ্গানগরে ৪৭.৪ ডিগ্রি, অনেক জেলায় লু প্রকোপ
রাজস্থানে তাপদাহের ধারা আরও তীব্র হতে চলেছে। বিশেষ করে বিকানের, গঙ্গানগর, চুরু, জয়সলমের এবং বাড়মের জেলায় লু প্রভাব বজায় রয়েছে। গঙ্গানগরে রবিবার তাপমাত্রা ৪৭.৪°C পর্যন্ত পৌঁছেছে, যা এই মৌসুমের নতুন রেকর্ড। রাজ্যের অধিকাংশ এলাকায় শুষ্ক আবহাওয়া বজায় থাকবে। ১০ জুন বিকানের বিভাগ এবং তার আশপাশের এলাকায় ধুলোবালিঝড় (৩০-৪০ কিমি/ঘণ্টা) বইতে পারে, যার ফলে দৃশ্যমানতা এবং বায়ুমানের উপর প্রভাব পড়বে।
রাজ্য সরকার স্বাস্থ্য সতর্কতা জারি করেছে, বিশেষ করে শিশু এবং বৃদ্ধদের জন্য সাবধানতা অবলম্বন করার আহ্বান জানানো হয়েছে।
উত্তর প্রদেশ: ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে বৃষ্টিপাতের আশা
প্রচণ্ড তাপদাহের পর উত্তরপ্রদেশে এখন মানুষ পূর্ব মৌসুমি বৃষ্টিপাত থেকে কিছুটা স্বস্তি পাওয়ার ইঙ্গিত পেয়েছে। আবহাওয়া দপ্তরের মতে, আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে পূর্ব উত্তরপ্রদেশে বৃষ্টিপাত হতে পারে, এর পরে এটি রাজ্যের পশ্চিম অংশের দিকে অগ্রসর হবে। আগ্রা, झांसी, প্রয়াগরাজ এবং উরইয়ের মতো এলাকা এখন সবচেয়ে বেশি তাপদাহের আঘাতে রয়েছে। ১০ জুন পর্যন্ত তাপপ্রবাহের সতর্কতা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু ১১ জুন থেকে আবহাওয়ার পরিবর্তনের আশা করা হচ্ছে।
বিহার: ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আবহাওয়া পরিবর্তন হতে পারে
বিহারেও পরিস্থিতি উদ্বেগজনক। কোশি এবং সীমান্ত এলাকা বাদে বাকি রাজ্যে বর্তমানে বৃষ্টিপাতের কোনও বিশেষ আশা নেই। পটনা, গয়া, ভাগলপুর এবং দরভঙ্গা শহরগুলি তাপদাহের প্রভাবে রয়েছে। তবে, ১০ জুন রাত থেকে বঙ্গোপসাগরে গঠিত মৌসুমি সিস্টেম এবং দক্ষিণ-পশ্চিম বাতাসের সক্রিয় হওয়ার ফলে আবহাওয়ার পরিবর্তনের সম্ভাবনা রয়েছে। ১১-১২ জুনের মধ্যে কিছু এলাকায় হালকা বৃষ্টিপাত এবং প্রবল বাতাস বইতে পারে। পটনা আবহাওয়া কেন্দ্রের মতে, আগামী ২ দিনে স্থানীয় পর্যায়ে ঝড়ো বৃষ্টিপাত হতে পারে, যার ফলে তাপমাত্রায় হালকা হ্রাস পেতে পারে।